Ajker Patrika

তীব্র শীত ও কুয়াশায় দুশ্চিন্তায় গাইবান্ধার চাষিরা

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা 
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১০: ৫৭
তীব্র শীত ও কুয়াশায় দুশ্চিন্তায় গাইবান্ধার চাষিরা

গাইবান্ধায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি গম, আলু, শীতকালীন শাকসবজির আবাদও ঝুঁকিতে আছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানা যায়, এই মৌসুমে ৬ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া আলু ১১ হাজার ১৫১ হেক্টর, শীতকালীন শাকসবজি ৯ হাজার ৬০০ হেক্টর, গম ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর, ভুট্টা প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর, সরিষা ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। 

কিন্তু গত কয়েক দিনের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় হাইব্রিড জাতের ৩ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের বীজতলার অধিকাংশ চারাই লালচে-হলুদ হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও লালচে হওয়ার পর আস্তে আস্তে পাতার আগা শুকিয়ে যাচ্ছে এবং অল্প দিনের মধ্যে পাতাগুলো মরে যাচ্ছে। 

অন্যদিকে গম-ভুট্টার ফসলকে তেমন ক্ষতি না করতে পারলেও টমেটো, কফি, শিম, আলুসহ নানান জাতের শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। এরই মধ্যে আলুতে মড়ক দেখা দিয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, কোথাও কোথাও বীজতলায় বোরো ধানের চারাগুলো ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে রোপণের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া শীতকালীন সবজি লাউ, ফুলকপি, টমেটো, শিম, বেগুন আর গাজরের ফলন কমতে শুরু করছে। 

গাইবান্ধা জেলায় ছয় দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। পাশাপাশি গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো পড়ছে কুয়াশা। ঠান্ডায় ধানের চারাগুলো কালো, লাল বা সাদা বর্ণের হয়ে পচে মারা যাচ্ছে। 

সদর উপজেলার কৃষক হাসান আলী বলেন, ‘১০ শতাংশ জমিতে এবার বোরোর বীজ লাগানো হয়েছে। কিন্তু শীতের কারণে বীজের চারাগুলো সাদা বর্ণের হচ্ছে। জানি না, চারাগুলো জমিতে রোপণ করা সম্ভব হবে কি না।’ 

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিপুর গ্রামের ফয়জার আকন্দ বলেন, ‘গত বছর বন্যার পরে চড়া দামে আমনের চারা কিনতে পারিনি বলেই আমনের আবাদ না করে জমি পরিত্যক্ত রেখেছিলাম। এ বছর যদি ঘন কুয়াশায় বোরোর চারা মারা যায়, তাহলে কোনোভাবেই বোরোর চাষ সম্ভব হবে না।’ 

আলুচাষি হাবিবুল হাউলিদার বলেন, বৃষ্টির মতো কুয়াশা হলে আলু টিকানো মুশকিল হয়ে যাবে। মিডিয়ায় কৃষি কর্মকর্তা মাঠে কাজ করার কথা বললেও বাস্তবে মাঠের চিত্র ভিন্ন। অনেক আলুচাষিই এখনো নিজ নিজ এলাকার দায়িত্বরত কৃষি অফিসার চেনেন না। ক্ষোভে তিনি আরও বলেন, কৃষক মরলে কারও যায় আসে না। 

সাদুল্লাপুর উপজেলার কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েক দিনের ঘন কুয়াশায় কপি, টমেটো, শিমগাছের পাতা, ডাল আটে আসছে। ফলন অনেক কমে গেছে।’ 

মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা মিন্টু মিয়া বলেন, এসব বোরো ধানের বীজতলা রক্ষার জন্য ইউরিয়া ও জিপসাম সার প্রয়োগের পাশাপাশি প্রতিদিন বীজতলার কুয়াশা ঝরিয়ে দিতে হবে। চারাগুলোতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। 

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, এ বছর জেলায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রায় ৬ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরোর বীজতলা হয়েছে। শীতে আক্রান্ত গম, আলু শাকসবজির বিষয়ে কৃষি সহকারী কর্মকর্তারা মাঠে মাঠে ঘুরে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তার পরও কোনো ধরনের সমস্যা হলে কৃষি অফিসকে জানালে মাঠে গিয়ে ফসল দেখে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত