কামরুল হাসান

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবারের সকাল। গোলাগুলির কথা শুনে বেশ ঘাবড়ে গেলাম। সকাল থেকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার হওয়ার কথা। কিন্তু গোলাগুলি কেন? বিডিআরে পরিচিত কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফোন দিলাম। কেউ ধরলেন না। সিলেট সেক্টর কমান্ডার গুলজার উদ্দিন আহমেদের ফোনও লাগাতার ব্যস্ত। একটু পর আবার সুফলার ফোন। বললেন, আশপাশের বাসিন্দারা ফোন করছেন ভাইয়া, পরিস্থিতি নাকি খুবই খারাপ।
সুফলাকে বললাম, নিউজের সবাইকে ফোন করে ঘটনাটা জানান। আমি পিলখানায় যাচ্ছি বলে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। হঠাৎ ফোন–কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের। ভয়ার্ত কণ্ঠ। বাঘের মতো সাহসী মানুষের এমন কণ্ঠস্বর শুনে চমকে গেলাম। কথা বলছেন নিচু গলায়–ফিসফিসিয়ে। বললেন, ‘বিদ্রোহী সৈনিকেরা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। বাঁচব কি না, জানি না। প্লিজ, যাকে পারেন তাকে বলেন।’ শুনে রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল। কী করব বুঝতে পারছি না। ফোন দিলাম ডিএমপির কমিশনার নাঈম আহমেদকে। তাঁর ফোন লাগাতার ব্যস্ত। র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকারকে ফোন করতেই বললেন, তিনি ঘটনাস্থলের দিকেই যাচ্ছেন। ফোন দিলাম পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদকে। তাঁর গলা কাঁপছে। বললেন, ‘মাজহার-বাঁধন ভেতরে। বাঁধন বারবার ফোন করছে। মেয়ের অবস্থা শুনে তার মা-ও কাঁদছে।’ আইজিপির কথায় অসহায়ের সুর।
নাম দুটো শুনেই মনে পড়ে গেল, বাঁধন আইজিপির বড় মেয়ে। মাত্র কয়েক মাস আগে বিয়ে হয়েছে। পাত্র ক্যাপ্টেন মাজহার বিডিআরের মহাপরিচালক শাকিল আহমেদের এডিসি। বিডিআরের দরবার হলের সেই বিয়েতে আমিও ছিলাম। বিয়ের সাজে বাঁধনকে পরীর মতো লাগছিল। বাঁধনের বিপদের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগল। কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিলাম।
বুধবার ঢাকার রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। কিন্তু কী কারণে যেন সেদিন রাস্তা ফাঁকাই ছিল। বেইলি রোড থেকে ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পর্যন্ত গেলাম বিনা বাধায়। ২ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় লেকের উল্টো দিকে আম্বালা ইন হোটেল। জায়গাটিকে নিরাপদ মনে হলো। ততক্ষণে কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে গেছেন।
জিগাতলায় বিডিআর ৪ নম্বর গেটের সামনে দিয়ে দু-একটা গাড়ি চলছে। পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তবে সেটা খুব বেশি নয়। ভেতরে ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে সবাই সেটা আঁচ করেছেন, কিন্তু কী হচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারছেন না। কয়েকজন সাংবাদিক ৪ নম্বর গেটের দিকে একবার যাওয়ার চেষ্টা করলেন, আবার ফিরে আসছেন। একটু পরে ঝড়ের বেগে একটি পিকআপ এসে থামল জিগাতলা গেটের সামনে। পিকআপ থেকে জনা দশেক জওয়ান নেমেই শুরু করে দিল এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ। আমার বন্ধু লিটন হায়দার জিগাতলার দিক থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে এসে বলল, অল্পের জন্য বেঁচে গেলাম। সেখানে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
জিগাতলার গেটটা এতক্ষণ ফাঁকাই ছিল। এবার সশস্ত্র বিদ্রোহী সৈনিকেরা সেটা দখল করে নিল। আম্বালার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা শুধু গুলির আওয়াজ শুনছি। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের বিশাল দল এসে গেছে। সোয়াত এসেছে এম ফোর কারবাইন নিয়ে। কিন্তু এত গোলাগুলির মধ্যে আগে কী করতে হবে তা বোঝার চেষ্টা করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার পর এলেন প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সঙ্গে হুইপ মির্জা আজম। একটা সাদা পতাকা ও হ্যান্ডমাইক নিয়ে তারা ৪ নম্বর গেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু গুলির কারণে পিছিয়ে এলেন। তার পরও জাহাঙ্গীর কবির নানক হ্যান্ডমাইক দিয়ে সবাইকে শান্ত হয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ করলেন। কয়েক মিনিট গোলাগুলি নেই। আবার গুলির শব্দ। এবার আরও ব্যাপক। কান ফাটা আওয়াজ আসছে পিলখানার ভেতর থেকে। ভারী আওয়াজ।
বেলা ২টার দিকে প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম আবার গেলেন ৪ নম্বর গেটের কাছে। সঙ্গে নেত্রকোনার এমপি মুশতাক আহমেদ রুহী, কর্নেল তাহেরের ভাই ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, গাইবান্ধার এমপি মাহবুব আরা গিনি। এবার কাজ হলো। বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা আলোচনায় বসতে সম্মত হলেন। তবে শর্ত, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।
সাড়ে ৩টার দিকে ১৪ জন বিডিআর সদস্যকে নেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে, আলোচনার জন্য। তাঁরা ফিরে এসে সবাইকে অস্ত্র জমা দিয়ে জিম্মিদের ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু জওয়ানেরা কেউ সে কথা শুনলেন না। আবার আলোচনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ মির্জা আজম বিডিআর জওয়ানদের নিয়ে বসেন হোটেল আম্বালার ওপরে। আলোচনা চলতে থাকে, রাতও বাড়ে। আমরা হোটেলের নিচে অপেক্ষা করছি। সামনে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। সবাই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। খবর আসছে, বিদ্রোহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিকেলের দিকে র্যাবের মহাপরিচালক হাসান মাহমুদ খন্দকার আমাকে ডেকে বলেন, আইজিপি খুবই ভেঙে পড়েছেন। তিনি কারও সঙ্গে কথা বলছেন না। সকাল থেকে কিছু মুখেও দেননি। আইজিপি নূর মোহাম্মদকে আমি অনেক বছর ধরে চিনি। কিন্তু তাঁর এমন অবস্থা কোনো দিন দেখিনি।
আমি তাঁর কাছে গিয়ে হাতটা ধরতেই অসহায়ের মতো আমাকে বলেন, ‘আপনারা সবাই এত ক্ষমতাধর মানুষ, তার পরও আমার মেয়েটাকে বের করে আনতে পারছেন না?’
আইজিপির এ কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারি না। অসহায় পিতার বেদনা আমাকেও ব্যথিত করে। আমি তাকিয়ে দেখি আইজিপির চোখে পানি। জীবনে প্রথম তাঁকে কাঁদতে দেখলাম।
গভীর রাতে সিদ্ধান্ত হলো কয়েকজন পিলখানার ভেতরে যাবেন। রাত ১২টার দিকে আম্বালার সামনে এল প্রধানমন্ত্রীর ব্যবহার করা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। সেই গাড়িতে উঠলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আইজিপি নূর মোহাম্মদ। রাত ১টায় তাঁরা পিলখানায়। পিলখানার ভেতরটা তখন মিশকালো অন্ধকার। জওয়ানরা সব বাতি নিভিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম তাঁর জবানবন্দিতে বলেছিলেন, রাতের বেলা বিডিআর জওয়ানরা অনেকক্ষণ তাঁদের ফাঁকা মাঠের ভেতরে বসিয়ে রাখেন। অনেক কিছু বলার পরও তাঁদের কোয়ার্টার গার্ডে নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে কয়েকটি বাসায় গিয়ে তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত পরিস্থিতি দেখেন।
এক সেনা কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছিলেন, বিদ্রোহী জওয়ানেরা যখন দরবার হলে ডিজিসহ সবাইকে জিম্মি করেছিলেন, তখন এডিসি মাজহার তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কেঁদে কেঁদে কথা বলছিলেন। সম্ভবত বাঁধনের সঙ্গে সেটাই তাঁর স্বামীর শেষ কথা। অনেক দেনদরবারের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১০টি পরিবার ও আইজিপির মেয়ে বাঁধনকে উদ্ধার করতে পারেন। বাঁধন ছিলেন অফিসার্স মেসের একটি কক্ষে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁরা পিলখানা থেকে বের হন। বুলেটপ্রুফ গাড়ির মাঝে একটি আসনে ছিলেন আইজিপি আর তাঁর মেয়ে। গণমাধ্যমের ক্যামেরার জ্বলে ওঠা আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল তিনি চোখ মুছছেন। ক্ষমতাধর এক পিতা চরম অসহায়ত্ব সঙ্গী করে মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাঁধন? বাঁধন তো ফিরেছেন একা!
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দুবার ফোন বেজেছে। তৃতীয়বার বাজতেই ধরে ফেললাম। অফিসের ফোন। ওপারে টেলিফোন অপারেটর সুফলা। তাঁর কণ্ঠে উদ্বেগ, পিলখানা থেকে কে একজন অফিসের টিঅ্যান্ডটি নম্বরে ফোন করে বলেছেন, সেখানে খুব গন্ডগোল হচ্ছে। আচ্ছা, দেখছি, বলে ফোন রাখতে না রাখতেই আবার ফোন। ভাইয়া, অনবরত ফোন আসছে, এখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে