Ajker Patrika

মিন্নাত আলীর সব স্বপ্ন তলিয়ে গেল বানের পানির নিচে

জুয়েল আহমদ, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) 
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৪, ১৫: ০৯
Thumbnail image

আট সন্তানসহ ১১ সদস্যদের পরিবার। এর মধ্যে আবার তিন সন্তান বাক্‌প্রতিবন্ধী। তার পরও পরিশ্রমী সবজিচাষি মিন্নাত আলীর সংসার মোটামুটি চলে যাচ্ছিল। ব্যাংক থেকে ঋণ আর নিজের মেহনতে এবারও সবজি চাষে দেখেছিলেন আশার আলো। কিন্তু বানের জলে সবকিছু যেন নিমেষেই শেষ হয়ে গেছে। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, আর কীভাবেই বা সংসারের খরচ জোগাবেন, তার কুলকিনারা পাচ্ছেন না।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের যোগলনগর গ্রামের বাসিন্দা মিন্নাত আলী সংসারের অভাব দূর করতে গত পাঁচ বছর ধরে বাড়ি পাশে কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় সবজি চাষ শুরু করেন। নিজেই চাষ করতেন, আবার বাজারে নিয়ে বিক্রি করতেন। সবজি চাষে বেশ ভালোই চলছিল তাঁর সংসার। চলতি মৌসুমে কৃষি ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ির পাশে ৫ কেদার (১ কেদার সমান ৩০ শতক) জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেন। তাঁর চাষকৃত সবজির মধ্যে ঢ্যাঁড়স, পাটশাক, পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, চালকুমড়ার ফলনও বেশ ভালো হয়েছিল। 

তবে সেই ফসল আর ঘরে তোলা হয়নি মিন্নাত আলীর। ভারী বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সবকিছু তলিয়ে যায়। টানা এক মাস ধরে তলিয়ে থাকা সবজিখেতে এখন শুধু পানি আর পানি। নষ্ট হয়ে গেছে সব ফসল। 

মিন্নাত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১১ সদস্যের সংসার। এর মধ্যে আবার তিন সন্তান বাক্‌প্রতিবন্ধী। আমি ছাড়া আমার সংসারে রোজগারের আর কেউ নেই। কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতায় নিজের অল্প একটু জমি আর আত্মীয়স্বজনের জমিতে সবজি চাষ করে বেশ ভালোই চলছিল অভাবের সংসার। গেল মৌসুমে প্রায় লাখ টাকার মতো লাভ হয়েছিল। তাই এবার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ৫ কেদার জমিতে সবজি চাষ করি। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু ঘরে তোলা আর হলো না। বানের জলে সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে।’ 

মিন্নাত আলীর ডুবে যাওয়া সবজিখেত। ছবি: আজকের পত্রিকাতিনি আরও বলেন, ঠিকমতো সবজিগুলো তুলতে পারলে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি হতো। এখন নিজেরা কী খাব আর ঋণই বা পরিশোধ করব কীভাবে? চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, ‘মিন্নাত আলী একজন আদর্শ কৃষক। কৃষির প্রযুক্তি ব্যবহার ও নতুন জাত সম্প্রসারণে সে একজন অগ্রগামী। তিনি সবজি চাষের মধ্য দিয়ে পরিবারে সচ্ছলতা নিয়ে এসেছেন। আমরা তাঁকে সব সময় সহযোগিতা করেছি। তবে এবারের বন্যায় তিনি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংশ্লিষ্ট মহলে পাঠিয়েছি। কোনো ধরনের প্রণোদনা বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হলে অবশ্যই তাঁকে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত