Ajker Patrika

দেশের সেবায় এনটিএমসি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮: ১৬
দেশের সেবায় এনটিএমসি

‘সবার আগে দেশ’ শিরোনামে দেশের সেবায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি)। ২০১৪ সালে নতুন নামে যাত্রার শুরু থেকেই জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে সংস্থাটি।

নানাবিধ সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এনটিএমসি রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন-২০০৬ (সংশোধিত) এর অনুচ্ছেদ ৯৭-ক ক্ষমতাবলে টেলিযোগাযোগ সেবাদানকারী সব প্রতিষ্ঠানকে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২৪ ঘণ্টার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় কাজ করছে। 

এনটিএমসির সঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা ও তদন্তকারী সংস্থাসহ ৩০টি সংস্থা সরাসরি সংযুক্ত। যারা দপ্তরটিতে স্থাপিত বিভিন্ন প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে আছে। অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেসের (এপিআই) মাধ্যমে নাগরিকদের ডেটাবেসের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। টেলিকমিউনিকেশন ডাটাহাবের সঙ্গে জাতীয় ডাটাহাবের এপিআই সংযোগের ফলে সংগৃহীত যেকোনো তথ্যকে মিলিয়ে দেখাসহ যাচাইয়ের কাজে এনটিএমসির এই সমন্বিত ডাটাহাব কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। যার ফলে এ সিস্টেম থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তদন্ত ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ নাগরিকদের বায়োমেট্রিকসহ অন্যান্য তথ্য সহজেই যাচাই-বাছাই করতে পারছে। 

এরই মধ্যে এনটিএমসির ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সব মোবাইল অপারেটরের ভয়েস এবং ডেটা, নির্বাচন কমিশন ডেটাবেস, পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন ডেটাবেস, জন্ম নিবন্ধন ডেটাবেস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ ডেটাবেস, র‍্যাব ডেটাবেস (ক্রিমিনাল ডেটাবেস, জেল ইনমেট ডেটাবেস) এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করেছে। যার মাধ্যমে আইনপ্রয়োগকারী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং হজ নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ তাদের প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের তথ্য যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করতে পারছে। 

সব রকম সোশ্যাল এবং ওয়েব মিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আইনপ্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ এনটিএমসির প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ও রাষ্ট্রবিরোধী তথ্যদাতাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। 

তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ ও ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে আইনপ্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ ইন্টারনেটভিত্তিক অপরাধ কার্যক্রম তদন্তে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। তা মোকাবিলায় বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ করতে জোর দিচ্ছেন। তিনি ২০১৭ সালের ৬ মার্চ থেকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার পালন করে আসছিলেন। গত জুলাইয়ে ব্রিগেডিয়ার থেকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতির পর ৫ সেপ্টেম্বর পরিচালক থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান জিয়াউল আহসান। তার পদায়নের মাধ্যমে এবারই প্রথম এনটিএমসির মহাপরিচালকের পদটি সৃষ্টি হয়েছে। 

‘সবার আগে দেশ’ এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় বর্তমানের ন্যায় ভবিষ্যতেও আরও সফলভাবে অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন ডিজি জিয়াউল আহসান। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি বারবার নিশানা করেছে, এসেছে নানা বাধা-বিপত্তি। তবু দেশের জন্য, মানুষের জন্য নিজের কাজটা করে গেছি। এনটিএমসি সমৃদ্ধ হয়েছে, সক্ষমতা বেড়েছে এটাই বড় পাওয়া।’ 

ক্রমপরিবর্তনশীল তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় রেখে সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে আর্কাইভসহ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্ট শাখাও রয়েছে যা নতুন ঝুঁকি মোকাবিলায় করণীয় নিরূপণে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান জিয়াউল। 

তথ্যপ্রযুক্তিকেন্দ্রিক অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনে ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারি, ন্যাশনাল মনিটরিং সেন্টার (এনএমসি) পরিবর্তিত হয়ে এনটিএমসি নামে আত্মপ্রকাশ করে। স্বতন্ত্র সংস্থা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কার্যক্রম শুরু করে ২০১৪ থেকে। 

তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর লাগোয়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ত্রাণভান্ডার এলাকায় প্রায় এক একর এলাকাজুড়ে এনটিএমসির অবস্থান। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি ডিজিএফআই ভবন থেকে এখানে সদর দপ্তর স্থানান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত