Ajker Patrika

কুকুর–বিড়ালকে খাওয়ানোসহ একাধিক শর্তে আসামির মুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
আদালতের বারান্দায় আইনজীবীর সঙ্গে সাদ্দাম হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আদালতের বারান্দায় আইনজীবীর সঙ্গে সাদ্দাম হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদক মামলায় সাদ্দাম হোসেনকে (২২) এক বছরের সাজা দেন আদালত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আইনজীবী সাজার বিরোধিতা করে আদালতকে বলেন, এটি তাঁর জীবনের প্রথম মামলা, বয়স কম। তাঁকে সংশোধনের সুযোগ দিলে তিনি আর কখনো মামলার আসামি হবেন না। মাদক সেবন ও বিক্রয় অপরাধের ধারেকাছেও যাবেন না।

আদালত আইনজীবীর কথায় সন্তুষ্ট হয়ে ব্যতিক্রমী শর্তে ওই যুবককে খালাস দেন। তবে এক বছর সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের তদারকিতে শর্তগুলো মেনে চলতে হবে এবং নিজেকে সংশোধন করতে হবে।

ব্যতিক্রমী বিচারিক এই ঘটনা ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুসতানসীর হাসান চৌধুরীর আদালতে।

সাদ্দাম হোসেন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কিসমত রসুলপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। বর্তমানে তিনি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার সুপাতলা গ্রামে বসবাস করছেন।

সাদ্দাম হোসেনের আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন দিলু এ তথ্যের সত্যতা করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আদালত আমাদের আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে ব্যতিক্রমী কিছু শর্তসাপেক্ষে সাদ্দামকে খালাস দিয়েছেন।

তার মধ্যে আগামী এক বছর প্রতি শুক্রবারে মসজিদ পরিষ্কার করা, ৫০টি গাছ লাগানো ও পরিচর্যা, আমপাড়ার (কোরআন শরিফের ৩০ নম্বর পারা) ১০টি সুরা অর্থসহ মুখস্থ করা, রাসুল (সা.)-এর জীবনী পাঠ, দুটি করে বিড়াল ও কুকুরকে খাওয়ানো, মাদক সেবন ও বিক্রি থেকে নিজেকে দূরে রাখা।

এসব শর্ত সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন প্রবেশন অফিসারের তদারকিতে পালন করে নিজেকে সংশোধন করতে হবে। আগামী এক বছর প্রবেশন অফিসারের অনুমতি ছাড়া পেশা ও বাসস্থান পরিবর্তন করতে পারবেন না এবং সব সময় প্রবেশন অফিসারের নির্দেশমতো চলবেন।

দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, ওই সময়কালে কোনো অপরাধে জড়ানো যাবে না, পরিবারের নির্ভরশীলদের প্রতি যত্নশীল-পারিবারিক বন্ধন বজায় রাখতে হবে, শান্তিপূর্ণ, সদাচারপূর্ণ জীবন যাপন করতে হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী খালাসের শর্তগুলো ৫০০ টাকার একটি বন্ড সম্পাদন করা হয়।

দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘আমরা আদালতের এমন মানবিক ও সংশোধনমূলক রায়কে স্বাগত জানাই। সাদ্দাম নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং এখন সৎ পথে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

আদালতের রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সাজার এক বছর পরিবার-পরিজন ছাড়া জেলে থাকলে অনেক কষ্ট হতো। কিন্তু আদালত আমাকে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে থেকে ভালো ভালো কাজ করার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছেন। আমি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি সবগুলো মেনে নিজেকে সংশোধন করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

আদালত সূত্র জানা যায়, ২০২৩ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার একটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হন সাদ্দাম। ২০২৪ সাদ্দামকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা। বিচার কার্যক্রম শেষে গতকাল তাঁকে আদালত এক বছরের সাজা দেন। পরে আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবেশন অনুমোদন করে সাদ্দামকে খালাস দেন আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

ভাগনের বিয়েতে ১ কেজি সোনা, ৪ বস্তা টাকা, ২১০ বিঘা জমি, পেট্রলপাম্প উপহার দিল মাড়োয়ারি পরিবার

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের এমডির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে কর্মীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত