Ajker Patrika

ভারতের আপত্তি ধোপে টিকল না, পাকিস্তানকে ১ বিলিয়ন ডলার দিল আইএমএফ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ১০: ৪৮
১৯৫০ সালে আইএমএফের সদস্যপদ পায় পাকিস্তান। ছব: সংগৃহীত
১৯৫০ সালে আইএমএফের সদস্যপদ পায় পাকিস্তান। ছব: সংগৃহীত

ভারতের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পাকিস্তানকে চলমান এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) আওতায় এক বিলিয়ন ডলার তৎক্ষণাৎ বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে। ভারতের অভিযোগ, এ অর্থ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সীমান্তে সন্ত্রাসবাদে ব্যবহৃত হতে পারে।

ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। একই বৈঠকে আইএমএফ পাকিস্তানের জন্য তাদের রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এর আওতায় ১.৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাবও পর্যালোচনা করেছে।

এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়ে ভারত দাবি করেছে, আইএমএফ সংস্কার বাস্তবায়নে পাকিস্তানের অতীত রেকর্ড ভালো নয়। পাশাপাশি, তহবিলের অপব্যবহারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। এ কারণে নয়াদিল্লি ভোটদানে বিরত ছিল।

ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ চালাতে পৃষ্ঠপোষকতায় অর্থ সহায়তা দেওয়া বিপজ্জনক বার্তা দেয়। এটি তহবিল সংস্থাগুলো ও দাতাদের সুনাম ঝুঁকিতে ফেলেছে এবং বৈশ্বিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করেছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ আইএমএফের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি ভারতের ‘একতরফা কৌশলের পরাজয়’ এবং পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আইএমএফ কর্মসূচি নস্যাৎ করার ভারতীয় প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। ভারত ‘একতরফা আগ্রাসনের’ মাধ্যমে ‘দৃষ্টি বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র’ করছে।

নতুন তহবিল বিতরণের ফলে ইএফএফের আওতায় পাকিস্তানের জন্য আইএমএফের মোট অর্থায়ন প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। গত বছরের জুলাইয়ে সম্মত হওয়া পুরো ৭ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজটি ৩৯ মাসে সাত কিস্তিতে বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এর জন্য সফল সংস্কার কার্যক্রম, যেমন কর কাঠামো পুনর্গঠন, জ্বালানি খাতে সংস্কার এবং ইউটিলিটি ও শিল্পক্ষেত্রে মূল্য সমন্বয়ের মতো শর্ত পূরণ করতে হবে।

আইএমএফের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে সদস্যপদ পাওয়ার পর থেকে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত ২৫টি আর্থিক সহায়তা চুক্তির আওতায় এসেছে। ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানের জন্য আইএমএফ থেকে প্রাপ্ত ঋণ ও অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৩ বিলিয়ন স্পেশাল ড্রইং রাইটস (এসডিআর)। বর্তমানে চলমান ৩৭ মাসের এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) প্রোগ্রামের আওতায় মোট ছয়টি পর্যায়ে মূল্যায়ন হবে এবং প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের পরবর্তী কিস্তি ছাড় করার সিদ্ধান্ত ওই মূল্যায়নের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে।

এ ছাড়া ভারত চাচ্ছে পাকিস্তানকে আবার ফাইন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) ধূসর তালিকায় ফেরানো হোক। আন্তর্জাতিক সংস্থা এফএটিএফ অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের বিরুদ্ধে নজরদারি চালায়।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন সাধারণ মানুষের প্রাণহানির পর ভারত এই ঘটনার জবাবে কূটনৈতিক ও আর্থিক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তানের অর্থপ্রবাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত