Ajker Patrika

ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের পর হাসপাতালে ছেলের মৃত্যু, বাবা গ্রেপ্তার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ১৮: ২১
ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের পর হাসপাতালে ছেলের মৃত্যু, বাবা গ্রেপ্তার

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে মা ও মেয়ের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছেলে তৌহিদের (২) মারা গেছে। গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনের পর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় সন্তানদের নিয়ে গৃহবধূ সুমি আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় মামলার পর স্বামী ও দুই সন্তানের বাবা রাশেদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুরে রাশেদুজ্জামানকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। 

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় শিশু তৌহিদের। এর আগে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলরুটের পাটগ্রামের বুড়িমারী ইউনিয়নের ঘুন্টি নামক এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান গৃহবধূ সুমি (২৭) এবং তাঁর মেয়ে শিশুসন্তান তাসিম (৬)। 

এ ঘটনায় গতকাল রাতেই আত্মহত্যায় প্ররোচনায় লালমনিরহাট রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন গৃহবধূ সুমির বাবা আজিজুল ইসলাম। এতে আসামি করা হয় গৃহবধূর স্বামী রাশেদুজ্জামান ও শাশুড়ি রাশেদা বেগমকে। সেই মামলায় পুলিশ রাতেই রাশেদুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। 

পুলিশ ও পরিবার জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সুমির সঙ্গে স্বামী ও শাশুড়ির ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে সুমিকে মারধর করেন তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি। পরের দিন শুক্রবার সকালে আবারও মারধর করে সুমিকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তাঁর স্বামী রাশেদুজ্জামান। সুমি ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে বুড়িমারীর দিকে যাওয়ার সময় ঘুন্টি নামক স্থানে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেললাইনে যান। এ সময় লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারীগামী (বুড়িমারী কমিউটার) ট্রেনের সামনে ছেলেমেয়েকে নিয়ে লাফ দেন সুমি আক্তার। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে সুমি ও তাঁর মেয়ে তাসিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। আর তাঁর ছেলে তৌহিদ আহত হয়। 

স্থানীয়দের খবরে পাটগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের একটি দল সেখানে পৌঁছে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে এবং তৌহিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তৌহিদের মৃত্যু হয়। 

গৃহবধূর সুমির ছোট ভাই আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমার আপাকে (সুমি) আমাদের বাড়িতে আসতে দিত না দুলাভাই। প্রায় সময় আপাকে মারধর করত দুলাভাই ও তার মা। মারধর করার কারণে আপা আত্মহত্যা করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’ 

সুমির বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মারধর, নির্যাতন ও পারিবারিক কলহ সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়েটির আজ এই অবস্থা। আমার মেয়ের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই সরকারের কাছে।’ 

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় তৌহিদের মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে, এটি একটি দুর্ঘটনা নয়, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা হতে পারে।’ 

লালমনিরহাট রেলওয়ে থানার ওসি ফেরদৌস আলী বলেন, সুমিকে দুই দিন মারধর করার পর গতকাল তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তাঁর স্বামী ও শাশুড়ি। পারিবারিক কলহ ও নির্যাতনের কারণে সুমি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত সুমির স্বামী রাশেদুজ্জামানকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত