Ajker Patrika

ভিডব্লিউবির চাল তুলে ১১শ টাকা বস্তা বিক্রি করল সুবিধাভোগীরা

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৩, ২১: ১২
ভিডব্লিউবির চাল তুলে ১১শ টাকা বস্তা বিক্রি করল সুবিধাভোগীরা

মোছা. রুনা আক্তার নামের এক নারী প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান ফটকের বারান্দায় চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে থাকা গ্রাম পুলিশ মকবুল হোসেনকে ২০ টাকা দেন। এরপর বারান্দা থেকে দুটি চালের বস্তা নামিয়ে অদূরেই এক ব্যক্তিকে দেন। ওই ব্যক্তি চালের বস্তা দুটি নিয়ে রুনাকে ১ হাজার টাকার দুটি ও ১০০ টাকার দুটি নোট ধরিয়ে দেন। রুনা টাকাগুলো নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেন। 

একইভাবে জিয়াউল নামের এক ব্যক্তি চালের বস্তা দুটি নিয়ে একই ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিয়ে ২ হাজার ২০০ টাকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বের হয়ে পড়েন। এমন দৃশ্য আজ বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গিয়ে দেখা গেছে। 

এদিন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অসচ্ছল, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত নারীদের ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির মাধ্যমে ৩৪৬ জন সুবিধাভোগীর মাঝে ৬০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। অনেক সুবিধাভোগী বিনা মূল্যের চাল পাওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদেই অপেক্ষমান ফড়িয়ার কাছে ১ হাজার ১০০ টাকা বস্তা দরে চাল বিক্রি করে দিয়েছেন। 

এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের একটি দল সুবিধাভোগীদের চালের বস্তা তুলে দেওয়ার আগে নগদ ২০ টাকা হারে উত্তোলন করছেন। তাঁদের সামনেই সরকারী চাল এভাবে বিক্রি হলেও তাঁরা নিশ্চুপ রয়েছিলেন। চাল বেচাকেনার স্থানে এ প্রতিবেদক ঘণ্টাখানেক ধরে এমন দৃশ্য দেখেন। এ সময় অনেক ফড়িয়া চাল কিনে ভ্যানে করে তাঁদের বিভিন্ন স্থানের গুদামে নিয়ে যান। 

খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ইন্দ্রজিত সাহা ঘটনাস্থলে হাজির হন। এ সময় তাঁকে দেখে চাল কেনা ফড়িয়ারা দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে সন্ধান পেয়ে পরিষদের পাশেই নাকু নামে এক ফড়িয়ার দোকানঘরে সরকারি বিনা মূল্যের চালের বস্তা আছে সন্দেহে ওই ফড়িয়ার খোঁজ করলে তাঁকে না পেয়ে তাঁর তালাবদ্ধ দোকানের সামনে গ্রাম পুলিশ পাহারা বসানো হয়। 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিত সাহা প্রায় ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করার পরেও সন্দেভাজন ফড়িয়া হাজির না হলে পরে নেকমরদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন চালের বস্তাগুলো উদ্ধারের দায়িত্ব নেন। চেয়ারম্যানকে চালের বস্তা উদ্ধারের দায়িত্ব দিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিত সাহা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। 

চাল উত্তোলনের পর বিক্রির বিষয়ে মোছা. রুনা ও জিয়াউলের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা এ ব্যাপারে কথা বলা যাবে না বলে পাশ কেটে চলে যান। 

এ প্রতিবেদককে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিত সাহা বলেন, চালের বস্তাগুলো উদ্ধারের জন্য চেয়ারম্যান নিজে দায়িত্ব নিয়েছেন। চালগুলো উদ্ধার হলে অসহায়দের মাঝে পুনরায় বিতরণ করা হবে। 

নেকমরদ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘গ্রাম পুলিশ টাকা কেন নিয়েছে সেটি জানি না। তবে যেসব চাল বিক্রি হয়েছে তা উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকারনাইন কবির বলেন, ঘটনা জানার পরেই এসিল্যান্ডকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। এবারের অভিযোগের কারণে আগামী মাসে প্রশাসনের কড়াকড়ি নজরদারির মধ্য চাল বিতরণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত