Ajker Patrika

আসামির অপরাধ কী জানেন না সাক্ষী

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আসামির অপরাধ কী জানেন না সাক্ষী

চট্টগ্রামে পুলিশ বাদী হয়ে করা অস্ত্র ও মাদকের মামলায় অভিযুক্ত আসামির অপরাধ কী, তা সাক্ষী জানেন না। সম্প্রতি পুলিশের তদন্ত ব্যুরোর (পিবিআই) কাছে এক সাক্ষী এমন জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে মামলার এজাহারে বর্ণিত সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনাটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা গেছে, ২০২১ সালে ২৬ নভেম্বর দেশীয় এলজি অস্ত্র, কার্তুজ ও ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মো. রুবেল (৩২) নামের একজনকে অভিযুক্ত করে নগরীর বায়েজিদ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়।

থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ঘটনার সময় তিনজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে অভিযুক্ত রুবেলের বসতঘর থেকে এসব আলামত জব্দ করার কথা বলে পুলিশ। পরে রুবেলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ৯ মাস ২২ দিন জেল খেটে গত ১৫ সেপ্টেম্বর রুবেল কারাগার থেকে জামিনে বের হন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর রুবেল অস্ত্র ও মাদকের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে বায়েজিদ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ১৪ পুলিশ কর্মকর্তা এবং এক সোর্সের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।ইতিমধ্যে অস্ত্র ও মাদকের মামলার সাক্ষীসহ বিবাদীদের জবানবন্দি সংগ্রহ শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, পুলিশের মামলার এজাহারে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটে রুবেলের বাসার শোয়ার ঘর থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধারের কথা বলা হয়। কিন্তু ওই সাক্ষী এসব আলামত উদ্ধারের বিষয়ে কিছুই জানেন না।

গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) মো. হোসেন নামের মামলার সাক্ষী পিবিআইয়ের কাছে জবানবন্দি দেন। হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশের মামলার আসামি রুবেলের বাসার পাশেই আমি থাকি। আমি এলাকায় পানির লাইন চালাই। সারা রাত জেগে থাকতে হয়।’

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হোসেন বলেন, ‘গত ২৩ নভেম্বর রাতে ১০-১২ জন পুলিশ এসে আমাকে ডেকে রুবেলের বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে আমার উপস্থিতিতে পুলিশ তল্লাশি চালায়। কিন্তু তল্লাশি শেষে ওই বাসা থেকে কিছু পায়নি পুলিশ। পরে তাঁরা আমার নাম-ঠিকানা লিখে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন।’

সাক্ষী হোসেন আরও বলেন, ‘এর দুই দিন পর ২৫ নভেম্বর রাতেও ২০-২৫ জন পুলিশ রুবেলের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। তাঁরা বাসাটিতে আবারও তল্লাশি চালায়। তখন রুবেলের বাসা থেকে কোনো কিছু উদ্ধার হতে দেখিনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ আবারও একটি সাদা কাগজে আমার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়। ঘটনা যা সত্য, পিবিআইকে আমি তাই বলেছি।’

আসামি রুবেল বলেন, ‘বায়েজিদে একটি জমির বায়না নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আমার ঝামেলা বাধে। তাঁরা আমাকে জায়গাটি ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। তাঁদের কথায় রাজি না হওয়ায় আমার কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।’

রুবেল বলেন, ‘এরই জেরে গত বছর ২৫ নভেম্বর আমার বিরুদ্ধে কোনো পরোয়ানা ছাড়াই পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন অস্ত্র ও মাদকের মামলা দিয়ে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়।’

অস্ত্র ও মাদক মামলার এই আসামি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও পুলিশ বাসায় ঢুকে আমাকে খোঁজাখুঁজি করে। আমি তখন বাইরে ছিলাম। এ ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজও রয়েছে।’

মামলাটির তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ‘মামলার তদন্তে প্রাথমিকভাবে বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত