Ajker Patrika

ডলারের দর বাজারভিত্তিক হচ্ছে না, আসছে মুদ্রানীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ৫৬
ডলারের দর বাজারভিত্তিক হচ্ছে না, আসছে মুদ্রানীতি

ঘোষণা দেওয়ার পরেও বাজারভিত্তিক হচ্ছে না ডলারের দর। মুদ্রাটির সংকট সহনীয় পর্যায়ে না আসায় এর দর বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বরং ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাড়ানো হবে নীতি সুদহারও।

আসছে মুদ্রানীতিতে এসব ঘোষণাই থাকছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সভায় খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি মুদ্রানীতি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। বৈঠক সূত্র জানায়, জিনিসপত্রের লাগামহীন দামে গত সরকারের ভেতরে অস্থিরতা ছিল। নতুন সরকারও দায়িত্ব নিয়েই মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমানো যায়, সেই বিষয়ে তৎপর। তাই মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে নীতি সুদহার বাড়ানোসহ নানা ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে। নীতি সুদহারসহ ব্যাংকঋণের সব রকম সুদ আরও বাড়িয়ে সংকোচনমুখী ধারা অব্যাহত রাখা হবে।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই হবে এবারের মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য। এ জন্য চলমান সব ধরনের নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন আসবে। মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব সংকোচনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোও চলমান থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুদ্রানীতির খসড়ায় মুদ্রানীতি কমিটিতে গভর্নরসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমীন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদহার কিছুটা বাজারভিত্তিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি নীতি সুদের হারও বাড়িয়েছে। এতে ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আসছে মুদ্রানীতিতেও সুদের হার বাড়ানোর কথা থাকবে। বাড়তি সুদের কারণে ঋণপ্রবাহ কমে গিয়ে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও সরকার কিছুটা রক্ষণশীল পথেই হাঁটতে চাইছে বলে মনে করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পোশাক রপ্তানি: বাংলাদেশ ও চীনকে পেছনে ফেলার পরিকল্পনা করছে ভারত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভারতের তৈরি পোশাক শিল্পের একটি কারখানা। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের তৈরি পোশাক শিল্পের একটি কারখানা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের বস্ত্র খাতকে বৈশ্বিক মানদণ্ডের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে দেশটি একটি বিস্তৃত ‘ব্যয় রূপরেখা’ প্রস্তুত করছে। মূল্য প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে ক্রমে অবস্থান হারাচ্ছে ভারত। এই রূপরেখায় থাকবে দুই বছরের স্বল্পমেয়াদি, পাঁচ বছরের মধ্যমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। যেখানে কাঁচামাল, নীতি-অনুবর্তিতা ও কর কাঠামোসহ উৎপাদন খরচের বিভিন্ন উপাদান বিশ্লেষণ করা হবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, ব্যয়বহুল কাঁচামালের পাশাপাশি ভারতের বস্ত্র খাতকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে উচ্চ পরিবহন ব্যয় ও জ্বালানির খরচ। এক সরকারি কর্মকর্তার ভাষায়, ‘লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ভারতের ব্যয় কাঠামোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা এবং উৎপাদন ও রপ্তানি খরচ কমানোর পাশাপাশি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অপচয় হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়া।’

ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে বস্ত্র রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায়, যা বর্তমানে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের শ্রম উৎপাদনশীলতা তুলনামূলকভাবে বেশি। তাদের শ্রম আইনও বেশি নমনীয়। তা ছাড়া, উন্নত বিশ্বের অনেক অঞ্চল থেকে তারা শুল্কমুক্ত কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারে এবং ইউরোপীয় বাজারে বাণিজ্য সুবিধাও পায়। ভিয়েতনাম আবার চীনা বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের সুবিধাও ভোগ করে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি ভারতের তুলনায় অনেক কম, যা তাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দিয়েছে।

ভারতীয় বস্ত্র শিল্প খাতের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর শ্রম উৎপাদনশীলতা ভারতের তুলনায় ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের বস্ত্র মন্ত্রণালয় তন্তু, কাপড়, প্রযুক্তিনির্ভর বস্ত্র, টেকসই উপাদান ও ডিজিটাল ট্রেসিংয়ের ক্ষেত্রে গবেষণা ও উদ্ভাবন জোরদার করার পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছে।

এ ছাড়া, বৈশ্বিক বাজারের জন্য ব্র্যান্ডিং ও ডিজাইনে উদ্ভাবন সংযুক্ত করার উপায় খুঁজতে এবং নবীন বস্ত্র-স্টার্টআপ ও ডিজাইন হাউসগুলোর বিকাশে সহায়তা করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কর্মকর্তা জানান, ‘শিল্প সংগঠন, ব্যাংক, ইনোভেশন ল্যাব, স্টার্টআপ ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ব্যাপক পরামর্শ প্রক্রিয়া চালানো হবে।’

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ভারতের বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ০.৩৯ শতাংশ বেড়েছে। ভারতের চেম্বার অব কমার্সের টেক্সটাইল বিষয়ক জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় জৈন বলেন, ‘কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার বাতিল, শ্রম আইনের সংস্কার এবং ইউরোপের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি খরচ কমাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।’

২০২৪-২৫ অর্থবছরের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বৈশ্বিকভাবে টেকসই উৎস থেকে পণ্য সংগ্রহের প্রবণতা বাড়ার কারণে আগামী বছরগুলোতে ভারতের বস্ত্রশিল্পের খরচ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সোনার দাম ২ লাখের নিচে নামল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০১
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বিশ্ববাজারের দাপটে দেশের ইতিহাসে সোনার দামে রেকর্ড পতন হয়েছে। টানা তিন দিনের মধ্যে সোনার দাম মোট ১৫ হাজার ১৮৭ টাকা কমল। যার ফলে ভালো মানের সোনার ভরি ২ লাখ টাকার নিচে নেমে এসেছে। জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক বিবৃতিতে এই বিশাল দরপতনের ঘোষণা দিয়েছে। নতুন দাম আজ বুধবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।

বাজুসের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম একলাফে ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা কমানো হয়েছে। ফলে আজ থেকে ভালো মানের এই সোনার দাম কমে দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকা।

জুয়েলার্স সমিতি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেজাবি সোনা বা পিওর গোল্ডের দাম কমে যাওয়ার কারণেই স্থানীয় বাজারে এই সমন্বয় করা হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪ হাজার ডলারের নিচে নেমে এসেছে।

গত কয়েক দিনে সোনার দাম কমানোর ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। এই নিয়ে চার দফায় সোনার দাম কমল, যেখানে মোট হ্রাসের পরিমাণ ২৩ হাজার ৫৭৩ টাকা প্রতি ভরিতে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে প্রতি ভরিতে কমানো হলো ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা, এর আগের দিন প্রতি ভরিতে কমানো হয় ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা। এ ছাড়া ২৭ অক্টোবর কমানো হয়েছিল ১ হাজার ৩৯ টাকা এবং ২৪ অক্টোবর প্রথম দফায় বড় দরপতন ঘটে, কমানো হয় ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা।

আজ বুধবার থেকে কার্যকর হওয়া নতুন দাম অনুযায়ী, বিভিন্ন মানের সোনার ভরিপ্রতি মূল্য নিম্নরূপ:

সোনার দামে বড়সড় ধস নামলেও রুপার দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নতুন মার্জিন ঋণ আইন: দুর্বল কোম্পানিতে আর ঋণ দেওয়া যাবে না

  • শিগগিরই গেজেট জারি হবে।
  • ২৫ শতাংশ কমলেই মার্জিন কল, ৫০ শতাংশ কমলেই ফোর্সড সেল হবে।
  • একক কোম্পানির ঋণ ১০ কোটি টাকার বেশি নয়।
  • ঋণ দেওয়ার আগে খাতের পারফরম্যান্স বিবেচনা বাধ্যতামূলক।
  • বিনিয়োগকারী-ঋণদাতা বাঁচানোর আইন: বিএসইসি
আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ০১
নতুন মার্জিন ঋণ আইন: দুর্বল কোম্পানিতে আর ঋণ দেওয়া যাবে না

মার্জিন ঋণের কারণে অসংখ্য বিনিয়োগকারী সম্পূর্ণ অর্থ হারিয়ে পথে বসেছেন। একইভাবে পুঁজিবাজারে পতনের ফলে ঋণে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ঋণদাতারা। এর খেসারত দিচ্ছে পুরো বাজার। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঝুঁকি কমাতে আসছে নতুন মার্জিন ঋণনীতি। এতে ঋণের সীমা কড়াকড়ি করা হয়েছে। দুর্বল বা ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিতে ঋণ বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে মার্জিন কল ও বাধ্যতামূলক বিক্রির (ফোর্সড সেল) নতুন নির্দেশনা।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এসব বিধান রেখে ‘মার্জিন বিধিমালা, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, নতুন নিয়মের লক্ষ্য—বিনিয়োগকারী ও ঋণদাতাকে নেগেটিভ ইকুইটির ফাঁদ থেকে রক্ষা করা। এ বিধান কার্যকর হলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে এবং ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে আসবে। শিগগিরই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।

কেন প্রয়োজন ছিল নতুন আইন

দুই দশক ধরে বাজারে নিয়মের ফাঁকফোকর ও অতিরিক্ত ঋণ ব্যবহারের কারণে বহু প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ২০০৭ থেকে ২০১২ সালে অতিরিক্ত ঋণনির্ভর বিনিয়োগের ফলে ২০১০ সালের ধস ভয়াবহ ক্ষতিতে রূপ নেয়। অনেক প্রতিষ্ঠান বাধ্যতামূলক মার্জিন কল না দেওয়ায় নেগেটিভ ইকুইটি জমে, যার পরিমাণ প্রায় ১৫-২০ হাজার কোটি টাকা। বিনিয়োগকারীদের মোট ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০-৭০ হাজার কোটি টাকা।

কমিশনার সাইফুদ্দিন বলেন, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত বিনিয়োগকারীরা প্রথমবারের মতো বিনিয়োগ করে তাঁদের সঞ্চয় হারিয়েছেন। এ ক্ষতির স্মৃতি পুঁজিবাজারে এক প্রজন্মের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে।

নতুন নিয়মে কী বদল

মার্জিনযোগ্য শেয়ারের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুধু ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার নয়, এবার ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারেও মার্জিন ঋণ দেওয়া যাবে। তবে কোম্পানিটির বছরে অন্তত ৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। সামান্য ফ্রি ফ্লোট শেয়ার থাকা কোম্পানি (৫০ কোটি টাকার কম) মার্জিন ঋণ পাবে না।

নতুন আইনে দ্রুত সতর্কতা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগের নিয়মে মূলধন ৫০ শতাংশ কমলে মার্জিন কল, ৭৫ শতাংশ কমলে বাধ্যতামূলক বিক্রি হতো; নতুন নিয়মে ২৫ শতাংশ কমলেই মার্জিন কল, ৫০ শতাংশ কমলেই ফোর্সড সেল হবে। এতে বিনিয়োগকারীরা আগেভাগে সতর্ক হয়ে ক্ষতি সীমিত রাখতে পারবেন।

ঋণের সীমা ও ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে বলা হয়েছে, কোনো ঋণদাতা তাঁর নিট সম্পদের তিন গুণের বেশি ঋণ দিতে পারবেন না। একক কোম্পানিকে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা বা নিট সম্পদের ১৫ শতাংশের মধ্যে যেটি কম, সে পরিমাণ ঋণ দেওয়া যাবে। প্রতি তিন মাসে মার্জিন অ্যাকাউন্টের পর্যালোচনা বাধ্যতামূলক।

বর্তমানে ১৭৭টি বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার নেগেটিভ ইকুইটি রয়েছে। বিএসইসি জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে ক্ষতি মেটানোর পরিকল্পনা দিতে হবে; সময়মতো পদক্ষেপ না হলে কমিশন ব্যবস্থা নেবে।

নতুন নিয়মে ঋণ প্রদানের আগে খাতের পারফরম্যান্স বিবেচনা বাধ্যতামূলক, যাতে বিনিয়োগকারী নিরাপদ থাকেন এবং প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ঝুঁকিতে না পড়ে।

বিএসইসি কমিশনার সাইফুদ্দিন জানিয়েছেন, এ বিধান কার্যকর হলে বিনিয়োগকারীরা অন্তত ৫০ শতাংশ অর্থ ফেরত পাবেন।

অর্থনীতিবিদ হেলাল আহমেদ জনি মনে করেন, নতুন নীতিমালা কার্যকর হলে শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।

তবে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মানিক সতর্ক করে বলেছেন, খসড়া মার্জিন নিয়মে কিছু ফাঁকি রয়েছে। বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে সরে যেতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জ্বালানি সরবরাহ শুরু আজ: চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন মেরামত শেষে ফের সচল

  • পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েলকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ সিডিপিএল প্রকল্প দপ্তরের।
  • প্রথম দিন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় সরবরাহ করা হবে ৫০ লাখ লিটার।
 আবু বকর ছিদ্দিক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ২৫
জ্বালানি সরবরাহ শুরু আজ: চট্টগ্রাম-ঢাকা পাইপলাইন মেরামত শেষে ফের সচল

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহের প্রতিশ্রুতিতে গত ১৬ আগস্ট পতেঙ্গার ডেসপাস টার্মিনালে ছিল উৎসবের আমেজ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান উদ্বোধন করেন বহু প্রতীক্ষিত ‘সিডিপিএল’ পাইপলাইন প্রকল্পের। শুরু হয় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের যাত্রা, যা তখন নতুন আশার আলো দেখিয়েছিল। কিন্তু সেই ধারা টিকল না বেশি দিন।

সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতের অজুহাতে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় সরবরাহ। এক মাস পেরিয়ে অবশেষে আবারও সচল হচ্ছে প্রকল্পটি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ বুধবার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ৫০ লাখ লিটার জ্বালানি তেল পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত তিন কোম্পানি—পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল লিমিটেডকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে সিডিপিএল প্রকল্প দপ্তর। এর ফলে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপো পর্যন্ত আজ বুধবার সকাল থেকে পাইপলাইনে সরবরাহ করা নতুন জ্বালানি মিলবে।

বিপিসির তথ্য বলছে, বন্ধের আগেই পাইপলাইনে ৭টি পার্সেলে মেঘনা অয়েল ৩ কোটি ২২ লাখ লিটার, পদ্মা অয়েল প্রায় ৩ কোটি লিটার এবং যমুনা অয়েলও সমপরিমাণ তেল পাঠায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায়। আগে যেখানে ট্যাংকারে তেল পৌঁছাতে লাগত দুই দিন, সেখানে পাইপলাইন এখন সেই সময় কমিয়ে এনেছে মাত্র ১২ ঘণ্টায়। ঘণ্টায় ২৬০-২৮০ টন ডিজেল প্রবাহিত হতে পারে এই লাইনে, যা কার্যক্ষমতার দিক থেকে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য প্রযুক্তিগত সাফল্য।

এই প্রকল্প দেশের জ্বালানি পরিবহনে এক নতুন যুগের সূচনা বলে ধরা হয়। প্রায় ৩৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ২৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর মধ্যে গোদনাইল পর্যন্ত ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ, এরপর ফতুল্লা পর্যন্ত অংশে ১০ ইঞ্চি। ২২টি নদীর তলদেশ ছুঁয়ে গেছে এই পাইপলাইন; নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণে সংযুক্ত রয়েছে স্ক্যাডা, টেলিকমিউনিকেশন, লিক ডিটেকশন প্রযুক্তিসহ অপটিক্যাল ফাইবার কেব্‌ল। চলতি বছরের জুনে পরীক্ষামূলকভাবে বাণিজ্যিক পরিবহন শুরু হয়। এরপর ১৬ আগস্ট পতেঙ্গায় ডেসপাস টার্মিনালে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ফাওজুল কবির খান।

উদ্বোধনের এক মাস পর জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আগস্টে চালু হওয়ার পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকল্পের যান্ত্রিক রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন দেখা দিলে পরিবহন কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। এখন সেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে, তাই সবকিছু আবারও সচল হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পদ্মা অয়েলের পরিচালন ও পরিকল্পনা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আসিফ মালিক বলেন, ‘রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্প দপ্তর থেকে চিঠি পেয়েছি, প্রস্তুতিও সম্পন্ন। বুধবার (আজ) থেকে আবার পাইপলাইনে তেল যাবে।’

মেঘনা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহীরুল হাসানও নিশ্চিত করেছেন, মাসখানেক বিরতির পর নতুন করে সরবরাহ শুরু হচ্ছে আজ। এবার পুরোপুরি কার্যক্রমে গতি আসবে।

পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত পাইপলাইনের নয়টি স্টেশন ও বরুড়ায় ২১ হাজার টন ধারণক্ষমতার নতুন ডিপোসহ পুরো প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। বছরে ৫০ লাখ টন তেল পরিবহনের সক্ষমতা অর্জন করলে এই প্রকল্পে প্রতিবছর প্রায় ২২৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানায় বিপিসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত