Ajker Patrika

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রথম নিয়োগেই অনিয়ম, বোর্ড বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রথম নিয়োগেই অনিয়ম, বোর্ড বাতিল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় চাপের মুখে তা বাতিল করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গতকাল রোববার আগের বোর্ড বাতিল করে আগামী ৫ মে নতুন করে নিয়োগ বোর্ড বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য হওয়ার পর প্রথম নিয়োগ কার্যক্রমেই অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় প্রশ্নের মুখে পড়েছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভুইয়া।

নিয়োগ বোর্ড ও প্রার্থী সূত্রে জানা গেছে, আস্থাভাজন একজন শিক্ষককে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ দিতে পিএইচডিধারী দুই প্রার্থীকে ইন্টারভিউ কার্ড দেননি বলে অভিযোগ ওঠে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। সংক্ষুব্ধ প্রার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আবু সালেহ এ নিয়ে উপাচার্যকে উকিল নোটিশ দেন।

নিয়োগ বোর্ড পুনরায় গঠনের দাবিতে উপাচার্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, দুদক চেয়ারম্যানসহ সব সিন্ডিকেট সদস্যের কাছে লিখিত আবেদনও দিয়েছেন তিনি।

সংক্ষুব্ধ প্রার্থীর আবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে ৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে তিনি (আবু সালেহ) এবং ড. মাহবুবুর রহমানই পিএইচডি ডিগ্রিধারী। তাঁদের দুজনকে ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু না করে অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে ৩ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড বসে। সেখানে নিয়ম ভঙ্গ করে কেবল অভ্যন্তরীণ দুজন প্রার্থীকে নিয়ে বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ববির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাসুম সিকদারসহ দুজনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। অথচ তাঁরা পিএইচডি ডিগ্রিধারী নন। আবু সালেহর মতে, অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে কৌশলে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে পিএইচডি ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের ইন্টারভিউ কার্ড দেওয়া হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ববির ৩২টি পদে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় গত ৬ মার্চ। ২১ মার্চ ছিল আবেদনের শেষ দিন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি করে শুধু একটি বিভাগের ২টি পদে ৩ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড বসায়। এ জন্য এক দিনের সময় দিয়ে ১ এপ্রিল হোয়াটসঅ্যাপে ইন্টারভিউ কার্ড পাঠায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক শিক্ষক জানান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সোহেল রানা এবং শিক্ষক মো. মেহেদী হাসান সোহাগের পদ পুনর্বিন্যাস হয় ৮ এপ্রিল। এই দুই শিক্ষককে নিয়োগ বোর্ডে না রেখে বোর্ডে রাখা হয় উপাচার্যের আস্থাভাজন শিক্ষক মাসুম সিকদারকে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটির সভাপতি সোহেল রানা বলেন, তিনি ২৮ মার্চের মধ্যে আবেদনগুলো ছাড় করে দিয়েছেন। ৩ এপ্রিল নিয়োগ বোর্ড হয়েছে। তাঁর পদ পুনর্বিন্যাস হওয়ার সময় ছিল ৮ এপ্রিল

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আবু সালেহ ২৩ এপ্রিল উকিল নোটিশ পাঠান। পরদিনই ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান সহযোগী অধ্যাপক তানভির কায়সার গতকাল প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বোর্ড বাতিল করে পুনরায় ৫ মে বোর্ড বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বোর্ডে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষককে বঞ্চিত করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন, অভ্যন্তরীণ যিনি শিক্ষক (মাসুম সিকদার) রয়েছেন, তাঁর পদ পুনর্বিন্যাসের সময় হওয়ায় বোর্ড বসানো হয়েছিল।

অপর প্রার্থী শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান জানান, তিনি গতকাল ই-মেইলে ইন্টারভিউ কার্ড পেয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপাচার্য ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভুইয়া সাংবাদিকদের বলেন, একজন প্রার্থী ইন্টারভিউ কার্ড পাননি এমন প্রশ্ন তোলায় নিয়োগ কার্যক্রম স্বচ্ছ করার জন্য পুনরায় বোর্ড গঠন করা হয়েছে। আগের বোর্ডের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভা না হওয়া পর্যন্ত বাতিল হওয়া বোর্ডের সিদ্ধান্ত বলা যাবে না। তাঁর দাবি, বিভিন্ন কথা ছড়ালেও নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ করার চেষ্টা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত