এস আলমের কারসাজি
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা। ৫ লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে সম্প্রতি ওই শাখায় গিয়েছিলেন গ্রাহক তারেকুজ্জামান। তিনি বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংক খারাপের দিকে যাচ্ছে জানতে পেরে ৫ লাখ টাকার চেক নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিন দিন ধরে ঘোরাচ্ছে তারা। টাকা পাবেন কি না বা কবে পাবেন, তা-ও জানতে পারছেন না।
একই চিত্র দেখা গেছে ব্যাংকটির মতিঝিল, গুলশান, বাড্ডা, বনানী শাখায়ও। সব কটি শাখায় প্রতিদিন টাকা তোলার জন্য জটলা পাকাচ্ছেন গ্রাহক। কিন্তু চেকে টাকার পরিমাণ এক লাখের বেশি হলে টাকা দিতে গড়িমসি করছে ব্যাংক। তবে বড় চেকের বিপরীতে ২০-৩০ হাজার টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু শাখা। কোথাও কোথাও সেটাও মিলছে না। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ বাড়ছে।
বেসরকারি ইউনিয়ন ব্যাংকের এই অবস্থা হয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলমের খপ্পরে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২২ সালের পরিদর্শন প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউনিয়ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এস আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩০০ কাগুজে কোম্পানিকে ১৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা দিয়েছে, যা মোট ঋণের ৭৯ শতাংশ। ওই সময় ব্যাংকটির মোট ঋণ ছিল ২১ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। যেসব কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশের ট্রেড লাইসেন্স পর্যন্ত ছিল না। এসব ঋণ খেলাপি হলেও কর্তৃপক্ষ সামান্য এককালীন নিয়ে নিয়মিত দেখিয়েছে। এরপর গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। যদিও ব্যাংকটির সরবরাহ করা একটি নথিতে খেলাপি দেখানো হয়েছে ৪২ শতাংশ। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি প্রতিবেদনে আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণের পরিমাণ ৭৭২ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংক খাতের করুণ অবস্থা সৃষ্টি করে গত সরকার।
বিশেষ করে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো শেষ করে একটি বড় গ্রুপ। এখন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশসহ কয়েকটি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে না। এগুলো ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা উচিত। তা না হলে দেউলিয়া হয়ে যাবে ছোট দুর্বল ব্যাংকগুলো।
ধুঁকতে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংক অনেকটা ধসে পড়ে সরকার পরিবর্তনের পর। গত বুধবার ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এস আলম গ্রুপের ব্যাংক লুটের সহযোগিতা করত কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের পর নতুন গভর্নর সব বন্ধ করেছেন। এতে ব্যাংকটির চলতি হিসাব নেতিবাচক হওয়ায় অন্য ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে পারছে না। আর সিএলআর, এসএলআর ঘাটতির জন্য প্রতিদিন ব্যাংকটিকে জরিমানা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবার নতুন বিনিয়োগেও নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে ব্যাংকটির ওপর।
এদিকে ব্যাংকটির ঋণ আদায়ে চলছে স্থবিরতা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকার বদলের পরেই এস আলম গ্রুপের লোকজন ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ঋণ আদায় হয়েছে মাত্র ৬০ কোটি টাকার মতো। আদায় না বাড়লে সামনে ব্যাংকের চলমান খরচ এবং বেতন দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। ব্যাংকটির মানবসম্পদ সূত্র জানায়, ২০১২ সালে যাত্রা করা ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট লোকবল প্রায় ২ হাজার। তাঁদের মধ্যে এর আলমের পরিচয়ে কয়েক শ নিয়োগ পায়। ব্যাংকের আদায় পরিস্থিতি যা, তাতে এই কর্মকর্তাদের বড় অংশই সামনের দিনে নিয়মিত বেতন পাবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, ইউনিয়নসহ কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজরদারি করছে। গ্যারান্টির বিনিময়ে সহযোগিতা দিচ্ছে। এসব ব্যাংক তো রাতারাতি ঠিক হবে না। ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের পিআরডির প্রধান এবং মুখপাত্র এ কে এম জহির উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার বদলের পরে ব্যাংকটির পর্ষদ পুনর্গঠন, এমডির পলায়নসহ বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। আদায় কম হলেও হচ্ছে। নিয়মিত বেতন দেওয়াসহ সব কাজ চলমান রয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে। সবাই আন্তরিক। তবে সময় লাগবে।
ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা। ৫ লাখ টাকার একটি চেক নিয়ে সম্প্রতি ওই শাখায় গিয়েছিলেন গ্রাহক তারেকুজ্জামান। তিনি বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংক খারাপের দিকে যাচ্ছে জানতে পেরে ৫ লাখ টাকার চেক নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিন দিন ধরে ঘোরাচ্ছে তারা। টাকা পাবেন কি না বা কবে পাবেন, তা-ও জানতে পারছেন না।
একই চিত্র দেখা গেছে ব্যাংকটির মতিঝিল, গুলশান, বাড্ডা, বনানী শাখায়ও। সব কটি শাখায় প্রতিদিন টাকা তোলার জন্য জটলা পাকাচ্ছেন গ্রাহক। কিন্তু চেকে টাকার পরিমাণ এক লাখের বেশি হলে টাকা দিতে গড়িমসি করছে ব্যাংক। তবে বড় চেকের বিপরীতে ২০-৩০ হাজার টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছে কিছু শাখা। কোথাও কোথাও সেটাও মিলছে না। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ বাড়ছে।
বেসরকারি ইউনিয়ন ব্যাংকের এই অবস্থা হয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলমের খপ্পরে পড়ে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০২২ সালের পরিদর্শন প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ইউনিয়ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এস আলমের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩০০ কাগুজে কোম্পানিকে ১৮ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা দিয়েছে, যা মোট ঋণের ৭৯ শতাংশ। ওই সময় ব্যাংকটির মোট ঋণ ছিল ২১ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। যেসব কোম্পানিকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর অধিকাংশের ট্রেড লাইসেন্স পর্যন্ত ছিল না। এসব ঋণ খেলাপি হলেও কর্তৃপক্ষ সামান্য এককালীন নিয়ে নিয়মিত দেখিয়েছে। এরপর গত জুন পর্যন্ত ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ১ হাজার ৪৬ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। যদিও ব্যাংকটির সরবরাহ করা একটি নথিতে খেলাপি দেখানো হয়েছে ৪২ শতাংশ। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি প্রতিবেদনে আদায় অযোগ্য মন্দ ঋণের পরিমাণ ৭৭২ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ ড. মইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংক খাতের করুণ অবস্থা সৃষ্টি করে গত সরকার।
বিশেষ করে ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো শেষ করে একটি বড় গ্রুপ। এখন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশসহ কয়েকটি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে ইউনিয়ন, গ্লোবাল ইসলামী, বাংলাদেশ কমার্স এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানো সহজ হবে না। এগুলো ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা উচিত। তা না হলে দেউলিয়া হয়ে যাবে ছোট দুর্বল ব্যাংকগুলো।
ধুঁকতে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংক অনেকটা ধসে পড়ে সরকার পরিবর্তনের পর। গত বুধবার ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এস আলম গ্রুপের ব্যাংক লুটের সহযোগিতা করত কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের পর নতুন গভর্নর সব বন্ধ করেছেন। এতে ব্যাংকটির চলতি হিসাব নেতিবাচক হওয়ায় অন্য ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন করতে পারছে না। আর সিএলআর, এসএলআর ঘাটতির জন্য প্রতিদিন ব্যাংকটিকে জরিমানা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আবার নতুন বিনিয়োগেও নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে ব্যাংকটির ওপর।
এদিকে ব্যাংকটির ঋণ আদায়ে চলছে স্থবিরতা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকার বদলের পরেই এস আলম গ্রুপের লোকজন ২০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ঋণ আদায় হয়েছে মাত্র ৬০ কোটি টাকার মতো। আদায় না বাড়লে সামনে ব্যাংকের চলমান খরচ এবং বেতন দেওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। ব্যাংকটির মানবসম্পদ সূত্র জানায়, ২০১২ সালে যাত্রা করা ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট লোকবল প্রায় ২ হাজার। তাঁদের মধ্যে এর আলমের পরিচয়ে কয়েক শ নিয়োগ পায়। ব্যাংকের আদায় পরিস্থিতি যা, তাতে এই কর্মকর্তাদের বড় অংশই সামনের দিনে নিয়মিত বেতন পাবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেন, ইউনিয়নসহ কয়েকটি ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নজরদারি করছে। গ্যারান্টির বিনিময়ে সহযোগিতা দিচ্ছে। এসব ব্যাংক তো রাতারাতি ঠিক হবে না। ঘুরে দাঁড়াতে সময় লাগবে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ব্যাংকের পিআরডির প্রধান এবং মুখপাত্র এ কে এম জহির উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকার বদলের পরে ব্যাংকটির পর্ষদ পুনর্গঠন, এমডির পলায়নসহ বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। আদায় কম হলেও হচ্ছে। নিয়মিত বেতন দেওয়াসহ সব কাজ চলমান রয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে। সবাই আন্তরিক। তবে সময় লাগবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের বলি হলো বোয়িং! চীনের একটি এয়ারলাইনসের জন্য তৈরি একটি বোয়িং জেট বিমান আজ রোববার যুক্তরাষ্ট্রে কোম্পানির উৎপাদন কেন্দ্রে ফেরত এসেছে। পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের জেরেই এমন ঘটনা ঘটল।
২ ঘণ্টা আগেদেশে গ্যাসের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে এর উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে আজ রোববার অনুষ্ঠেয় ৯ম জাতীয় পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দুটি বড় প্রকল্প অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে।
৫ ঘণ্টা আগেভারতের মধ্য দিয়ে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ হওয়ায় শুধু তৈরি পোশাক খাত নয়, সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশের কৃষিভিত্তিক রপ্তানি খাতও। বিশেষ করে ফল, সবজি ও অন্যান্য পচনশীল পণ্য রপ্তানিকারকেরা আশঙ্কা করছেন, তৈরি পোশাক এখন বিমানে রপ্তানি হওয়ায় কার্গো বিমানে চাপ অনেক বাড়বে।
৫ ঘণ্টা আগেপ্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওর অর্থ ব্যবহারে সিকিউরিটিজ আইন ভেঙেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এ ছাড়া কোম্পানির কার্যক্রম, মুনাফা ও লভ্যাংশ বিতরণ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
৫ ঘণ্টা আগে