কামরুল হাসান

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
সড়ক ভবনের পেছনের দিকে খুব সুন্দর পরিবেশে একটি ক্যানটিন ছিল, ঠিকাদারেরা সেখানে বসে গল্পগুজব করতেন। তিনিও আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। চা খেতে খেতে বললেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আড়াই শ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ প্রভাবশালীরা ভাগ করে নিচ্ছেন। এ জন্য নাকি হোটেল ভাড়া নিয়ে ৫-৬ দিন ধরে মিটিং চলছে। এই ভাগাভাগিতে আছেন সরকারি দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য, রয়েছেন বিরোধী দলের ডাকসাইটে নেতাও। আরও আছেন এক শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর অনুরোধ, আমি যেন এ নিয়ে রিপোর্ট করি। কিন্তু সেই রিপোর্টে কোনোভাবেই তাঁকে জড়ানো যাবে না।
ঠিকাদারের এই কথা শুনে আমার প্রথম খটকা লাগল, তিনি নিজে ঠিকাদার হয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারায় অংশ না নিয়ে কেন আমাকে এ তথ্য দিলেন? আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, এ ধরনের খবরের তথ্য জোগাড় করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও কঠিন। তা ছাড়া এগুলো সহজে প্রমাণও করা যায় না। একটু খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, এ ঘটনার পেছনে রাজনীতি আছে।
এটা ছিল ২০০৫ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা। তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়, যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। ঠিকাদারদের ভেতরেও এখনকার মতো দলীয় মেরুকরণ। স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি ও যুবদলের ঠিকাদারেরা তখন ছিলেন লাভের গুড়ের পিঁপড়া। আর আমার সোর্স সেই ঠিকাদার যুবলীগ করতেন বলে কিছুটা কোণঠাসা। তিনি চান, টেন্ডার নিয়ে যে সমঝোতা হচ্ছে, তা যেন ফাঁস হয়ে যায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগে তখন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন মাসুদুল হক। তিনি বসতেন সড়ক ভবনের তৃতীয় তলায়। তাঁর কক্ষে গিয়ে পরিচয় দিতেই একথা-সেকথার ফাঁকে কাজ ভাগাভাগির কথা তুলতেই তাঁর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সব শুনে আমাকে কোনো সাহায্য করতে রাজি হলেন না। কিন্তু এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের একটি সেট আমার হাতে তুলে দিলেন। আমি যখন তাঁর রুম থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন বলছিলেন, …ভাই, আমাকে তো পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে। আমার মনে হলো, তিনি কোনো কারণে খুব ভয় পেয়েছেন।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর রুম থেকে বের হতে হতে মনে হলো, হালে পানি পেলাম। কাগজগুলো এখন ভালো করে পড়তে হবে, এ জন্য নিরাপদ স্থান দরকার। বাইক নিয়ে সোজা ঢুকে গেলাম পার্কের ভেতরে। পার্কের একটি বেঞ্চিতে বসেই পড়ে ফেললাম সব নথিপত্র।
এটা ছিল পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম বা সাময়িক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির কাজ। সংক্ষেপে এ কাজকে বলা হতো ‘পিএমপি’। সে বছর এর আওতায় দেশের প্রতিটি জেলায় সড়ক সংস্কার ও উন্নয়নকাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়। এ দরপত্রের সবকিছু হয়েছে খুব গোপনে। দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি কোনো সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। শুধু পিএমপির তালিকাভুক্ত ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়ে দরপত্র চাওয়া হয়। এতে ৬৪টি জেলায় ১১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে ২৪৯ কোটি টাকার কাজ করার কথা ছিল।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমাকে বলেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর চার বছরে সড়ক ও জনপথ বিভাগে এটা ছিল সবচেয়ে বড় কাজ। স্বাভাবিকভাবেই এ কাজ বাগানোর দিকে সবার নজর ছিল। সেই কাজ কবজা করতে শুরু থেকেই নানা ছক কষা হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, এর আগে এ ধরনের দরপত্রের ক্ষেত্রে সড়ক ও জনপথের জেলা কার্যালয় থেকেও দরপত্র বিক্রি করা হতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁরা সেটা করতে পারেননি। তিনি ইশারায় যা বললেন তার অর্থ হলো, এতে মন্ত্রী নাজমুল হুদার সায় ছিল। আর ভাগাভাগির বিষয়টি সম্পন্ন না হওয়ায় দরপত্র জমা দেওয়ার তারিখও বাড়াতে হয়। এর মধ্যে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে, সন্ত্রাসীরা তাদের দরপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। সমঝোতার আগে কেউ যাতে দরপত্র জমা না দিতে পারে, সে জন্য সড়ক ভবনে পাহারা বসানো হয়েছে।
আমি সবকিছু বাদ দিয়ে খুঁজতে শুরু করলাম, কোথায় সেই বৈঠক হচ্ছে। গুলিস্তানে হোটেল পীর ইয়ামেনি তখন কেবল চালু হয়েছে। প্রথমে গেলাম পীর ইয়ামেনি হোটেলে। সেখানে কিছু নেই। মনে হলো, পূর্বাণীতে হতে পারে। সেখানেও কেউ নেই। আমার ধারণা ছিল, এত মানুষ নিয়ে শেরাটন-সোনারগাঁওয়ে তাঁরা যাবেন না। পল্টন মোড়ের প্রীতম হোটেলের তখন খুব নামডাক। সেখানে গিয়ে খোঁজ করতেই একজন বললেন, আজাদ হোটেলে বড় পার্টি হচ্ছে। এলাম বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের মুখে পুরানা পল্টনের গ্র্যান্ড আজাদ হোটেলে।
কার্ড বিক্রির প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রডাক্টস কিছুদিন আগে এ হোটেল চালু করেছে। প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি একসময় আজাদ প্রডাক্টসের ম্যানেজার ছিলেন। ঝকমকে এই হোটেলের দোতলার বলরুমে ঢুকেই দেখি এলাহি কাণ্ড। শত শত লোক। কেউ কথা বলছেন, কেউ বসে আছেন। সামনে মঞ্চের মতো একটি স্থানে ১৫-২০ জন বসে। মনে হলো সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে সেখানেই।
ভালো করে দেখলাম, এখানে সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। তাঁরা সবাই যে সবাইকে চেনেন, এমন নয়। চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ কথা শুনলাম। পাশে একজনের কাছে কৌশলে জানতে চাইলাম কী হচ্ছে। তিনি মনে করলেন, আমিও ঠিকাদারের লোক। বললেন, এর আগে ২৪ নভেম্বর (২০০৫) থেকে এ বৈঠক হয়েছে টানা তিন দিন ধরে। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় ২ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়। ৩ ডিসেম্বর সারা দিন-রাত বৈঠক হয়েছে। ভোরবেলায় সবাই একমত হয়েছেন। দুই দফায় সব লোক এই হোটেলে খাওয়াদাওয়া করেছেন। রাতে বিএনপির দুজন এমপি হোস্টেলে এসেছিলেন। আমি যাওয়ার একটু আগে এসেছিলেন শেরপুরের তখনকার বিএনপির সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল।
এটুকু শুনেই আমার মাথায় বাজ পড়ে গেল। আর বসে না থেকে জনে জনে কথা বলে ছোট ছোট করে তথ্য জোগাড় করতে থাকলাম। একজন বললেন, সমঝোতা বৈঠকের খরচ বাবদ আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করবেন ঠিকাদারদের নেতা শাহাবুদ্দিন বাচ্চু। তবে হোটেলের হলটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ঠিকাদার জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুর নামে। টিংকুর তখন পুরানা পল্টন ও মগবাজারে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল। তাঁর সবকিছু দেখভাল করতেন তাঁরই বন্ধু আবদুর রাজ্জাক, যিনি কালা রাজ্জাক নামে বেশি পরিচিত। রাজশাহী বোর্ডে মেধাতালিকায় থাকা বগুড়ার ছেলে এই রাজ্জাক ডাকসু নির্বাচন করেছিলেন।
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। জানতে পারলাম, এর আগে ঠিকাদারেরা সরকারনির্ধারিত দরের চেয়ে ২০-২৫ শতাংশ কম দরে কাজ করতেন। এই বৈঠকে তাঁরা এক জোট হয়েছেন, সরকারের দেওয়া দরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি দরে দরপত্র জমা দেবেন। আর তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে যাঁরা কাজ পাবেন না, তাঁদের ৭-৮ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। বৈঠকের খরচের জন্য সব ঠিকাদারকে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
কারা কত ভাগে পেল, তার একটি হিসাব নেওয়ার চেষ্টা করে যা শুনলাম তা হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের দল পাঁচটি কাজ পেয়েছে। তারা সে কাজ ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সুব্রত বাইনের তিন ক্যাডার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসে সুব্রত বাইন মোবাইল ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। বিএনপির সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহমুদুল হক রুবেল, নাদিম মোস্তাফা, আবদুল গফুর ভূঁইয়ার লোকেরাও কাজ পেয়েছেন।
৭ ডিসেম্বর (২০০৫) পত্রিকায় এ নিয়ে বড় নিউজ ছাপা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাদিম মোস্তাফা ও মাহমুদুল হক রুবেলের বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। তাঁরা সবকিছু অস্বীকার করেছিলেন।
কিছুদিন পরে গেলাম এ রিপোর্টের ফলোআপ করতে। দেখি, দরপত্র জমা দেওয়ার পর কার্যাদেশ দেওয়া হয়ে গেছে। গেলাম সেই প্রকৌশলীর দপ্তরে। তিনি বললেন, ভেতরে যা-ই হোক না কেন, ওপরের সবকিছু হয়েছে আইন মেনেই। তারপর তিনি আক্ষেপ করে বললেন, সাংবাদিক সাহেব, রাজনীতিবিদদের হাত ঈশ্বরের মতো লম্বা, আপনারা তাঁদের টিকিটাও ছুঁতে পারবেন না। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
আরও পড়ুন:

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
সড়ক ভবনের পেছনের দিকে খুব সুন্দর পরিবেশে একটি ক্যানটিন ছিল, ঠিকাদারেরা সেখানে বসে গল্পগুজব করতেন। তিনিও আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। চা খেতে খেতে বললেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আড়াই শ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ প্রভাবশালীরা ভাগ করে নিচ্ছেন। এ জন্য নাকি হোটেল ভাড়া নিয়ে ৫-৬ দিন ধরে মিটিং চলছে। এই ভাগাভাগিতে আছেন সরকারি দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য, রয়েছেন বিরোধী দলের ডাকসাইটে নেতাও। আরও আছেন এক শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর অনুরোধ, আমি যেন এ নিয়ে রিপোর্ট করি। কিন্তু সেই রিপোর্টে কোনোভাবেই তাঁকে জড়ানো যাবে না।
ঠিকাদারের এই কথা শুনে আমার প্রথম খটকা লাগল, তিনি নিজে ঠিকাদার হয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারায় অংশ না নিয়ে কেন আমাকে এ তথ্য দিলেন? আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, এ ধরনের খবরের তথ্য জোগাড় করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও কঠিন। তা ছাড়া এগুলো সহজে প্রমাণও করা যায় না। একটু খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, এ ঘটনার পেছনে রাজনীতি আছে।
এটা ছিল ২০০৫ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা। তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়, যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। ঠিকাদারদের ভেতরেও এখনকার মতো দলীয় মেরুকরণ। স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি ও যুবদলের ঠিকাদারেরা তখন ছিলেন লাভের গুড়ের পিঁপড়া। আর আমার সোর্স সেই ঠিকাদার যুবলীগ করতেন বলে কিছুটা কোণঠাসা। তিনি চান, টেন্ডার নিয়ে যে সমঝোতা হচ্ছে, তা যেন ফাঁস হয়ে যায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগে তখন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন মাসুদুল হক। তিনি বসতেন সড়ক ভবনের তৃতীয় তলায়। তাঁর কক্ষে গিয়ে পরিচয় দিতেই একথা-সেকথার ফাঁকে কাজ ভাগাভাগির কথা তুলতেই তাঁর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সব শুনে আমাকে কোনো সাহায্য করতে রাজি হলেন না। কিন্তু এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের একটি সেট আমার হাতে তুলে দিলেন। আমি যখন তাঁর রুম থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন বলছিলেন, …ভাই, আমাকে তো পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে। আমার মনে হলো, তিনি কোনো কারণে খুব ভয় পেয়েছেন।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর রুম থেকে বের হতে হতে মনে হলো, হালে পানি পেলাম। কাগজগুলো এখন ভালো করে পড়তে হবে, এ জন্য নিরাপদ স্থান দরকার। বাইক নিয়ে সোজা ঢুকে গেলাম পার্কের ভেতরে। পার্কের একটি বেঞ্চিতে বসেই পড়ে ফেললাম সব নথিপত্র।
এটা ছিল পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম বা সাময়িক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির কাজ। সংক্ষেপে এ কাজকে বলা হতো ‘পিএমপি’। সে বছর এর আওতায় দেশের প্রতিটি জেলায় সড়ক সংস্কার ও উন্নয়নকাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়। এ দরপত্রের সবকিছু হয়েছে খুব গোপনে। দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি কোনো সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। শুধু পিএমপির তালিকাভুক্ত ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়ে দরপত্র চাওয়া হয়। এতে ৬৪টি জেলায় ১১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে ২৪৯ কোটি টাকার কাজ করার কথা ছিল।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমাকে বলেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর চার বছরে সড়ক ও জনপথ বিভাগে এটা ছিল সবচেয়ে বড় কাজ। স্বাভাবিকভাবেই এ কাজ বাগানোর দিকে সবার নজর ছিল। সেই কাজ কবজা করতে শুরু থেকেই নানা ছক কষা হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, এর আগে এ ধরনের দরপত্রের ক্ষেত্রে সড়ক ও জনপথের জেলা কার্যালয় থেকেও দরপত্র বিক্রি করা হতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁরা সেটা করতে পারেননি। তিনি ইশারায় যা বললেন তার অর্থ হলো, এতে মন্ত্রী নাজমুল হুদার সায় ছিল। আর ভাগাভাগির বিষয়টি সম্পন্ন না হওয়ায় দরপত্র জমা দেওয়ার তারিখও বাড়াতে হয়। এর মধ্যে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে, সন্ত্রাসীরা তাদের দরপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। সমঝোতার আগে কেউ যাতে দরপত্র জমা না দিতে পারে, সে জন্য সড়ক ভবনে পাহারা বসানো হয়েছে।
আমি সবকিছু বাদ দিয়ে খুঁজতে শুরু করলাম, কোথায় সেই বৈঠক হচ্ছে। গুলিস্তানে হোটেল পীর ইয়ামেনি তখন কেবল চালু হয়েছে। প্রথমে গেলাম পীর ইয়ামেনি হোটেলে। সেখানে কিছু নেই। মনে হলো, পূর্বাণীতে হতে পারে। সেখানেও কেউ নেই। আমার ধারণা ছিল, এত মানুষ নিয়ে শেরাটন-সোনারগাঁওয়ে তাঁরা যাবেন না। পল্টন মোড়ের প্রীতম হোটেলের তখন খুব নামডাক। সেখানে গিয়ে খোঁজ করতেই একজন বললেন, আজাদ হোটেলে বড় পার্টি হচ্ছে। এলাম বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের মুখে পুরানা পল্টনের গ্র্যান্ড আজাদ হোটেলে।
কার্ড বিক্রির প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রডাক্টস কিছুদিন আগে এ হোটেল চালু করেছে। প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি একসময় আজাদ প্রডাক্টসের ম্যানেজার ছিলেন। ঝকমকে এই হোটেলের দোতলার বলরুমে ঢুকেই দেখি এলাহি কাণ্ড। শত শত লোক। কেউ কথা বলছেন, কেউ বসে আছেন। সামনে মঞ্চের মতো একটি স্থানে ১৫-২০ জন বসে। মনে হলো সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে সেখানেই।
ভালো করে দেখলাম, এখানে সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। তাঁরা সবাই যে সবাইকে চেনেন, এমন নয়। চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ কথা শুনলাম। পাশে একজনের কাছে কৌশলে জানতে চাইলাম কী হচ্ছে। তিনি মনে করলেন, আমিও ঠিকাদারের লোক। বললেন, এর আগে ২৪ নভেম্বর (২০০৫) থেকে এ বৈঠক হয়েছে টানা তিন দিন ধরে। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় ২ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়। ৩ ডিসেম্বর সারা দিন-রাত বৈঠক হয়েছে। ভোরবেলায় সবাই একমত হয়েছেন। দুই দফায় সব লোক এই হোটেলে খাওয়াদাওয়া করেছেন। রাতে বিএনপির দুজন এমপি হোস্টেলে এসেছিলেন। আমি যাওয়ার একটু আগে এসেছিলেন শেরপুরের তখনকার বিএনপির সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল।
এটুকু শুনেই আমার মাথায় বাজ পড়ে গেল। আর বসে না থেকে জনে জনে কথা বলে ছোট ছোট করে তথ্য জোগাড় করতে থাকলাম। একজন বললেন, সমঝোতা বৈঠকের খরচ বাবদ আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করবেন ঠিকাদারদের নেতা শাহাবুদ্দিন বাচ্চু। তবে হোটেলের হলটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ঠিকাদার জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুর নামে। টিংকুর তখন পুরানা পল্টন ও মগবাজারে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল। তাঁর সবকিছু দেখভাল করতেন তাঁরই বন্ধু আবদুর রাজ্জাক, যিনি কালা রাজ্জাক নামে বেশি পরিচিত। রাজশাহী বোর্ডে মেধাতালিকায় থাকা বগুড়ার ছেলে এই রাজ্জাক ডাকসু নির্বাচন করেছিলেন।
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। জানতে পারলাম, এর আগে ঠিকাদারেরা সরকারনির্ধারিত দরের চেয়ে ২০-২৫ শতাংশ কম দরে কাজ করতেন। এই বৈঠকে তাঁরা এক জোট হয়েছেন, সরকারের দেওয়া দরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি দরে দরপত্র জমা দেবেন। আর তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে যাঁরা কাজ পাবেন না, তাঁদের ৭-৮ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। বৈঠকের খরচের জন্য সব ঠিকাদারকে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
কারা কত ভাগে পেল, তার একটি হিসাব নেওয়ার চেষ্টা করে যা শুনলাম তা হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের দল পাঁচটি কাজ পেয়েছে। তারা সে কাজ ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সুব্রত বাইনের তিন ক্যাডার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসে সুব্রত বাইন মোবাইল ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। বিএনপির সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহমুদুল হক রুবেল, নাদিম মোস্তাফা, আবদুল গফুর ভূঁইয়ার লোকেরাও কাজ পেয়েছেন।
৭ ডিসেম্বর (২০০৫) পত্রিকায় এ নিয়ে বড় নিউজ ছাপা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাদিম মোস্তাফা ও মাহমুদুল হক রুবেলের বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। তাঁরা সবকিছু অস্বীকার করেছিলেন।
কিছুদিন পরে গেলাম এ রিপোর্টের ফলোআপ করতে। দেখি, দরপত্র জমা দেওয়ার পর কার্যাদেশ দেওয়া হয়ে গেছে। গেলাম সেই প্রকৌশলীর দপ্তরে। তিনি বললেন, ভেতরে যা-ই হোক না কেন, ওপরের সবকিছু হয়েছে আইন মেনেই। তারপর তিনি আক্ষেপ করে বললেন, সাংবাদিক সাহেব, রাজনীতিবিদদের হাত ঈশ্বরের মতো লম্বা, আপনারা তাঁদের টিকিটাও ছুঁতে পারবেন না। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
সড়ক ভবনের পেছনের দিকে খুব সুন্দর পরিবেশে একটি ক্যানটিন ছিল, ঠিকাদারেরা সেখানে বসে গল্পগুজব করতেন। তিনিও আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। চা খেতে খেতে বললেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আড়াই শ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ প্রভাবশালীরা ভাগ করে নিচ্ছেন। এ জন্য নাকি হোটেল ভাড়া নিয়ে ৫-৬ দিন ধরে মিটিং চলছে। এই ভাগাভাগিতে আছেন সরকারি দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য, রয়েছেন বিরোধী দলের ডাকসাইটে নেতাও। আরও আছেন এক শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর অনুরোধ, আমি যেন এ নিয়ে রিপোর্ট করি। কিন্তু সেই রিপোর্টে কোনোভাবেই তাঁকে জড়ানো যাবে না।
ঠিকাদারের এই কথা শুনে আমার প্রথম খটকা লাগল, তিনি নিজে ঠিকাদার হয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারায় অংশ না নিয়ে কেন আমাকে এ তথ্য দিলেন? আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, এ ধরনের খবরের তথ্য জোগাড় করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও কঠিন। তা ছাড়া এগুলো সহজে প্রমাণও করা যায় না। একটু খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, এ ঘটনার পেছনে রাজনীতি আছে।
এটা ছিল ২০০৫ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা। তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়, যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। ঠিকাদারদের ভেতরেও এখনকার মতো দলীয় মেরুকরণ। স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি ও যুবদলের ঠিকাদারেরা তখন ছিলেন লাভের গুড়ের পিঁপড়া। আর আমার সোর্স সেই ঠিকাদার যুবলীগ করতেন বলে কিছুটা কোণঠাসা। তিনি চান, টেন্ডার নিয়ে যে সমঝোতা হচ্ছে, তা যেন ফাঁস হয়ে যায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগে তখন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন মাসুদুল হক। তিনি বসতেন সড়ক ভবনের তৃতীয় তলায়। তাঁর কক্ষে গিয়ে পরিচয় দিতেই একথা-সেকথার ফাঁকে কাজ ভাগাভাগির কথা তুলতেই তাঁর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সব শুনে আমাকে কোনো সাহায্য করতে রাজি হলেন না। কিন্তু এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের একটি সেট আমার হাতে তুলে দিলেন। আমি যখন তাঁর রুম থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন বলছিলেন, …ভাই, আমাকে তো পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে। আমার মনে হলো, তিনি কোনো কারণে খুব ভয় পেয়েছেন।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর রুম থেকে বের হতে হতে মনে হলো, হালে পানি পেলাম। কাগজগুলো এখন ভালো করে পড়তে হবে, এ জন্য নিরাপদ স্থান দরকার। বাইক নিয়ে সোজা ঢুকে গেলাম পার্কের ভেতরে। পার্কের একটি বেঞ্চিতে বসেই পড়ে ফেললাম সব নথিপত্র।
এটা ছিল পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম বা সাময়িক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির কাজ। সংক্ষেপে এ কাজকে বলা হতো ‘পিএমপি’। সে বছর এর আওতায় দেশের প্রতিটি জেলায় সড়ক সংস্কার ও উন্নয়নকাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়। এ দরপত্রের সবকিছু হয়েছে খুব গোপনে। দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি কোনো সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। শুধু পিএমপির তালিকাভুক্ত ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়ে দরপত্র চাওয়া হয়। এতে ৬৪টি জেলায় ১১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে ২৪৯ কোটি টাকার কাজ করার কথা ছিল।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমাকে বলেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর চার বছরে সড়ক ও জনপথ বিভাগে এটা ছিল সবচেয়ে বড় কাজ। স্বাভাবিকভাবেই এ কাজ বাগানোর দিকে সবার নজর ছিল। সেই কাজ কবজা করতে শুরু থেকেই নানা ছক কষা হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, এর আগে এ ধরনের দরপত্রের ক্ষেত্রে সড়ক ও জনপথের জেলা কার্যালয় থেকেও দরপত্র বিক্রি করা হতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁরা সেটা করতে পারেননি। তিনি ইশারায় যা বললেন তার অর্থ হলো, এতে মন্ত্রী নাজমুল হুদার সায় ছিল। আর ভাগাভাগির বিষয়টি সম্পন্ন না হওয়ায় দরপত্র জমা দেওয়ার তারিখও বাড়াতে হয়। এর মধ্যে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে, সন্ত্রাসীরা তাদের দরপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। সমঝোতার আগে কেউ যাতে দরপত্র জমা না দিতে পারে, সে জন্য সড়ক ভবনে পাহারা বসানো হয়েছে।
আমি সবকিছু বাদ দিয়ে খুঁজতে শুরু করলাম, কোথায় সেই বৈঠক হচ্ছে। গুলিস্তানে হোটেল পীর ইয়ামেনি তখন কেবল চালু হয়েছে। প্রথমে গেলাম পীর ইয়ামেনি হোটেলে। সেখানে কিছু নেই। মনে হলো, পূর্বাণীতে হতে পারে। সেখানেও কেউ নেই। আমার ধারণা ছিল, এত মানুষ নিয়ে শেরাটন-সোনারগাঁওয়ে তাঁরা যাবেন না। পল্টন মোড়ের প্রীতম হোটেলের তখন খুব নামডাক। সেখানে গিয়ে খোঁজ করতেই একজন বললেন, আজাদ হোটেলে বড় পার্টি হচ্ছে। এলাম বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের মুখে পুরানা পল্টনের গ্র্যান্ড আজাদ হোটেলে।
কার্ড বিক্রির প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রডাক্টস কিছুদিন আগে এ হোটেল চালু করেছে। প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি একসময় আজাদ প্রডাক্টসের ম্যানেজার ছিলেন। ঝকমকে এই হোটেলের দোতলার বলরুমে ঢুকেই দেখি এলাহি কাণ্ড। শত শত লোক। কেউ কথা বলছেন, কেউ বসে আছেন। সামনে মঞ্চের মতো একটি স্থানে ১৫-২০ জন বসে। মনে হলো সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে সেখানেই।
ভালো করে দেখলাম, এখানে সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। তাঁরা সবাই যে সবাইকে চেনেন, এমন নয়। চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ কথা শুনলাম। পাশে একজনের কাছে কৌশলে জানতে চাইলাম কী হচ্ছে। তিনি মনে করলেন, আমিও ঠিকাদারের লোক। বললেন, এর আগে ২৪ নভেম্বর (২০০৫) থেকে এ বৈঠক হয়েছে টানা তিন দিন ধরে। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় ২ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়। ৩ ডিসেম্বর সারা দিন-রাত বৈঠক হয়েছে। ভোরবেলায় সবাই একমত হয়েছেন। দুই দফায় সব লোক এই হোটেলে খাওয়াদাওয়া করেছেন। রাতে বিএনপির দুজন এমপি হোস্টেলে এসেছিলেন। আমি যাওয়ার একটু আগে এসেছিলেন শেরপুরের তখনকার বিএনপির সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল।
এটুকু শুনেই আমার মাথায় বাজ পড়ে গেল। আর বসে না থেকে জনে জনে কথা বলে ছোট ছোট করে তথ্য জোগাড় করতে থাকলাম। একজন বললেন, সমঝোতা বৈঠকের খরচ বাবদ আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করবেন ঠিকাদারদের নেতা শাহাবুদ্দিন বাচ্চু। তবে হোটেলের হলটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ঠিকাদার জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুর নামে। টিংকুর তখন পুরানা পল্টন ও মগবাজারে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল। তাঁর সবকিছু দেখভাল করতেন তাঁরই বন্ধু আবদুর রাজ্জাক, যিনি কালা রাজ্জাক নামে বেশি পরিচিত। রাজশাহী বোর্ডে মেধাতালিকায় থাকা বগুড়ার ছেলে এই রাজ্জাক ডাকসু নির্বাচন করেছিলেন।
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। জানতে পারলাম, এর আগে ঠিকাদারেরা সরকারনির্ধারিত দরের চেয়ে ২০-২৫ শতাংশ কম দরে কাজ করতেন। এই বৈঠকে তাঁরা এক জোট হয়েছেন, সরকারের দেওয়া দরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি দরে দরপত্র জমা দেবেন। আর তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে যাঁরা কাজ পাবেন না, তাঁদের ৭-৮ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। বৈঠকের খরচের জন্য সব ঠিকাদারকে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
কারা কত ভাগে পেল, তার একটি হিসাব নেওয়ার চেষ্টা করে যা শুনলাম তা হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের দল পাঁচটি কাজ পেয়েছে। তারা সে কাজ ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সুব্রত বাইনের তিন ক্যাডার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসে সুব্রত বাইন মোবাইল ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। বিএনপির সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহমুদুল হক রুবেল, নাদিম মোস্তাফা, আবদুল গফুর ভূঁইয়ার লোকেরাও কাজ পেয়েছেন।
৭ ডিসেম্বর (২০০৫) পত্রিকায় এ নিয়ে বড় নিউজ ছাপা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাদিম মোস্তাফা ও মাহমুদুল হক রুবেলের বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। তাঁরা সবকিছু অস্বীকার করেছিলেন।
কিছুদিন পরে গেলাম এ রিপোর্টের ফলোআপ করতে। দেখি, দরপত্র জমা দেওয়ার পর কার্যাদেশ দেওয়া হয়ে গেছে। গেলাম সেই প্রকৌশলীর দপ্তরে। তিনি বললেন, ভেতরে যা-ই হোক না কেন, ওপরের সবকিছু হয়েছে আইন মেনেই। তারপর তিনি আক্ষেপ করে বললেন, সাংবাদিক সাহেব, রাজনীতিবিদদের হাত ঈশ্বরের মতো লম্বা, আপনারা তাঁদের টিকিটাও ছুঁতে পারবেন না। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
আরও পড়ুন:

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
সড়ক ভবনের পেছনের দিকে খুব সুন্দর পরিবেশে একটি ক্যানটিন ছিল, ঠিকাদারেরা সেখানে বসে গল্পগুজব করতেন। তিনিও আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। চা খেতে খেতে বললেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আড়াই শ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ প্রভাবশালীরা ভাগ করে নিচ্ছেন। এ জন্য নাকি হোটেল ভাড়া নিয়ে ৫-৬ দিন ধরে মিটিং চলছে। এই ভাগাভাগিতে আছেন সরকারি দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য, রয়েছেন বিরোধী দলের ডাকসাইটে নেতাও। আরও আছেন এক শীর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর অনুরোধ, আমি যেন এ নিয়ে রিপোর্ট করি। কিন্তু সেই রিপোর্টে কোনোভাবেই তাঁকে জড়ানো যাবে না।
ঠিকাদারের এই কথা শুনে আমার প্রথম খটকা লাগল, তিনি নিজে ঠিকাদার হয়ে ভাগ-বাঁটোয়ারায় অংশ না নিয়ে কেন আমাকে এ তথ্য দিলেন? আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, এ ধরনের খবরের তথ্য জোগাড় করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও কঠিন। তা ছাড়া এগুলো সহজে প্রমাণও করা যায় না। একটু খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারলাম, এ ঘটনার পেছনে রাজনীতি আছে।
এটা ছিল ২০০৫ সালের ডিসেম্বরের ঘটনা। তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়, যোগাযোগমন্ত্রী ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। ঠিকাদারদের ভেতরেও এখনকার মতো দলীয় মেরুকরণ। স্বাভাবিকভাবেই বিএনপি ও যুবদলের ঠিকাদারেরা তখন ছিলেন লাভের গুড়ের পিঁপড়া। আর আমার সোর্স সেই ঠিকাদার যুবলীগ করতেন বলে কিছুটা কোণঠাসা। তিনি চান, টেন্ডার নিয়ে যে সমঝোতা হচ্ছে, তা যেন ফাঁস হয়ে যায়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগে তখন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন মাসুদুল হক। তিনি বসতেন সড়ক ভবনের তৃতীয় তলায়। তাঁর কক্ষে গিয়ে পরিচয় দিতেই একথা-সেকথার ফাঁকে কাজ ভাগাভাগির কথা তুলতেই তাঁর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সব শুনে আমাকে কোনো সাহায্য করতে রাজি হলেন না। কিন্তু এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রের একটি সেট আমার হাতে তুলে দিলেন। আমি যখন তাঁর রুম থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন বলছিলেন, …ভাই, আমাকে তো পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে। আমার মনে হলো, তিনি কোনো কারণে খুব ভয় পেয়েছেন।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর রুম থেকে বের হতে হতে মনে হলো, হালে পানি পেলাম। কাগজগুলো এখন ভালো করে পড়তে হবে, এ জন্য নিরাপদ স্থান দরকার। বাইক নিয়ে সোজা ঢুকে গেলাম পার্কের ভেতরে। পার্কের একটি বেঞ্চিতে বসেই পড়ে ফেললাম সব নথিপত্র।
এটা ছিল পিরিয়ডিক মেইনটেন্যান্স প্রোগ্রাম বা সাময়িক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির কাজ। সংক্ষেপে এ কাজকে বলা হতো ‘পিএমপি’। সে বছর এর আওতায় দেশের প্রতিটি জেলায় সড়ক সংস্কার ও উন্নয়নকাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়। এ দরপত্রের সবকিছু হয়েছে খুব গোপনে। দরপত্রের বিজ্ঞপ্তি কোনো সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। শুধু পিএমপির তালিকাভুক্ত ২১৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছে চিঠি দিয়ে দরপত্র চাওয়া হয়। এতে ৬৪টি জেলায় ১১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে ২৪৯ কোটি টাকার কাজ করার কথা ছিল।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আমাকে বলেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর চার বছরে সড়ক ও জনপথ বিভাগে এটা ছিল সবচেয়ে বড় কাজ। স্বাভাবিকভাবেই এ কাজ বাগানোর দিকে সবার নজর ছিল। সেই কাজ কবজা করতে শুরু থেকেই নানা ছক কষা হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, এর আগে এ ধরনের দরপত্রের ক্ষেত্রে সড়ক ও জনপথের জেলা কার্যালয় থেকেও দরপত্র বিক্রি করা হতো। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁরা সেটা করতে পারেননি। তিনি ইশারায় যা বললেন তার অর্থ হলো, এতে মন্ত্রী নাজমুল হুদার সায় ছিল। আর ভাগাভাগির বিষয়টি সম্পন্ন না হওয়ায় দরপত্র জমা দেওয়ার তারিখও বাড়াতে হয়। এর মধ্যে ১০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছে, সন্ত্রাসীরা তাদের দরপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। সমঝোতার আগে কেউ যাতে দরপত্র জমা না দিতে পারে, সে জন্য সড়ক ভবনে পাহারা বসানো হয়েছে।
আমি সবকিছু বাদ দিয়ে খুঁজতে শুরু করলাম, কোথায় সেই বৈঠক হচ্ছে। গুলিস্তানে হোটেল পীর ইয়ামেনি তখন কেবল চালু হয়েছে। প্রথমে গেলাম পীর ইয়ামেনি হোটেলে। সেখানে কিছু নেই। মনে হলো, পূর্বাণীতে হতে পারে। সেখানেও কেউ নেই। আমার ধারণা ছিল, এত মানুষ নিয়ে শেরাটন-সোনারগাঁওয়ে তাঁরা যাবেন না। পল্টন মোড়ের প্রীতম হোটেলের তখন খুব নামডাক। সেখানে গিয়ে খোঁজ করতেই একজন বললেন, আজাদ হোটেলে বড় পার্টি হচ্ছে। এলাম বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের মুখে পুরানা পল্টনের গ্র্যান্ড আজাদ হোটেলে।
কার্ড বিক্রির প্রতিষ্ঠান আজাদ প্রডাক্টস কিছুদিন আগে এ হোটেল চালু করেছে। প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি একসময় আজাদ প্রডাক্টসের ম্যানেজার ছিলেন। ঝকমকে এই হোটেলের দোতলার বলরুমে ঢুকেই দেখি এলাহি কাণ্ড। শত শত লোক। কেউ কথা বলছেন, কেউ বসে আছেন। সামনে মঞ্চের মতো একটি স্থানে ১৫-২০ জন বসে। মনে হলো সব সিদ্ধান্ত হচ্ছে সেখানেই।
ভালো করে দেখলাম, এখানে সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক। তাঁরা সবাই যে সবাইকে চেনেন, এমন নয়। চুপচাপ বসে কিছুক্ষণ কথা শুনলাম। পাশে একজনের কাছে কৌশলে জানতে চাইলাম কী হচ্ছে। তিনি মনে করলেন, আমিও ঠিকাদারের লোক। বললেন, এর আগে ২৪ নভেম্বর (২০০৫) থেকে এ বৈঠক হয়েছে টানা তিন দিন ধরে। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় ২ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শুরু হয়। ৩ ডিসেম্বর সারা দিন-রাত বৈঠক হয়েছে। ভোরবেলায় সবাই একমত হয়েছেন। দুই দফায় সব লোক এই হোটেলে খাওয়াদাওয়া করেছেন। রাতে বিএনপির দুজন এমপি হোস্টেলে এসেছিলেন। আমি যাওয়ার একটু আগে এসেছিলেন শেরপুরের তখনকার বিএনপির সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল।
এটুকু শুনেই আমার মাথায় বাজ পড়ে গেল। আর বসে না থেকে জনে জনে কথা বলে ছোট ছোট করে তথ্য জোগাড় করতে থাকলাম। একজন বললেন, সমঝোতা বৈঠকের খরচ বাবদ আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করবেন ঠিকাদারদের নেতা শাহাবুদ্দিন বাচ্চু। তবে হোটেলের হলটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ঠিকাদার জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুর নামে। টিংকুর তখন পুরানা পল্টন ও মগবাজারে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছিল। তাঁর সবকিছু দেখভাল করতেন তাঁরই বন্ধু আবদুর রাজ্জাক, যিনি কালা রাজ্জাক নামে বেশি পরিচিত। রাজশাহী বোর্ডে মেধাতালিকায় থাকা বগুড়ার ছেলে এই রাজ্জাক ডাকসু নির্বাচন করেছিলেন।
বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। জানতে পারলাম, এর আগে ঠিকাদারেরা সরকারনির্ধারিত দরের চেয়ে ২০-২৫ শতাংশ কম দরে কাজ করতেন। এই বৈঠকে তাঁরা এক জোট হয়েছেন, সরকারের দেওয়া দরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি দরে দরপত্র জমা দেবেন। আর তালিকাভুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে যাঁরা কাজ পাবেন না, তাঁদের ৭-৮ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। বৈঠকের খরচের জন্য সব ঠিকাদারকে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
কারা কত ভাগে পেল, তার একটি হিসাব নেওয়ার চেষ্টা করে যা শুনলাম তা হলো, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের দল পাঁচটি কাজ পেয়েছে। তারা সে কাজ ৩ কোটি টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। সুব্রত বাইনের তিন ক্যাডার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসে সুব্রত বাইন মোবাইল ফোনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। বিএনপির সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মাহমুদুল হক রুবেল, নাদিম মোস্তাফা, আবদুল গফুর ভূঁইয়ার লোকেরাও কাজ পেয়েছেন।
৭ ডিসেম্বর (২০০৫) পত্রিকায় এ নিয়ে বড় নিউজ ছাপা হয়েছিল। সেই রিপোর্টে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নাদিম মোস্তাফা ও মাহমুদুল হক রুবেলের বক্তব্য ছাপা হয়েছিল। তাঁরা সবকিছু অস্বীকার করেছিলেন।
কিছুদিন পরে গেলাম এ রিপোর্টের ফলোআপ করতে। দেখি, দরপত্র জমা দেওয়ার পর কার্যাদেশ দেওয়া হয়ে গেছে। গেলাম সেই প্রকৌশলীর দপ্তরে। তিনি বললেন, ভেতরে যা-ই হোক না কেন, ওপরের সবকিছু হয়েছে আইন মেনেই। তারপর তিনি আক্ষেপ করে বললেন, সাংবাদিক সাহেব, রাজনীতিবিদদের হাত ঈশ্বরের মতো লম্বা, আপনারা তাঁদের টিকিটাও ছুঁতে পারবেন না। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
১৮ জুন ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
১৮ জুন ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
১৮ জুন ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

কিছুদিন আগেও মৎস্য ভবনের মোড়ে হাইকোর্টের জমিতে ছিল সড়ক ও জনপথের প্রধান কার্যালয়। ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে সেখানে এক ঠিকাদার খুন হয়েছিলেন ঠিকাদারির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধে। সেই খুনের মামলার ফলোআপ করতে গিয়ে কয়েকজন বড় ঠিকাদারের সঙ্গে চেনাজানা হয়। তাঁদেরই একজন একদিন ফোন দিয়ে সড়ক ভবনে আসতে বললেন।
১৮ জুন ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে