Ajker Patrika

ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির জবাবে চীনে হলিউড সিনেমা আমদানিতে কড়াকড়ি

অনলাইন ডেস্ক
প্রতিবছর ১০টি করে মার্কিন সিনেমা আমদানি করে চীন। ছবি: এএফপি
প্রতিবছর ১০টি করে মার্কিন সিনেমা আমদানি করে চীন। ছবি: এএফপি

চীনে হলিউড সিনেমার আমদানিতে কড়া বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএফএ)। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তাৎক্ষণিকভাবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে চীন।

প্রায় তিন দশক ধরে প্রতিবছর ১০টি করে মার্কিন সিনেমা আমদানি করে চীন। কিন্তু এনএফএ আজ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ‘আমরা বাজারের নিয়ম অনুসরণ করব, দর্শকদের পছন্দকে প্রাধান্য দেব। তাই যুক্তরাষ্ট্রের ছবি আমদানির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে।’

তবে চীনের এমন পদক্ষেপের প্রভাব খুব একটা বড় না হলেও এর প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে। হলিউড সিনেমাবিষয়ক বিশ্লেষক ও ‘Feeding the Dragon’ বইয়ের লেখক ক্রিস ফেন্টন বলেন, ‘যদিও চীনের এমন পদক্ষেপে তেমন ঝুঁকি নেই। কিন্তু চীন এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বার্তা দিতে চাচ্ছে।’

চীনের বিশাল বাজার একসময় হলিউডের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশীয় চলচ্চিত্র বেশি সাফল্য পাচ্ছে। বর্তমানে চীনের বক্স অফিসে মার্কিন সিনেমার অংশ মাত্র ৫ শতাংশ। এর ওপর ৫০ শতাংশ কর আরোপ করায় মার্কিন স্টুডিওগুলো আসল আয়ে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ফেন্টন বলেন, ‘চীনে হলিউডের সিনেমা থেকে মার্কিন স্টুডিওগুলো কেবল ২৫ শতাংশ আয় পায়, যা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। ফলে এই পদক্ষেপে বেইজিং লাভবান হবে এবং ওয়াশিংটনও তা বুঝতে পারবে।’

ট্রাম্পের শুল্ক ইস্যু সামনে আসার পর দেশটির দুই প্রভাবশালী ব্লগার মার্কিন সিনেমা নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও অনেক প্রদর্শক একে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, কারণ মার্ভেলের নতুন সিনেমা ‘Thunderbolts’ চীনে ৩০ এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে।

তবে এনএফএর এই বিধিনিষেধ এমন সময়ে এল, যখন সামনের গ্রীষ্মে চীনে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘Mission Impossible–The Final Reckoning’, নতুন ‘Superman’ এবং মার্ভেলের ‘Fantastic Four’-এর নতুন সংস্করণ।

এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্সের প্রধান বিশ্লেষক সেথ শেফার মনে করেন, এই পদক্ষেপে মার্কিন সিনেমা খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চীনে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন সিনেমার সংখ্যা কমে এসেছে। যেগুলো মুক্তি পাচ্ছে, সেগুলোর বৈশ্বিক আয়ের ১০ শতাংশের কম আসে চীন থেকে।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৪ সাল থেকে চীন বছরে ১০টি মার্কিন সিনেমা আমদানি করে আসছিল। টাইটানিক ও অ্যাভাটারের মতো সিনেমাগুলো দেশটিতে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। তবে ২০২০ সাল থেকে চীনে দেশীয় ছবি বাজারে আধিপত্য বিস্তার করছে। বছরে প্রায় ৮০ শতাংশ আয়ের উৎস দেশীয় সিনেমা।

চীনের সর্বকালের সেরা ২০টি সিনেমার তালিকায় শুধু একটি বিদেশি সিনেমা আছে—‘Avengers: Endgame’, যার আয় ৪২৫ কোটি ইউয়ান (৫৭৯.৮৩ মিলিয়ন ডলার)। বাকি ১৯টি দেশীয় প্রযোজনার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত