কামরুল হাসান
সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে পাঁচজনের সামনে কিছু কথা বলতে গেলেই আমি প্রায় দিশেহারা হয়ে যাই। সমস্যা হয়, কোনটা ছাড়ি, কোনটা বলি। প্রবাদে আছে, বাঁশবনে ডোম কানা। যে বাঁশই চোখে পড়ে, আহাম্মক ডোম সেটাই কাটতে চায়। আকছার যা হয়, দিন শেষে একটা নিরেস বাঁশ নিয়ে বাড়ি ফেরে ডোম। আমার অবস্থাও তা-ই। যা কিছু বলি না কেন, কেউ না কেউ ঠিকই সেটা জানেন। মানুষের না জানা কোনো কিছুই নেই যেন আর। তারপরও আজ যে গল্প বলব বলে মনস্থির করেছি, সেটাই বলি।
এরশাদ সরকারের শেষের দিকে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কারণে অনেকের হাতে অস্ত্র চলে আসে। সেসব অস্ত্র যে অবৈধ পন্থায় এল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এসব অস্ত্র কীভাবে আমজনতার হাতে এল, কারা দিল—সে কথা তোলাই থাক। তবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে এসব অস্ত্রের যে ব্যবহার হয়নি, তা কিন্তু নয়। এরপর এরশাদ ক্ষমতা হারালেন, এখন অস্ত্রগুলোর কী হবে? হাত বদল হয়ে সেই অস্ত্র চলে গেল ঢাকার উঠতি সন্ত্রাসীদের কাছে। এরশাদ পতনের পরের ১০ বছর, অর্থাৎ ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই ঢাকার কোনো না কোনো স্থানে সেই অস্ত্রের ব্যবহার হতে লাগল। রাজধানীতে এমন খুব কম রাতই ছিল, যে রাতে কোথাও না কোথাও গোলাগুলি হতো না।
তবে ঢাকার সব জায়গায় যে গোলাগুলি হতো, তা কিন্তু নয়। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু স্থান ছিল। যেগুলোর একটি ছিল তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এবং বেগুনবাড়ি বস্তি এলাকা। মূলত তেজগাঁও শিল্প এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েই প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী দলের ভেতরে এই এলাকায় গোলাগুলি হতো।
শিল্প এলাকার নিয়ন্ত্রণে তখন দুটি পক্ষ। এক পক্ষে ছিলেন ভয়ংকর সন্ত্রাসী মো. আলাউদ্দিন। তাঁর ভাই রাকিব ছিলেন সেকেন্ড ইন কমান্ড। রাকিবের সঙ্গে ছিলেন আল আমিন, জোনা, রফিক, কালা মাসুদ, রহমান, মিরাজ, খালেক ও নিজাম। পরে অভ্যন্তরীণ বিরোধে নিজাম খুন হন। বিপরীত পক্ষে ছিলেন নীরব ও তাঁর দলবল। নীরব পরে মহাখালী আমতলী বস্তিতে গিয়ে আস্তানা গাড়েন।
তেজগাঁও এলাকায় আলাউদ্দিনের শক্ত অবস্থানের কারণ ছিল, তাঁর বাবা তারা মিয়া তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চাকরি করতেন। এই সুবাদে তেজগাঁওয়ের ভেতরেই আলাউদ্দিনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। এলাকার সবকিছু তাঁর নখদর্পণে। আলাউদ্দিনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের শুরু হয়েছিল খাদ্যগুদামের মালামাল চুরি দিয়ে। কয়েকবার ধরাও পড়েছিলেন। কোনো একটি চুরির ঘটনায় তিন বছর জেল খেটে বেরিয়ে আসার পর পাকাপোক্ত সন্ত্রাসী বনে যান আলাউদ্দিন। এরপর শুরু করেন চাঁদাবাজি। শিল্প এলাকায় তখন নতুন কারখানা অথবা ভবন করতে গেলেই আলাউদ্দিনকে চাঁদা দিতে হতো। তখনকার তেজগাঁও এলাকার এমপি এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন তাঁর নেপথ্যের শক্তি। আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে খুনসহ ১০টি মামলা ছিল বিভিন্ন থানায়।
বিএনপি সরকারের আমলে ২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা করে কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, আলাউদ্দিনের নামও ছিল সেই তালিকায়। তাঁকে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে পুলিশ কখনো তাঁকে ধরতে যায়নি।
এত দিন সবকিছু ভালোই চলছিল, সমস্যা দেখা দিল ২০০২ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে। বেশির ভাগ সন্ত্রাসীর নির্বাচিত হয়ে জাতে ওঠার একটি চেষ্টা থাকে। আলাউদ্দিনও সেই পথে পা বাড়ালেন। তিনি তেজগাঁও এলাকা থেকে কমিশনার পদে (কাউন্সিলর) দাঁড়িয়ে গেলেন। রাতারাতি তেজগাঁওয়ের সব রাস্তা তাঁর পোস্টারে ছেয়ে গেল। সে সময় চারদলীয় জোটের কমিশনার প্রার্থী ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর কাছে হেরে গেলেন আলাউদ্দিন। নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর আলাউদ্দিন ক্ষুব্ধ হন। জাহাঙ্গীরকে গুলি করে আহত করেন তিনি। সেই নির্বাচনে আলাউদ্দিনের অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। ক্ষতি পোষাতে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একের পর এক ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতে থাকেন। এখন যেখানে হাতিরঝিলের টলটলে জলরাশি, তখন সেই ঝিলে ছিল সারি সারি বাঁশ দিয়ে তৈরি ঘর। নিম্ন আয়ের মানুষ এসব ঘরে থাকতেন। আলাউদ্দিন এসব ঘর থেকে চাঁদা আদায় করতেন। প্রতিটি ঘরের জন্য চাঁদার অঙ্ক ছিল নির্ধারিত।
চাঁদাবাজি নিয়ে আলাউদ্দিনের সঙ্গে প্রথম বিরোধ বাধে জনতা টিউবসের মালিক নিজাম উদ্দিন ভুইয়ার সঙ্গে। আলাউদ্দিনকে চাঁদা দেওয়া ঠেকাতে নিজাম উদ্দিনসহ এলাকার লোকজন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেছিলেন। নিজাম উদ্দিন থাকতেন তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোডে সেভয় আইসক্রিমের পাশের গলিতে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর থেকে প্রায়ই নিজাম উদ্দিনকে ফোন করে হুমকি দিতেন আলাউদ্দিন। এরপর ২০০২ সালের ১৭ আগস্ট নিজাম উদ্দিনের বাসার দরজার সামনে তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন।
খুন করার পর আলাউদ্দিনের লোকজন তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোড থেকে বেরিয়ে কলোনি বাজারের দিকে ঢুকে পড়েন। তেজগাঁও সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনে তখন পুলিশের একটি টহল দল ছিল। পুলিশ তাঁদের দেখেই ধাওয়া করলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে দিনেশ নামের পুলিশের এক দারোগা এবং সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা হারুন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীর ভেতরে এভাবে তিন খুনের পর চারদিকে হইচই পড়ে যায়। সন্ধ্যার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড শুরু করে। আলাউদ্দিন ও দলবলকে পুলিশ পায় কুনিপাড়া বস্তিতে। কিন্তু পুলিশকে দেখেই আলাউদ্দিন তাঁর ভাই রাকিব এবং সহযোগী আক্কাসকে নিয়ে ঝিলের পানিতে লাফ দেন। পুলিশ পানিতে গুলি ছোড়ে, তাতে দুজন আহত হন।
কিন্তু পালিয়ে আর যাবেন কোথায়? হাতিরঝিল সাঁতরে তাঁরা উঠে পড়েন রামপুরার মহানগর প্রজেক্টের কাছে একটি স্থানে। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই পুলিশ স্থানীয় লোকজনকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। আহত অবস্থায় তাঁদের তীরে উঠতে দেখেই লোকজন লাঠি-বাঁশ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঝিলের কিনারেই আলাউদ্দিন, রাকিব ও আক্কাসকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। এভাবে শেষ হয়ে যায় এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর জীবন-আখ্যান।
এ ঘটনার পর দেশের সংবাদপত্রগুলোতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন এবং তাঁর দুই সহযোগীর গণপিটুনিতে নিহত হওয়ার খবর বড় করে ছাপা হয়। পরদিন ফলোআপ করতে এসে শুনতে পেলাম, আমরা সবাই যাঁকে গণপিটুনি বলেছি, সেটা আসলে কোনো গণপিটুনি ছিল না। এটা ছিল আজকের যুগের ‘ক্রসফায়ার’-এর একটি পুরোনো ভার্সন। তবে ক্রসফায়ারের সঙ্গে তার পার্থক্য হলো, ‘কাজটি’ আমজনতাই করেছিল।
সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে পাঁচজনের সামনে কিছু কথা বলতে গেলেই আমি প্রায় দিশেহারা হয়ে যাই। সমস্যা হয়, কোনটা ছাড়ি, কোনটা বলি। প্রবাদে আছে, বাঁশবনে ডোম কানা। যে বাঁশই চোখে পড়ে, আহাম্মক ডোম সেটাই কাটতে চায়। আকছার যা হয়, দিন শেষে একটা নিরেস বাঁশ নিয়ে বাড়ি ফেরে ডোম। আমার অবস্থাও তা-ই। যা কিছু বলি না কেন, কেউ না কেউ ঠিকই সেটা জানেন। মানুষের না জানা কোনো কিছুই নেই যেন আর। তারপরও আজ যে গল্প বলব বলে মনস্থির করেছি, সেটাই বলি।
এরশাদ সরকারের শেষের দিকে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কারণে অনেকের হাতে অস্ত্র চলে আসে। সেসব অস্ত্র যে অবৈধ পন্থায় এল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এসব অস্ত্র কীভাবে আমজনতার হাতে এল, কারা দিল—সে কথা তোলাই থাক। তবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে এসব অস্ত্রের যে ব্যবহার হয়নি, তা কিন্তু নয়। এরপর এরশাদ ক্ষমতা হারালেন, এখন অস্ত্রগুলোর কী হবে? হাত বদল হয়ে সেই অস্ত্র চলে গেল ঢাকার উঠতি সন্ত্রাসীদের কাছে। এরশাদ পতনের পরের ১০ বছর, অর্থাৎ ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই ঢাকার কোনো না কোনো স্থানে সেই অস্ত্রের ব্যবহার হতে লাগল। রাজধানীতে এমন খুব কম রাতই ছিল, যে রাতে কোথাও না কোথাও গোলাগুলি হতো না।
তবে ঢাকার সব জায়গায় যে গোলাগুলি হতো, তা কিন্তু নয়। এর জন্য নির্দিষ্ট কিছু স্থান ছিল। যেগুলোর একটি ছিল তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড এবং বেগুনবাড়ি বস্তি এলাকা। মূলত তেজগাঁও শিল্প এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েই প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী দলের ভেতরে এই এলাকায় গোলাগুলি হতো।
শিল্প এলাকার নিয়ন্ত্রণে তখন দুটি পক্ষ। এক পক্ষে ছিলেন ভয়ংকর সন্ত্রাসী মো. আলাউদ্দিন। তাঁর ভাই রাকিব ছিলেন সেকেন্ড ইন কমান্ড। রাকিবের সঙ্গে ছিলেন আল আমিন, জোনা, রফিক, কালা মাসুদ, রহমান, মিরাজ, খালেক ও নিজাম। পরে অভ্যন্তরীণ বিরোধে নিজাম খুন হন। বিপরীত পক্ষে ছিলেন নীরব ও তাঁর দলবল। নীরব পরে মহাখালী আমতলী বস্তিতে গিয়ে আস্তানা গাড়েন।
তেজগাঁও এলাকায় আলাউদ্দিনের শক্ত অবস্থানের কারণ ছিল, তাঁর বাবা তারা মিয়া তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চাকরি করতেন। এই সুবাদে তেজগাঁওয়ের ভেতরেই আলাউদ্দিনের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। এলাকার সবকিছু তাঁর নখদর্পণে। আলাউদ্দিনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের শুরু হয়েছিল খাদ্যগুদামের মালামাল চুরি দিয়ে। কয়েকবার ধরাও পড়েছিলেন। কোনো একটি চুরির ঘটনায় তিন বছর জেল খেটে বেরিয়ে আসার পর পাকাপোক্ত সন্ত্রাসী বনে যান আলাউদ্দিন। এরপর শুরু করেন চাঁদাবাজি। শিল্প এলাকায় তখন নতুন কারখানা অথবা ভবন করতে গেলেই আলাউদ্দিনকে চাঁদা দিতে হতো। তখনকার তেজগাঁও এলাকার এমপি এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন তাঁর নেপথ্যের শক্তি। আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে খুনসহ ১০টি মামলা ছিল বিভিন্ন থানায়।
বিএনপি সরকারের আমলে ২০০২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা করে কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, আলাউদ্দিনের নামও ছিল সেই তালিকায়। তাঁকে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে পুলিশ কখনো তাঁকে ধরতে যায়নি।
এত দিন সবকিছু ভালোই চলছিল, সমস্যা দেখা দিল ২০০২ সালের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে। বেশির ভাগ সন্ত্রাসীর নির্বাচিত হয়ে জাতে ওঠার একটি চেষ্টা থাকে। আলাউদ্দিনও সেই পথে পা বাড়ালেন। তিনি তেজগাঁও এলাকা থেকে কমিশনার পদে (কাউন্সিলর) দাঁড়িয়ে গেলেন। রাতারাতি তেজগাঁওয়ের সব রাস্তা তাঁর পোস্টারে ছেয়ে গেল। সে সময় চারদলীয় জোটের কমিশনার প্রার্থী ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর কাছে হেরে গেলেন আলাউদ্দিন। নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর আলাউদ্দিন ক্ষুব্ধ হন। জাহাঙ্গীরকে গুলি করে আহত করেন তিনি। সেই নির্বাচনে আলাউদ্দিনের অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। ক্ষতি পোষাতে তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। একের পর এক ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করতে থাকেন। এখন যেখানে হাতিরঝিলের টলটলে জলরাশি, তখন সেই ঝিলে ছিল সারি সারি বাঁশ দিয়ে তৈরি ঘর। নিম্ন আয়ের মানুষ এসব ঘরে থাকতেন। আলাউদ্দিন এসব ঘর থেকে চাঁদা আদায় করতেন। প্রতিটি ঘরের জন্য চাঁদার অঙ্ক ছিল নির্ধারিত।
চাঁদাবাজি নিয়ে আলাউদ্দিনের সঙ্গে প্রথম বিরোধ বাধে জনতা টিউবসের মালিক নিজাম উদ্দিন ভুইয়ার সঙ্গে। আলাউদ্দিনকে চাঁদা দেওয়া ঠেকাতে নিজাম উদ্দিনসহ এলাকার লোকজন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করেছিলেন। নিজাম উদ্দিন থাকতেন তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোডে সেভয় আইসক্রিমের পাশের গলিতে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর থেকে প্রায়ই নিজাম উদ্দিনকে ফোন করে হুমকি দিতেন আলাউদ্দিন। এরপর ২০০২ সালের ১৭ আগস্ট নিজাম উদ্দিনের বাসার দরজার সামনে তাঁকে গুলি করে হত্যা করেন।
খুন করার পর আলাউদ্দিনের লোকজন তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোড থেকে বেরিয়ে কলোনি বাজারের দিকে ঢুকে পড়েন। তেজগাঁও সাবরেজিস্ট্রি অফিসের সামনে তখন পুলিশের একটি টহল দল ছিল। পুলিশ তাঁদের দেখেই ধাওয়া করলে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে দিনেশ নামের পুলিশের এক দারোগা এবং সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা হারুন নামের এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীর ভেতরে এভাবে তিন খুনের পর চারদিকে হইচই পড়ে যায়। সন্ধ্যার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে ব্লক রেইড শুরু করে। আলাউদ্দিন ও দলবলকে পুলিশ পায় কুনিপাড়া বস্তিতে। কিন্তু পুলিশকে দেখেই আলাউদ্দিন তাঁর ভাই রাকিব এবং সহযোগী আক্কাসকে নিয়ে ঝিলের পানিতে লাফ দেন। পুলিশ পানিতে গুলি ছোড়ে, তাতে দুজন আহত হন।
কিন্তু পালিয়ে আর যাবেন কোথায়? হাতিরঝিল সাঁতরে তাঁরা উঠে পড়েন রামপুরার মহানগর প্রজেক্টের কাছে একটি স্থানে। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই পুলিশ স্থানীয় লোকজনকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। আহত অবস্থায় তাঁদের তীরে উঠতে দেখেই লোকজন লাঠি-বাঁশ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঝিলের কিনারেই আলাউদ্দিন, রাকিব ও আক্কাসকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। এভাবে শেষ হয়ে যায় এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর জীবন-আখ্যান।
এ ঘটনার পর দেশের সংবাদপত্রগুলোতে শীর্ষ সন্ত্রাসী আলাউদ্দিন এবং তাঁর দুই সহযোগীর গণপিটুনিতে নিহত হওয়ার খবর বড় করে ছাপা হয়। পরদিন ফলোআপ করতে এসে শুনতে পেলাম, আমরা সবাই যাঁকে গণপিটুনি বলেছি, সেটা আসলে কোনো গণপিটুনি ছিল না। এটা ছিল আজকের যুগের ‘ক্রসফায়ার’-এর একটি পুরোনো ভার্সন। তবে ক্রসফায়ারের সঙ্গে তার পার্থক্য হলো, ‘কাজটি’ আমজনতাই করেছিল।
রাজধানীর মিরপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইমরান খান সাকিব ওরফে শাকিল (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা-পুলিশ। ডিএমপি জানায়, শাকিল পেশাদার ছিনতাইকারী। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা ১৫ মিনিটের দিকে গাজীপুরের পুবাইল থানার কুদাব পশ্চিমপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়...
১ দিন আগেরাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলায় ‘আপন কফি হাউসে’ তরুণীকে মারধরের ঘটনায় কফি হাউসের ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান এ আদেশ দেন।
৪ দিন আগেক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ল অমানবিক দৃশ্য— মেয়েটিকে বেশ কিছুক্ষণ ধমকানো হলো। এরপর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। সে যেন মানুষ নয়, পথের ধুলো। এর মধ্যেই এক কর্মচারী হঠাৎ মোটা লাঠি নিয়ে আঘাত করে তাঁর ছোট্ট পায়ে। শিশুটি কাতরাতে কাতরাতে পাশের দুটি গাড়ির ফাঁকে আশ্রয় নেয়। কিন্তু নির্যাতন থামে না, সেই লাঠি আব
৫ দিন আগেটিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘ধর্ষণ’ শব্দ ব্যবহার না করার অনুরোধের মাধ্যমে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বাস্তবে ধর্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন। তিনি এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অপরাধকে লঘু করার কোনো...
১৬ মার্চ ২০২৫