Ajker Patrika

পাকিস্তানকে উদ্ধারে 'মুক্তহস্তে' ঋণ দেওয়া ঠিক কি না, ভারতের প্রশ্নের মুখে আইএমএফ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ০৮: ৩৮
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। ছবি: পিটিআই
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। ছবি: পিটিআই

পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার আগে আইএমএফকে গভীরভাবে পর্যালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। পাকিস্তানের জন্য আর্থিক সহায়তার বিষয়টি পর্যালোচনার এক দিন আগে আজ বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ‘আইএমএফ বোর্ডের উচিত ‘নিজেদের ভেতরে গভীরভাবে তাকানো’ এবং পাকিস্তানকে উদারভাবে সহায়তা দেওয়ার আগে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া।’

বিক্রম মিশ্রি প্রশ্ন তোলেন, গত তিন দশকে পাকিস্তানকে দেওয়া একের পর এক আইএমএফ বেইলআউট প্যাকেজের কার্যকারিতা কতটা এবং সেসব তহবিলের সঠিক ব্যবহার আদৌ হয়েছে কি না।

মিশ্রি জানান, ৯ মে আইএমএফ বোর্ড মিটিংয়ে ভারতের পক্ষে মত তুলে ধরবেন দেশটির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, ‘আমাদের আইএমএফে একজন নির্বাহী পরিচালক রয়েছেন। আগামীকাল আইএমএফ বোর্ডের বৈঠক রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত, আমাদের নির্বাহী পরিচালক সেখানে ভারতের অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরবেন। বোর্ড কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা এক জটিল প্রক্রিয়ার বিষয়। তবে আমি মনে করি, পাকিস্তানকে ঘিরে যেটা স্পষ্ট—যারা এই দেশকে বাঁচাতে উদারভাবে অর্থ ঢালে, তাদের সেটা নিজে থেকেই বোঝা উচিত।’

মিশ্রি আরও বলেন, গত তিন দশকে পাকিস্তানের জন্য বহু আইএমএফ প্রোগ্রাম অনুমোদিত হয়েছে, তবে সেগুলোর কয়টা সফলভাবে শেষ হয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

আইএমএফের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১৯৫০ সালে সদস্যপদ পাওয়ার পর থেকে পাকিস্তান এখন পর্যন্ত ২৫টি আর্থিক সহায়তা চুক্তির আওতায় এসেছে। ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পাকিস্তানের জন্য আইএমএফ থেকে প্রাপ্ত ঋণ ও অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ২৩ বিলিয়ন স্পেশাল ড্রইং রাইটস (এসডিআর)। বর্তমানে চলমান ৩৭ মাসের এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) প্রোগ্রামের আওতায় মোট ছয়টি পর্যায়ে মূল্যায়ন হবে এবং প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের পরবর্তী কিস্তি ছাড় করার সিদ্ধান্ত ওই মূল্যায়নের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে।

বর্তমানে আইএমএফ বোর্ডে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন বিশ্বব্যাংকে অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত দেশটির নির্বাহী পরিচালক পরমেশ্বরন আয়ার। তিনি ৯ মে অনুষ্ঠেয় গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। এর আগে কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যমের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগেই তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা জানান, ভারত সরকার সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাকিস্তানকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্ত বহুপক্ষীয় উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর (এমডিবি) যেমন বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করবে এবং তাদের এই বিষয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে।

এ ছাড়া ভারত চাইছে পাকিস্তানকে আবার ফাইন্যানশিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) ধূসর তালিকায় ফেরানো হোক। আন্তর্জাতিক সংস্থা এফএটিএফ অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের বিরুদ্ধে নজরদারি চালায়।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন সাধারণ মানুষের প্রাণহানির পর ভারত এই ঘটনার জবাবে কূটনৈতিক ও আর্থিক নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার লক্ষ্য পাকিস্তানের দিকে অর্থপ্রবাহ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত