Ajker Patrika

পাকা ধানে পোকার আক্রমণ, লোকসানের আশঙ্কায় কৃষক

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
মাজরা পোকা ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ধান নষ্ট হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাজরা পোকা ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে ধান নষ্ট হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বেশির ভাগ বোরো ধানের খেতে দেখা দিয়েছে মাজরা পোকা ও ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ। কৃষক জমি থেকে যখন ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ঠিক সেই সময়েই দেখা দিয়েছে পোকার আক্রমণ। এতে ফলন বিপর্যয় ও লোকসানের আশঙ্কায় পড়েছেন কৃষক।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ২৮৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে, যা থেকে ৭০ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

চলতি বছর এ উপজেলায় আলুর উৎপাদন ভালো হলেও প্রত্যাশিত দাম পাননি কৃষক। সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে চাষ করেছেন বোরো ধান।

কৃষকেরা বলছেন, আলু আবাদ করে তাঁদের লোকসান গুনতে হয়েছে। ধান আবাদ করে সেই লোকসান কিছুটা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্য ছিল। যারা আগাম ধান রোপণ করেছিলেন, তাঁদের ধান বেশ ভালোই হয়েছে। পোকার তেমন আক্রমণ নেই। যাঁরা আলু ও সরিষা আবাদ শেষে ধান রোপণ করেছেন, তাঁদের ধানের অবস্থা খারাপ। চার-পাঁচবার কীটনাশক স্প্রে করা হলেও পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। এক জমি থেকে আরেক জমিতে পোকার আক্রমণ খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

এদিকে, মাজরা পোকার আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করতে আলোক ফাঁদ ও কীটনাশক স্প্রেসহ সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসার মীর হাসান আল বান্না। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। কিছু জমিতে পোকার আক্রমণ লক্ষ করা গেছে। নিয়মিত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করছেন। অধিকাংশ জমির ধানে শিষ বের হয়ে গেছে। এ সময়ে মাজরা পোকার আক্রমণে তেমন প্রভাব পড়বে না।

তবে কৃষকেরা বলছেন, পোকার আক্রমণে ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অন্তত ৩০ ভাগ ফলন কম হবে।

উপজেলার বাবুরহাট গ্রামের কৃষক আসাদুজ্জামান ১০ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, খেতে পাঁচবার কীটনাশক স্প্রে করেছি, তারপরও পোকার আক্রমণ ঠেকানো যায়নি। ধানের মরা শিষ বের হয়েছে। বিঘাপ্রতি ৮-১০ মন ধানের ফলন কম হয়েছে। যেখানে বিঘাপ্রতি ফলন ২২-২৫ মণ হতো, সেখানে ১০-১২ মণ হয়েছে। যে হারে সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি, তাতে ধান আবাদ করতে অনেক খরচ হয়েছে।

বালাপাড়া এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ধানের ফলন ব্যাহত হওয়ায় উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি। আমরা ভেবেছিলাম, আলুর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব, কিন্তু বোরো ধান রোপণ করলেও পোকার আক্রমণে বোরো ধান চাষাবাদ করে ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা জানান, বেশির ভাগ খেতে ধান পাকার উপক্রম হওয়ায় কীটনাশকও ছিটাতে পারছেন না তাঁরা। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেক শঙ্কা—বৃষ্টি। ফলে ধান নষ্টের পাশাপাশি পশুখাদ্য বিচালি ঘরে তোলা নিয়েও তাঁরা চিন্তায় পড়েছেন।

কৃষিবিদ আবু সায়েম বলেন, মাজরা পোকা ধানগাছের গোড়া কেটে নিচ্ছে। এতে ধানের শিষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক স্প্রে করেও সেই পোকার আক্রমণ থেকে পরিত্রাণ মিলছে না। এতে ধানের উৎপাদন কমছে খরচও বাড়ছে। এখন যত দ্রুত ধান কেটে ফেলা যায় তত মঙ্গল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের অফিসে আগুন নেভাতে গিয়ে কোরআন শরিফ দেখেননি, দাবি ফায়ার সার্ভিসের

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স: রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আসন নেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর

দিনাজপুরে নিহত মাইক্রোবাস-আরোহীদের সবাই সরকারি কর্মকর্তা

ফরিদপুরে গাড়ির চাকায় ছিন্নভিন্ন অজ্ঞাত ব্যক্তি, অক্ষত শুধু পায়ের জুতা

নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার বিব্রতকর: উপদেষ্টা ফারুকী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত