Ajker Patrika

নির্বাচনের পরদিনই পুঁজিবাজার চাঙা

আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
নির্বাচনের পরদিনই পুঁজিবাজার চাঙা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিনই উত্থান দেখা গেল পুঁজিবাজারে। গতকাল প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ। এমনকি এক বছরেও সূচকের এমন উত্থান খুব কমই হয়েছে। এ ছাড়া ডিএসইর স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর প্ল্যাটফর্ম বা এসএমই মার্কেট এবং অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) উত্থান হয়েছে।

পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার শঙ্কা ছিল। কিন্তু বড় ধরনের কোনো সংঘাত ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের পরে বিরোধী শিবির থেকে সরকারবিরোধী কঠোর কর্মসূচির ঘোষণাও আসেনি। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে শেখ হাসিনাকে, যা নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিচ্ছে। এসব বিষয় বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করেছে; যার প্রতিফলন ঘটেছে পুঁজিবাজারে।

এ বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, যেহেতু কোনো রকম সংঘাত ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে; সেটাই বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়িয়েছে। তাঁরা মনে করছেন, নতুন সরকার এবার পুঁজিবাজারের দিকে নজর দেবে। নির্বাচনের পরে স্বাভাবিকভাবেই এমনটা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন বলেন, নির্বাচনের পরে সার্বিক পরিবেশ  ইতিবাচক রয়েছে। সেই বিষয়ই কাজ করেছে। আর তা ছাড়া সবাই তো কাজ করছে বাজার ভালো করার জন্য।

বিএমবিএর সাবেক সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, নির্বাচন হবে, নাকি হবে না—এসব বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে শঙ্কা ছিল। তারপর ভোট হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও কিছুটা চলে এসেছে। আগে যেসব হম্বিতম্বি শোনা গেছে, সেসব এখন নেই, অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এসব কারণেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

এর আগে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ সময় নেতিবাচক ধারায় ছিল পুঁজিবাজার। নতুন বছরের শুরুতেও এ ধারা অব্যাহত ছিল। দরপতনের সঙ্গে লেনদেন আশঙ্কাজনক হারে কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে গিয়েছিল। সেখান থেকে গতকাল দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪১ কোটি ১৩ টাকা, যা আগের কার্যদিবস বৃহস্পতিবারে ছিল ৩৪৪ কোটি ৪৫ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৯৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ব্রোকারেজ হাউসগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকালের লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ কিছুটা বেড়েছে। আর সূচকের উত্থানে ব্যাংক খাতের কিছু শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির বড় প্রভাব রয়েছে। সূচকের বৃদ্ধিতে বেশি প্রভাব রাখা ১০টি কোম্পানির ৬টিই ব্যাংক। এগুলো হলো পূবালী, রূপালী, মিডল্যান্ড, আল-আরাফাহ ইসলামী, প্রিমিয়ার ও উত্তরা ব্যাংক। সূচকে এই ৬টি ব্যাংকের অবদান ছিল ৯ দশমিক ৬১ পয়েন্ট। এ ছাড়া ভালো মৌলভিত্তির কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারের দামও বাড়তে দেখা গেছে।

তবে পুঁজিবাজারের এই উত্থান কতটা টেকসই হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটেনি। এ বিষয়ে ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের পরে আরও কিছুদিন গেলে আসল চিত্রটা দেখতে পাওয়া যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত