Ajker Patrika

ফেসবুক পোস্টের জেরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ৫

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩: ২৬
কুড়িগ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুড়িগ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুড়িগ্রামের চররাজীবপুর উপজেলায় ফেসবুক পোস্টের জেরে বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠন যুবদল ও ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দলটির নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সন্ধ্যায় উপজেলা শহরের কয়েকটি স্থানে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করে। তবে রাত সাড়ে ৮টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তসলিম উদ্দিন সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান ও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রোস্তম মাহমুদের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় জানা গেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে আহত সবার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁদের কয়েকজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সময় মোখলেছুর রহমানের সমর্থকেরা স্থানীয় সাংবাদিক সুজন মাহমুদের ওপরও হামলা করেন। পরে উপজেলার সাংবাদিকেরা সুজন মাহমুদকে উদ্ধার করেন।

স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, আজ কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান জেলা আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পাননি। এ নিয়ে সহিদুল নামের এক যুবদল কর্মী ফেসবুকে উসকানি ও ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেন। তিনি রোস্তম মাহমুদের সমর্থক। ওই পোস্টের জেরে সন্ধ্যায় রাজীবপুর সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় গেটের সামনে সহিদুলকে কিলঘুষি মারেন মোখলেছুরের সমর্থক কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী। খবর পেয়ে রোস্তমের সমর্থকেরা রাজীবপুর পাঁচ রাস্তার মোড়ে মোখলেছুর রহমান গ্রুপের কয়েকজনকে মারধর করেন।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে মোখলেছুরের গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হয়ে রাজীবপুর বাজারে যুবদলের আহ্বায়ক রোস্তম মাহমুদ গ্রুপের ওপর হামলা করেন। এ সময় উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। এতে ইয়াকুব নামের এক যুবদল কর্মী ও সাংবাদিক সুজনসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সাংবাদিক সুজন মাহমুদ বলেন, ‘সন্ধ্যায় সহকর্মীদের সঙ্গে বাজারে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, সাব্বির হোসেনসহ কয়েকজন মিলে আমার ওপর হামলা করেন। সঙ্গে থাকা সহকর্মীরা আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন।’

আপনার ওপর কেন হামলা করা হলো, জানতে চাইলে সুজন বলেন, ‘মোখলেছুরকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে আমার ওপর তাঁদের ক্ষোভ ছিল।’

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রোস্তম মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম না। আমাদের এখানে কোনো পক্ষ নেই। জুনিয়রদের মধ্যে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে। তেমন গুরুতর কিছু নয়। একজন আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

অন্যদিকে সংঘর্ষের বিষয়টি স্বীকার করলেও নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোখলেছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। এলাকার বিরোধের বিষয় নিয়ে কিছুই জানি না। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি। হাসপাতালে ভর্তি আহত একজনের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারকে অনুরোধ করেছি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক হাসিবুর রহমান বলেন, আহত চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁরা সবাই জখম ছিলেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত ইয়াকুবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।

রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘ফেসবুকে পোস্ট করা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লালমাটিয়ায় দুই তরুণীকে যৌন হেনস্তাকারী রিংকু কারাগারে

শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় ক্যাম্পাস ছাড়লেন ইবি শিক্ষক

স্মার্টফোনের ধারণা বদলে দিতে পারে আইফোন ১৭ প্রো ম্যাক্স

এবার আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের মারধর সেই বরখাস্ত এসপি ফজলুলের

জেনারেল ওসমানীকে কেন এবার স্বাধীনতা পদক দেওয়া হলো না, ব্যাখ্যা দিল সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত