Ajker Patrika

আপস নয়, তদন্ত জরুরি

সম্পাদকীয়
আপস নয়, তদন্ত জরুরি

ব্যক্তিরা যখন কোনো অপরাধ করে বসেন, তখন কি তা আপসে মীমাংসা করা যায়? এর জন্য নিশ্চয়ই শাস্তির বিধান থাকে এবং অভিযোগ অনুয়ায়ী তদন্ত করেই তো শাস্তি দেওয়া হয়। কোনো ঘটনা তদন্তের আগেই অভিযোগকারীকে আপস করতে যিনি পরামর্শ দেন, তিনি তো কোনো অংশে কম অন্যায় করেন না।
যেমন ঢাকার সাভারের এক গৃহবধূ ননদের স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছেন।

কিন্তু সাভার মডেল থানার এসআই তানিম হোসেন ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং আপস করতে বলেন। তা না হলে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। ওই গৃহবধূ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এসব কথা জানিয়ে আবেদন করলে অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেয় সাভার থানা-পুলিশ। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই মামলার তদন্তের ভার দেওয়া হয় সেই এসআই তানিমের ওপরই!

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগকারী আবেদন করে বলেন, ধর্ষণচেষ্টাকারী ও তাঁর আত্মীয়রা, এমনকি এসআই তানিম স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার ছত্রচ্ছায়ায় থাকেন। তাই তিনিও অভিযোগ তদন্ত না করে তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আবেদনটি আমলে নিলেও দাবি করেন, এসআই তানিম কোনো অসহযোগিতা করেননি। আবার তানিমেরও দাবি, অভিযোগকারী তাঁর বিরুদ্ধে মনগড়া কথা বলছেন।

ওই গৃহবধূ কিন্তু আরও কিছু অভিযোগ দিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। সেই সঙ্গে চলত ননদের স্বামীর যৌন হয়রানি। ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি তাঁর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সবাই জানলেও তাঁকেই দোষারোপ করেন এবং এ নিয়ে তাঁকে বাইরে কথা বলতে নিষেধ করেন। গৃহবধূ বিষয়টি তাঁর মাকে জানালে তাঁকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।

আমাদের দেশে এখন নারী ও শিশু নির্যাতনের জন্য শক্ত আইন আছে। এই আইনের ফাঁক গলে ধরাছোঁয়ার বাইরে যাওয়া খুব কঠিন। কিন্তু তা সহজ হয় তখনই, যখন এসআই তানিমের মতো কিংবা ‘প্রভাবশালী নেতা’র মতো কোনো ‘সাহায্যকর্তা’ অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন!
আমরা এখনই বলছি না যে ওই গৃহবধূ সত্য বলছেন আর পুলিশ সদস্য নিয়েছেন মিথ্যার আশ্রয়।

এ-ও বলছি না যে কোনো ‘প্রভাবশালী নেতা’ অভিযুক্ত ওই পরিবারকে ছাতার মতো ছায়া দিচ্ছেন। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট হতে পারে। কিন্তু তা প্রমাণ করতে হলে তো যথাযথ তদন্ত করতে হবে। আর সেই তদন্তের ভার কেন ওই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকেই দেওয়া হলো? এসব ক্ষেত্রে যে অন্য কাউকে তদন্তের ভার দেওয়া উচিত, সেই বিবেচনাবোধ নিশ্চয়ই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আছে। কিন্তু সেই বিবেচনাবোধ কোনো আলমারির চিপায়, তালাবদ্ধ নেই তো?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জীবন বিলিয়ে দিয়ে উত্তরার মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীদের বাঁচালেন, কে এই মাহরীন চৌধুরী

পাচার করা ৭৮১ কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়েও জামিন পেলেন না নাসার চেয়ারম্যান নজরুল

প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না, সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়ার সুযোগ

পাইলটের শেষ বার্তা: বিমান ভাসছে না, নিচে পড়ছে

মেয়ের কফিনে বাবার চুমু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত