কামরুল হাসান

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা কখনো মরে না। কয়েক বছর আগে নুবান হত্যার রায় শুনে আমার সে রকমই মনে হয়েছিল। নুবানের কথা মনে আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যিনি খুন হয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক খুন হওয়ার পর যে রকম হইচই হয়, নুবানের ক্ষেত্রেও তা কিছুটা হয়েছিল। এরপর সেই হত্যার বিচার নিয়ে আর কাউকে কখনো সরব হতে দেখিনি—না রাষ্ট্র, না প্রতিষ্ঠান, না পরিবার। কেন তারা সরব হয়নি, সেটা এখনো বিস্ময়ের।
নুবান আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। কৃতী বলছি এ কারণে যে, ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পরীক্ষায় অর্থনীতিতে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাঁকে শিক্ষকতায় নিয়ে আসে। নুবানের বাবা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক। দুই মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সুখের সংসার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পর কাজী সোহানা নাজনীনকে বিয়ে করেন নুবান। স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের একটি বাসায়। ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেই বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন আসাদ গেটে নিজের ক্যামেরা মেরামত করার উদ্দেশ্যে। আধঘণ্টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলে গিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু আর ফেরেননি।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় অজ্ঞাতনামা আততায়ীরা তাঁকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের মাধ্যমে গুরুতর আহত করে ফেলে যায়। তেজগাঁও থানার ওসি খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে ভর্তি করান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় তিনি মারা যান।
ঘটনার দিন মোহাম্মদপুরের বাসায় নুবানের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তাঁর মা, বোন পঞ্চগড়ে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে নুবানের বন্ধু মিল্টন একটি ভিডিও ক্যাসেট দেওয়ার জন্য সেই বাসায় যান। সেখান থেকে তেজগাঁও থানায় গিয়ে নুবানের নিখোঁজ হওয়ার খবর দিয়ে একটি জিডি করেন। যদিও ওই সময় নুবান মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নুবান মারা যাওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা তেজগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম ছিল না।
তেজগাঁও থানা-পুলিশ সে সময় চার ছিনতাইকারীকে ধরে বলার চেষ্টা করেছিল, এটি ছিনতাইকারীদের কাজ। যদিও নুবানের কাছে ছিনতাই হওয়ার মতো কিছু ছিল না। এরপর মামলা যায় ডিবিতে। সেখানে লোকদেখানো কিছু তদন্ত এবং আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়। পত্রপত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হলে মামলা যায় সিআইডিতে। আবদুল কাহার আকন্দ প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি তদন্তের শুরুতেই শরীয়তপুরের জাজিরার কে এম আলমগীর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আরও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা সেই মামলা তদন্ত করেন।
তখন নুবানের খুনের কারণ হিসেবে দুটি বিষয় সামনে এসেছিল। প্রথমে বলা হয়, এই খুনে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন ও তাঁর বন্ধু মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনের হাত আছে। নুবানের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই সোহানা-মিল্টনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নুবানকে খুন করে পথের কাঁটা সরান তাঁরা। নুবানের শাশুড়ি মেহেরুন্নেসা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকারও করেছিলেন।
আর দ্বিতীয়টি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে নুবানের অবস্থান নেওয়া। সে সময় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং বিভাগের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এতে একজন শিক্ষক চাকরি হারান, আরেকজনকে তদন্তের পর বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় কিছু ছাত্র ও কয়েকজন শিক্ষক নুবানের ওপর রুষ্ট হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি’ দিয়েছিলেন নুবান। পুলিশ ও চিকিৎসকের উপস্থিতিতে বলেছিলেন, ‘মোরশেদ সব জানে। ঈর্ষা।’ তাঁর এই জবানবন্দির ব্যক্তিটি হলেন নুবানের সহকর্মী প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কাউকেই কখনো আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাসের মাথায় ১৯৯৬ সালে এ কে এম মাহবুব মোরশেদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। নুবান মারা যাওয়ার পর মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনকে বিয়ে করে বিদেশে চলে যান নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন।
এ মামলা তদন্ত করে ২০০২ সালের ১ জুলাই অভিযোগপত্র দেন সিআইডির সহকারী সুপার মো. আমিনুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীনের সম্পর্ক। সোহানা ও তাঁর বর্তমান স্বামী মোহাইমিনুর রহমান পরস্পর যোগসাজশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ জানতেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে মোরশেদের এই বক্তব্য আনা হয়। মোরশেদ বলেন, খুন হওয়ার আগে নুবান আহমেদ বলেছিলেন, কিছু ছাত্র তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন।
নুবান আহমেদ খুন হওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা এজাহারে ও সাক্ষ্যে বলেন, নুবানের অবস্থানের কারণে ১৫ জন ছাত্রের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
মজার ব্যাপার হলো, এই অভিযোগপত্র দেওয়ার কিছুদিন পর ডিভি লটারি পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
এরপর বিচার শুরু হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালতের মূল বিচারক, ভারপ্রাপ্ত বিচারকসহ অন্তত ১২ জন বিচারক এই মামলার বিচারের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। সবাই মামলার তদন্তে অবহেলা আর সাক্ষ্য-প্রমাণের ঘাটতি দেখে বিস্মিত হন। অবশেষে ২০১৮ সালের ৫ জুন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আল মামুন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। আদালত বলেন, এ হত্যার তদন্ত ছিল ‘অপ্রতুল’, প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। নুবানের মা, বোনসহ মামলার সাক্ষীদের কেউই সরাসরি হত্যার অভিযোগে কাউকে অভিযুক্ত করেননি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও আরও সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হন।
নুবানের শ্বশুর এবং তাঁর শাশুড়ি মেহেরুন্নেসাও মামলায় সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু তাঁদের জবানবন্দিতে তাঁরা নিজের মেয়ে বা অন্য দুই প্রধান অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য দেননি।
আদালত বলেছেন, ‘অপরাধীদের হাতে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এ ঘৃণ্য অপরাধের বিচার না পাওয়াটাও দুর্ভাগ্যজনক।’
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কাল ফোন করেছিলাম নুবানের বড় বোন আসফিয়া সাবিনাকে। কথা বলতে গিয়ে তাঁর কণ্ঠ ধরে এসেছে। বললেন, ‘কী হবে আর এ নিয়ে কথা বলে!’
কথা শেষ করে মনটা খারাপ হয়ে গেল। নুবান খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাদের নাম এসেছিল, তারা সব উধাও। শুধু কোথাও কেউ নেই—না অভিযুক্ত, না আপনজন, না ন্যায়বিচার। এমনকি কোনো কথাও নেই।
আরও পড়ুন:

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা কখনো মরে না। কয়েক বছর আগে নুবান হত্যার রায় শুনে আমার সে রকমই মনে হয়েছিল। নুবানের কথা মনে আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যিনি খুন হয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক খুন হওয়ার পর যে রকম হইচই হয়, নুবানের ক্ষেত্রেও তা কিছুটা হয়েছিল। এরপর সেই হত্যার বিচার নিয়ে আর কাউকে কখনো সরব হতে দেখিনি—না রাষ্ট্র, না প্রতিষ্ঠান, না পরিবার। কেন তারা সরব হয়নি, সেটা এখনো বিস্ময়ের।
নুবান আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। কৃতী বলছি এ কারণে যে, ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পরীক্ষায় অর্থনীতিতে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাঁকে শিক্ষকতায় নিয়ে আসে। নুবানের বাবা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক। দুই মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সুখের সংসার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পর কাজী সোহানা নাজনীনকে বিয়ে করেন নুবান। স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের একটি বাসায়। ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেই বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন আসাদ গেটে নিজের ক্যামেরা মেরামত করার উদ্দেশ্যে। আধঘণ্টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলে গিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু আর ফেরেননি।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় অজ্ঞাতনামা আততায়ীরা তাঁকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের মাধ্যমে গুরুতর আহত করে ফেলে যায়। তেজগাঁও থানার ওসি খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে ভর্তি করান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় তিনি মারা যান।
ঘটনার দিন মোহাম্মদপুরের বাসায় নুবানের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তাঁর মা, বোন পঞ্চগড়ে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে নুবানের বন্ধু মিল্টন একটি ভিডিও ক্যাসেট দেওয়ার জন্য সেই বাসায় যান। সেখান থেকে তেজগাঁও থানায় গিয়ে নুবানের নিখোঁজ হওয়ার খবর দিয়ে একটি জিডি করেন। যদিও ওই সময় নুবান মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নুবান মারা যাওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা তেজগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম ছিল না।
তেজগাঁও থানা-পুলিশ সে সময় চার ছিনতাইকারীকে ধরে বলার চেষ্টা করেছিল, এটি ছিনতাইকারীদের কাজ। যদিও নুবানের কাছে ছিনতাই হওয়ার মতো কিছু ছিল না। এরপর মামলা যায় ডিবিতে। সেখানে লোকদেখানো কিছু তদন্ত এবং আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়। পত্রপত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হলে মামলা যায় সিআইডিতে। আবদুল কাহার আকন্দ প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি তদন্তের শুরুতেই শরীয়তপুরের জাজিরার কে এম আলমগীর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আরও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা সেই মামলা তদন্ত করেন।
তখন নুবানের খুনের কারণ হিসেবে দুটি বিষয় সামনে এসেছিল। প্রথমে বলা হয়, এই খুনে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন ও তাঁর বন্ধু মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনের হাত আছে। নুবানের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই সোহানা-মিল্টনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নুবানকে খুন করে পথের কাঁটা সরান তাঁরা। নুবানের শাশুড়ি মেহেরুন্নেসা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকারও করেছিলেন।
আর দ্বিতীয়টি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে নুবানের অবস্থান নেওয়া। সে সময় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং বিভাগের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এতে একজন শিক্ষক চাকরি হারান, আরেকজনকে তদন্তের পর বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় কিছু ছাত্র ও কয়েকজন শিক্ষক নুবানের ওপর রুষ্ট হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি’ দিয়েছিলেন নুবান। পুলিশ ও চিকিৎসকের উপস্থিতিতে বলেছিলেন, ‘মোরশেদ সব জানে। ঈর্ষা।’ তাঁর এই জবানবন্দির ব্যক্তিটি হলেন নুবানের সহকর্মী প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কাউকেই কখনো আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাসের মাথায় ১৯৯৬ সালে এ কে এম মাহবুব মোরশেদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। নুবান মারা যাওয়ার পর মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনকে বিয়ে করে বিদেশে চলে যান নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন।
এ মামলা তদন্ত করে ২০০২ সালের ১ জুলাই অভিযোগপত্র দেন সিআইডির সহকারী সুপার মো. আমিনুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীনের সম্পর্ক। সোহানা ও তাঁর বর্তমান স্বামী মোহাইমিনুর রহমান পরস্পর যোগসাজশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ জানতেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে মোরশেদের এই বক্তব্য আনা হয়। মোরশেদ বলেন, খুন হওয়ার আগে নুবান আহমেদ বলেছিলেন, কিছু ছাত্র তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন।
নুবান আহমেদ খুন হওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা এজাহারে ও সাক্ষ্যে বলেন, নুবানের অবস্থানের কারণে ১৫ জন ছাত্রের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
মজার ব্যাপার হলো, এই অভিযোগপত্র দেওয়ার কিছুদিন পর ডিভি লটারি পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
এরপর বিচার শুরু হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালতের মূল বিচারক, ভারপ্রাপ্ত বিচারকসহ অন্তত ১২ জন বিচারক এই মামলার বিচারের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। সবাই মামলার তদন্তে অবহেলা আর সাক্ষ্য-প্রমাণের ঘাটতি দেখে বিস্মিত হন। অবশেষে ২০১৮ সালের ৫ জুন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আল মামুন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। আদালত বলেন, এ হত্যার তদন্ত ছিল ‘অপ্রতুল’, প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। নুবানের মা, বোনসহ মামলার সাক্ষীদের কেউই সরাসরি হত্যার অভিযোগে কাউকে অভিযুক্ত করেননি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও আরও সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হন।
নুবানের শ্বশুর এবং তাঁর শাশুড়ি মেহেরুন্নেসাও মামলায় সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু তাঁদের জবানবন্দিতে তাঁরা নিজের মেয়ে বা অন্য দুই প্রধান অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য দেননি।
আদালত বলেছেন, ‘অপরাধীদের হাতে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এ ঘৃণ্য অপরাধের বিচার না পাওয়াটাও দুর্ভাগ্যজনক।’
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কাল ফোন করেছিলাম নুবানের বড় বোন আসফিয়া সাবিনাকে। কথা বলতে গিয়ে তাঁর কণ্ঠ ধরে এসেছে। বললেন, ‘কী হবে আর এ নিয়ে কথা বলে!’
কথা শেষ করে মনটা খারাপ হয়ে গেল। নুবান খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাদের নাম এসেছিল, তারা সব উধাও। শুধু কোথাও কেউ নেই—না অভিযুক্ত, না আপনজন, না ন্যায়বিচার। এমনকি কোনো কথাও নেই।
আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা কখনো মরে না। কয়েক বছর আগে নুবান হত্যার রায় শুনে আমার সে রকমই মনে হয়েছিল। নুবানের কথা মনে আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যিনি খুন হয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক খুন হওয়ার পর যে রকম হইচই হয়, নুবানের ক্ষেত্রেও তা কিছুটা হয়েছিল। এরপর সেই হত্যার বিচার নিয়ে আর কাউকে কখনো সরব হতে দেখিনি—না রাষ্ট্র, না প্রতিষ্ঠান, না পরিবার। কেন তারা সরব হয়নি, সেটা এখনো বিস্ময়ের।
নুবান আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। কৃতী বলছি এ কারণে যে, ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পরীক্ষায় অর্থনীতিতে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাঁকে শিক্ষকতায় নিয়ে আসে। নুবানের বাবা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক। দুই মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সুখের সংসার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পর কাজী সোহানা নাজনীনকে বিয়ে করেন নুবান। স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের একটি বাসায়। ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেই বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন আসাদ গেটে নিজের ক্যামেরা মেরামত করার উদ্দেশ্যে। আধঘণ্টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলে গিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু আর ফেরেননি।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় অজ্ঞাতনামা আততায়ীরা তাঁকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের মাধ্যমে গুরুতর আহত করে ফেলে যায়। তেজগাঁও থানার ওসি খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে ভর্তি করান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় তিনি মারা যান।
ঘটনার দিন মোহাম্মদপুরের বাসায় নুবানের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তাঁর মা, বোন পঞ্চগড়ে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে নুবানের বন্ধু মিল্টন একটি ভিডিও ক্যাসেট দেওয়ার জন্য সেই বাসায় যান। সেখান থেকে তেজগাঁও থানায় গিয়ে নুবানের নিখোঁজ হওয়ার খবর দিয়ে একটি জিডি করেন। যদিও ওই সময় নুবান মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নুবান মারা যাওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা তেজগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম ছিল না।
তেজগাঁও থানা-পুলিশ সে সময় চার ছিনতাইকারীকে ধরে বলার চেষ্টা করেছিল, এটি ছিনতাইকারীদের কাজ। যদিও নুবানের কাছে ছিনতাই হওয়ার মতো কিছু ছিল না। এরপর মামলা যায় ডিবিতে। সেখানে লোকদেখানো কিছু তদন্ত এবং আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়। পত্রপত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হলে মামলা যায় সিআইডিতে। আবদুল কাহার আকন্দ প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি তদন্তের শুরুতেই শরীয়তপুরের জাজিরার কে এম আলমগীর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আরও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা সেই মামলা তদন্ত করেন।
তখন নুবানের খুনের কারণ হিসেবে দুটি বিষয় সামনে এসেছিল। প্রথমে বলা হয়, এই খুনে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন ও তাঁর বন্ধু মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনের হাত আছে। নুবানের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই সোহানা-মিল্টনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নুবানকে খুন করে পথের কাঁটা সরান তাঁরা। নুবানের শাশুড়ি মেহেরুন্নেসা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকারও করেছিলেন।
আর দ্বিতীয়টি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে নুবানের অবস্থান নেওয়া। সে সময় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং বিভাগের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এতে একজন শিক্ষক চাকরি হারান, আরেকজনকে তদন্তের পর বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় কিছু ছাত্র ও কয়েকজন শিক্ষক নুবানের ওপর রুষ্ট হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি’ দিয়েছিলেন নুবান। পুলিশ ও চিকিৎসকের উপস্থিতিতে বলেছিলেন, ‘মোরশেদ সব জানে। ঈর্ষা।’ তাঁর এই জবানবন্দির ব্যক্তিটি হলেন নুবানের সহকর্মী প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কাউকেই কখনো আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাসের মাথায় ১৯৯৬ সালে এ কে এম মাহবুব মোরশেদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। নুবান মারা যাওয়ার পর মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনকে বিয়ে করে বিদেশে চলে যান নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন।
এ মামলা তদন্ত করে ২০০২ সালের ১ জুলাই অভিযোগপত্র দেন সিআইডির সহকারী সুপার মো. আমিনুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীনের সম্পর্ক। সোহানা ও তাঁর বর্তমান স্বামী মোহাইমিনুর রহমান পরস্পর যোগসাজশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ জানতেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে মোরশেদের এই বক্তব্য আনা হয়। মোরশেদ বলেন, খুন হওয়ার আগে নুবান আহমেদ বলেছিলেন, কিছু ছাত্র তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন।
নুবান আহমেদ খুন হওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা এজাহারে ও সাক্ষ্যে বলেন, নুবানের অবস্থানের কারণে ১৫ জন ছাত্রের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
মজার ব্যাপার হলো, এই অভিযোগপত্র দেওয়ার কিছুদিন পর ডিভি লটারি পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
এরপর বিচার শুরু হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালতের মূল বিচারক, ভারপ্রাপ্ত বিচারকসহ অন্তত ১২ জন বিচারক এই মামলার বিচারের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। সবাই মামলার তদন্তে অবহেলা আর সাক্ষ্য-প্রমাণের ঘাটতি দেখে বিস্মিত হন। অবশেষে ২০১৮ সালের ৫ জুন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আল মামুন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। আদালত বলেন, এ হত্যার তদন্ত ছিল ‘অপ্রতুল’, প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। নুবানের মা, বোনসহ মামলার সাক্ষীদের কেউই সরাসরি হত্যার অভিযোগে কাউকে অভিযুক্ত করেননি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও আরও সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হন।
নুবানের শ্বশুর এবং তাঁর শাশুড়ি মেহেরুন্নেসাও মামলায় সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু তাঁদের জবানবন্দিতে তাঁরা নিজের মেয়ে বা অন্য দুই প্রধান অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য দেননি।
আদালত বলেছেন, ‘অপরাধীদের হাতে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এ ঘৃণ্য অপরাধের বিচার না পাওয়াটাও দুর্ভাগ্যজনক।’
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কাল ফোন করেছিলাম নুবানের বড় বোন আসফিয়া সাবিনাকে। কথা বলতে গিয়ে তাঁর কণ্ঠ ধরে এসেছে। বললেন, ‘কী হবে আর এ নিয়ে কথা বলে!’
কথা শেষ করে মনটা খারাপ হয়ে গেল। নুবান খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাদের নাম এসেছিল, তারা সব উধাও। শুধু কোথাও কেউ নেই—না অভিযুক্ত, না আপনজন, না ন্যায়বিচার। এমনকি কোনো কথাও নেই।
আরও পড়ুন:

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা কখনো মরে না। কয়েক বছর আগে নুবান হত্যার রায় শুনে আমার সে রকমই মনে হয়েছিল। নুবানের কথা মনে আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, যিনি খুন হয়েছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক খুন হওয়ার পর যে রকম হইচই হয়, নুবানের ক্ষেত্রেও তা কিছুটা হয়েছিল। এরপর সেই হত্যার বিচার নিয়ে আর কাউকে কখনো সরব হতে দেখিনি—না রাষ্ট্র, না প্রতিষ্ঠান, না পরিবার। কেন তারা সরব হয়নি, সেটা এখনো বিস্ময়ের।
নুবান আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। কৃতী বলছি এ কারণে যে, ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স পরীক্ষায় অর্থনীতিতে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছিলেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাঁকে শিক্ষকতায় নিয়ে আসে। নুবানের বাবা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক। দুই মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সুখের সংসার।
বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পর কাজী সোহানা নাজনীনকে বিয়ে করেন নুবান। স্ত্রীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডের একটি বাসায়। ১৯৯৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সেই বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন আসাদ গেটে নিজের ক্যামেরা মেরামত করার উদ্দেশ্যে। আধঘণ্টার মধ্যে বাসায় ফেরার কথা বলে গিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু আর ফেরেননি।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা এলাকায় অজ্ঞাতনামা আততায়ীরা তাঁকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাতের মাধ্যমে গুরুতর আহত করে ফেলে যায়। তেজগাঁও থানার ওসি খবর পেয়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে ভর্তি করান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেই ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৪টায় তিনি মারা যান।
ঘটনার দিন মোহাম্মদপুরের বাসায় নুবানের স্ত্রী ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তাঁর মা, বোন পঞ্চগড়ে নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রাতে নুবানের বন্ধু মিল্টন একটি ভিডিও ক্যাসেট দেওয়ার জন্য সেই বাসায় যান। সেখান থেকে তেজগাঁও থানায় গিয়ে নুবানের নিখোঁজ হওয়ার খবর দিয়ে একটি জিডি করেন। যদিও ওই সময় নুবান মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
নুবান মারা যাওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা তেজগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেছিলেন। সেই মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম ছিল না।
তেজগাঁও থানা-পুলিশ সে সময় চার ছিনতাইকারীকে ধরে বলার চেষ্টা করেছিল, এটি ছিনতাইকারীদের কাজ। যদিও নুবানের কাছে ছিনতাই হওয়ার মতো কিছু ছিল না। এরপর মামলা যায় ডিবিতে। সেখানে লোকদেখানো কিছু তদন্ত এবং আরও পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়। পত্রপত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হলে মামলা যায় সিআইডিতে। আবদুল কাহার আকন্দ প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি তদন্তের শুরুতেই শরীয়তপুরের জাজিরার কে এম আলমগীর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আরও তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা সেই মামলা তদন্ত করেন।
তখন নুবানের খুনের কারণ হিসেবে দুটি বিষয় সামনে এসেছিল। প্রথমে বলা হয়, এই খুনে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন ও তাঁর বন্ধু মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনের হাত আছে। নুবানের সঙ্গে বিয়ের আগে থেকেই সোহানা-মিল্টনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নুবানকে খুন করে পথের কাঁটা সরান তাঁরা। নুবানের শাশুড়ি মেহেরুন্নেসা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকারও করেছিলেন।
আর দ্বিতীয়টি ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি ও ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে নুবানের অবস্থান নেওয়া। সে সময় দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং বিভাগের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। এতে একজন শিক্ষক চাকরি হারান, আরেকজনকে তদন্তের পর বরখাস্ত করা হয়। এ ঘটনায় কিছু ছাত্র ও কয়েকজন শিক্ষক নুবানের ওপর রুষ্ট হন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি’ দিয়েছিলেন নুবান। পুলিশ ও চিকিৎসকের উপস্থিতিতে বলেছিলেন, ‘মোরশেদ সব জানে। ঈর্ষা।’ তাঁর এই জবানবন্দির ব্যক্তিটি হলেন নুবানের সহকর্মী প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কাউকেই কখনো আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাসের মাথায় ১৯৯৬ সালে এ কে এম মাহবুব মোরশেদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। নুবান মারা যাওয়ার পর মোহাইমিনুর রহমান মিল্টনকে বিয়ে করে বিদেশে চলে যান নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীন।
এ মামলা তদন্ত করে ২০০২ সালের ১ জুলাই অভিযোগপত্র দেন সিআইডির সহকারী সুপার মো. আমিনুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে নুবানের স্ত্রী কাজী সোহানা নাজনীনের সম্পর্ক। সোহানা ও তাঁর বর্তমান স্বামী মোহাইমিনুর রহমান পরস্পর যোগসাজশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা প্রভাষক এ কে এম মাহবুব মোরশেদ জানতেন। ইন্টারপোলের মাধ্যমে মোরশেদের এই বক্তব্য আনা হয়। মোরশেদ বলেন, খুন হওয়ার আগে নুবান আহমেদ বলেছিলেন, কিছু ছাত্র তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন।
নুবান আহমেদ খুন হওয়ার পর তাঁর শ্বশুর কাজী শামসুল হুদা এজাহারে ও সাক্ষ্যে বলেন, নুবানের অবস্থানের কারণে ১৫ জন ছাত্রের পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
মজার ব্যাপার হলো, এই অভিযোগপত্র দেওয়ার কিছুদিন পর ডিভি লটারি পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামও যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
এরপর বিচার শুরু হয়। মহানগর দায়রা জজ আদালতের মূল বিচারক, ভারপ্রাপ্ত বিচারকসহ অন্তত ১২ জন বিচারক এই মামলার বিচারের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। সবাই মামলার তদন্তে অবহেলা আর সাক্ষ্য-প্রমাণের ঘাটতি দেখে বিস্মিত হন। অবশেষে ২০১৮ সালের ৫ জুন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আল মামুন এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। আদালত বলেন, এ হত্যার তদন্ত ছিল ‘অপ্রতুল’, প্রসিকিউশন সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। নুবানের মা, বোনসহ মামলার সাক্ষীদের কেউই সরাসরি হত্যার অভিযোগে কাউকে অভিযুক্ত করেননি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও আরও সাক্ষী হাজির করতে ব্যর্থ হন।
নুবানের শ্বশুর এবং তাঁর শাশুড়ি মেহেরুন্নেসাও মামলায় সাক্ষী ছিলেন। কিন্তু তাঁদের জবানবন্দিতে তাঁরা নিজের মেয়ে বা অন্য দুই প্রধান অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য দেননি।
আদালত বলেছেন, ‘অপরাধীদের হাতে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু এ ঘৃণ্য অপরাধের বিচার না পাওয়াটাও দুর্ভাগ্যজনক।’
‘আষাঢ়ে নয়’ লেখার আগে কাল ফোন করেছিলাম নুবানের বড় বোন আসফিয়া সাবিনাকে। কথা বলতে গিয়ে তাঁর কণ্ঠ ধরে এসেছে। বললেন, ‘কী হবে আর এ নিয়ে কথা বলে!’
কথা শেষ করে মনটা খারাপ হয়ে গেল। নুবান খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে যাদের নাম এসেছিল, তারা সব উধাও। শুধু কোথাও কেউ নেই—না অভিযুক্ত, না আপনজন, না ন্যায়বিচার। এমনকি কোনো কথাও নেই।
আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা
০২ এপ্রিল ২০২২
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা
০২ এপ্রিল ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা
০২ এপ্রিল ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৯ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

যেসব হত্যাকাণ্ড মানুষের বিবেককে নাড়া দেয়, তার রেশ সহজে মিলিয়ে যায় না। মানুষ হয়তো সব সময় প্রতিবাদে সরব থাকতে পারে না, কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, সবকিছু ভুলে যায়। আসলে ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষা
০২ এপ্রিল ২০২২
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
৫ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৮ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৮ দিন আগে