Ajker Patrika

সড়ক দখল করে দোকান

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১২: ৩৪
সড়ক দখল করে দোকান

সড়কটি প্রায় ২৯ কিলোমিটার। সড়কে যাতায়াত করে হালকা যানবাহন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত এ সড়কের মিরসরাইয়ে প্রবেশপথ দখল করে দুপাশে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০টি অবৈধ দোকান। সড়কের প্রবেশপথ থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে রয়েছে মিরসরাই ডিগ্রি কলেজ ও মিরসরাই স্টেডিয়াম। সড়কের মুখেই রয়েছে মিরসরাই কাঁচাবাজার ও উপজেলা ডিজিটাল পোস্ট অফিস। গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠান থাকার পরও সড়কের মুখে দুপাশে পসরা সাজিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী দোকান। যানজট ও নাগরিক বিড়ম্বনা যেন এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এসব দেখেও নীরব সওজ (সড়ক ও জনপথ বিভাগ)।

অবৈধ দোকানগুলো থেকে দৈনিক ও মাসিক ভিত্তিতে মাসোহারা আদায় করছে একটি চক্র। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই দিক থেকে বোঝার উপায় নেই এটি মিরসরাই-ফটিকছড়ি-নারায়ণহাট ২৯ কিলোমিটার পার্বত্য এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এটাও বোঝার উপায় নেই, দোকানের পেছনে উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট অফিস রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের মুখে দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে ফলের দোকান, পোশাকের দোকান, চা-দোকান। উপজেলা পোস্ট অফিসের প্রধান ফটকের দুই পাশে এবং ফুটওভারব্রিজের সিঁড়ির সঙ্গে একাধিক দোকান। ফটকের সামনে রয়েছে ফুটওভারব্রিজের পিলার। কিন্তু অস্থায়ী দোকানদারেরা দুই পাশের চলাচল পথ বন্ধ করে দিয়ে তাদের পসরা সাজিয়েছেন। দোকানের পণ্য ও ক্রেতাদের ভিড়ে পোস্ট অফিস খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

পোস্ট অফিসে প্রবেশ করতে না পেরে সেবাগ্রহীতাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মরিয়ম নামের জনৈক নারী বাড়িয়া থেকে পোস্ট অফিসে এসেছেন ব্যাংকের কাজে রেভিনিউ স্ট্যাম্প নিতে। কিন্তু পোস্ট অফিসের প্রবেশপথে দোকানের পণ্য ও মানুষের ভিড়ে প্রবেশ করতে পারছেন না।

পোস্ট অফিসের প্রধান ফটকের দুপাশে অবৈধ দোকান, ওপরে ফুটওভারব্রিজ, সামনে ব্রিজের পিলার ও বাকি অংশে অস্থায়ী দোকানিদের পণ্য ও ক্রেতাদের কারণে পোস্ট অফিস সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই, এখানে উপজেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট অফিসটি রয়েছে।

এক দোকানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে ৩০টি মতো দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকানির ব্যবসা হোক না হোক, দৈনিক ভিত্তিতে টাকা দিতে হয় বাজারের ইজারাদারকে। দোকান অনুযায়ী দৈনিক ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় এসব অবৈধ দোকান থেকে।

ভুক্তভোগী পথচারী আশরাফ জানান, সরকারি রাস্তায় দোকান বসিয়ে এভাবে টাকা নেওয়া অন্যায়। সরকার তো ইজারাদারকে বাজারের বাইরে সড়কে দোকান বসিয়ে টাকা আদায় করতে বলেনি।

এ বিষয়ে মিরসরাই পোস্টমাস্টার নুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দোকানিরা বাধা মানে না। বাজার কমিটির সভাপতি মেয়র গিয়াস উদ্দিনকে জানানো হয়েছে। তারপরও কাজ হয়নি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিরসরাই পৌরসভার মেয়র ও বাজার কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘অস্থায়ী দোকানিরা সামান্য দোকান করে তাদের পরিবার চালায়। এটা তাদের একটা পেশা। তারপরও চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখতে তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সওজ (সড়ক ও জনপথ) চট্টগ্রাম (উত্তর)-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘এসব অবৈধ দোকানের কারণে মানুষ রাস্তায় চলাচল করতে পারে না। পাশে একটি ফুটওভারব্রিজ, সেটিও ব্যবহার করতে পারছে না। মিরসরাই-ফটিকছড়ি এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ১০-১৫ দিনের মধ্যে আমরা অবৈধ দোকান উচ্ছেদের জন্য নোটিশ করব। দ্রুত সড়ক সম্প্রসারণকাজ শুরু হবে। তার আগেই সড়কের দুই পাশ দখলমুক্ত করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত