আলু আমদানির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি হিলির ব্যবসায়ীদের

পেঁয়াজের পর এবার ভারত থেকে বন্ধ হয়ে গেল আলু আমদানি। অনুমতিপত্রের (আইপি) মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আলু পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিবেশী দেশটি। এ অবস্থায় দেশের বাজারে আবারও আলুর মূল্য বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাই আলুর দাম স্থিতি অবস্থায় রাখতে আমদানির অনুমতিপত্রের (আইপি) মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। 

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। নিয়ম অনুযায়ী আজ শুক্রবার আমদানিপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। 

কিন্তু সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমদানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর শেষ দিনে এই বন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ ১৯৭ ভারতীয় ট্রাকে ৫ হাজার ২০৬ টন আলু আমদানি হয়েছে। 

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার পর্যন্ত আলু আমদানি করা অনুমতি ছিল। কিন্তু ১৫ ডিসেম্বর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় এক দিন আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আইপির মেয়াদ বাড়ানো না হলে পেঁয়াজের মতো আলুর বাজার অস্থির হয়ে পড়বে। তাঁরা বলছেন, দেশে উৎপাদিত নতুন আলুর এখনো বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। পর্যাপ্ত সরবরাহ হতে আরও অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে। সেই দিক বিবেচনা আমদানির অনুমতি মেয়াদ আরও ১৫ দিন বাড়ানো হলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। 

এর আগে আগস্ট মাসে দেশের বাজারে আলুর সংকট দেখা দেওয়ায় দাম নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে ৩০ অক্টোরব দেশে আলু আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপর ২ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি শুরু করেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা। ফলে কেজিতে ৮০ থেকে ৯০ দরে বিক্রি হওয়া আলুর দাম ৩৮ থেকে ৪২ টাকায় নেমে আসে। 

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহসভাপতি শাহিনুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যে পরিমাণ আলু আমদানির আইপি জমা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা, তা এখনো আমদানি সম্পন্ন করতে পারেনি। তাই দাবি করছি আমদানির মেয়াদ আরও বাড়ানো হোক।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে অল্প কিছু আইপির কাজ আটকে আছে, তা আগামীকাল অফিস খুললে যানা যাবে।’

হিলি পানামা পোর্ট লিংকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহারব হোসেন প্রতাব মল্লিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানির বিষয়ে আমদানিকারকেরা বলতে পারবে।’ 

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজারে এখনো পর্যাপ্ত নতুন আলু উঠতে শুরু করেনি। যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে তার দামও আকাশ ছোঁয়া। এমন অবস্থায় আলু আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে দাম নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে আলু আমদানির শেষ সময় ছিল ১৫ ডিসেম্বর। সরকার যদি সময় বাড়ায় তাহলে আমরা আবার আলু আমদানি করতে পারব।’ 

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ২ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৭৫টি ভারতীয় ট্রাকে ৩৫ হাজার ৯৮১ টন আলু আমদানি হয়েছে।