আনিছুর রহমান, লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে আট সদস্যের এক পরিবারে সাতজনই প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে পাঁচজন দৃষ্টি, একজন মানসিক ও একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ভাতার বাইরে পরিবারটির আয়ের একমাত্র উৎস বড় ছেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবী (২৬)। তিনি হাটে-ঘাটে দোতারা বাজিয়ে গান গেয়ে যা আয় করেন, তাই দিয়ে চলে সংসার।
জানা গেছে, জন্মলগ্ন থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এন্তাজুল হক। তবে পরিবারে শারীরিকভাবে একমাত্র সুস্থ তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের উপার্জনেই চলত সংসার। একপর্যায়ে সংসারে প্রথম সন্তান নুরুন্নবীর জন্ম হয়। কিন্তু সেও বাবার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়। দুই বছর পর দ্বিতীয় সন্তান নুর আলমও (২৪) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়। একইভাবে তৃতীয় সন্তান লিমন ইসলাম (২২) ও চতুর্থ সন্তান রেশমা (১৩) জন্ম নেয়। তারাও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়।
এভাবেই পরিবারটিতে নতুন চারজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর জন্ম হয়। বাবা-মাসহ পরিবারের ছয়জন সদস্যের মধ্যে পাঁচজনই দৃষ্টিশক্তিহীন। নুরজাহানই সংসারটির একমাত্র সুস্থ ও উপার্জনক্ষম ছিলেন। সর্বশেষ ৯ বছর আগে নুরজাহান-এন্তাজুল দম্পতির সংসারে সুস্থ-সবল শিশু সেমন ইসলামের জন্ম হয়। তাঁদের সাতজনের পরিবারে পাঁচজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।
এরই মধ্যে বড় দুই ছেলে বিয়ে করেছেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দুই ছেলেকে বিয়ে করতে কোনো সুস্থ মেয়ে রাজি না হওয়ায় একজন মানসিক ও একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী মেয়েকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে পরিবারে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতজনে। বড় দুই ছেলের ঘরে সন্তান হয়েছে। তবে ওরা সুস্থ-স্বাভাবিক আছে।
বর্তমানে এই সাতজন প্রতিবন্ধীর সংসার চলে দোতারা বাজিয়ে গান করা বড় ছেলে নুরুন্নবীর আয় দিয়ে। বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামগঞ্জে গান গেয়ে ও শারীরিক কসরত দেখিয়ে থাকেন তিনি। গানে আয় হলে পেটে ভাত জোটে, না হলে উপোস থাকতে হয় তাদের। জীবনের অনেক রাত তাদের অভুক্ত কেটেছে।
ছোটবেলায় নুরুন্নবী স্থানীয় আরডিআরএস প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে কয়েক মাস পড়াশোনা করেন তিনি। সেখান থেকেই দোতারা বাজানো শেখেন। পরবর্তীকালে নিজের প্রচেষ্টায় গান শুরু করেন।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ নুরজাহান ঝিয়ের কাজে অক্ষম হলে খাদ্যসংকটে পড়ে পরিবারটি। নিরুপায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবীকে সংসারের হাল ধরতে হয়। লাঠি ও ছোট যানবাহনের সাহায্যে বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দোতারা বাজিয়ে গান ও শারীরিক কসরত দেখান তিনি। নিজের ও তাঁর পরিবারে করুণ চিত্র তুলে ধরে গান রচনাও করেছেন তিনি।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় তাঁদের সাতজন প্রতিবন্ধীর ছয়জনই ভাতা পাচ্ছেন। প্রতি মাসে জনপ্রতি ৭০০ টাকা এবং নুরুন্নবীর দোতারায় গানের আয়ে চলছে ১০ সদস্যের সংসার।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবী বলেন, ‘গান-বাজনা করতে হাটে-বাজারে যেতে হয়। সেখানে একা যাওয়া এবং আসর জমানো কষ্টকর। প্রথম দিকে অন্যের সহায়তা নিতাম। কিন্তু যাকেই সঙ্গে রাখি, সে চুরি করে। তাই একাই চলি। গান গেয়ে ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলছে। আমাকে স্থায়ীভাবে স্বাবলম্বী করার পথ করে দিতে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে অনুরোধ রইল।’
নুরুন্নবীর বাবা এন্তাজুল বলেন, ‘প্রথমদিকে স্ত্রীর আয়ে আর পরে বড় ছেলের দোতারার গানে চলছে সংসার। সুস্থ কোনো ছেলে অন্ধ মেয়েকে বিয়ে করে না। তাই দুজন প্রতিবন্ধীর সঙ্গে দুই ছেলের বিয়ে দিয়েছি। বড় ছেলের শ্বশুর-শাশুড়িও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।’
স্থানীয় দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নু বলেন, ওই পরিবারের ছয়জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে সরকারিভাবে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। নুরুন্নবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও তাঁর দোতারার সুর ও গান বেশ ভালো।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার বলেন, একই পরিবারের সাতজন প্রতিবন্ধীর মধ্যে ছয়জন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। ভাতার বাইরে থাকা একজনকেও ভাতার আওতায় আনতে প্রক্রিয়া চলছে।
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে আট সদস্যের এক পরিবারে সাতজনই প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে পাঁচজন দৃষ্টি, একজন মানসিক ও একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ভাতার বাইরে পরিবারটির আয়ের একমাত্র উৎস বড় ছেলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবী (২৬)। তিনি হাটে-ঘাটে দোতারা বাজিয়ে গান গেয়ে যা আয় করেন, তাই দিয়ে চলে সংসার।
জানা গেছে, জন্মলগ্ন থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এন্তাজুল হক। তবে পরিবারে শারীরিকভাবে একমাত্র সুস্থ তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বেগমের উপার্জনেই চলত সংসার। একপর্যায়ে সংসারে প্রথম সন্তান নুরুন্নবীর জন্ম হয়। কিন্তু সেও বাবার মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়। দুই বছর পর দ্বিতীয় সন্তান নুর আলমও (২৪) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়। একইভাবে তৃতীয় সন্তান লিমন ইসলাম (২২) ও চতুর্থ সন্তান রেশমা (১৩) জন্ম নেয়। তারাও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়।
এভাবেই পরিবারটিতে নতুন চারজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর জন্ম হয়। বাবা-মাসহ পরিবারের ছয়জন সদস্যের মধ্যে পাঁচজনই দৃষ্টিশক্তিহীন। নুরজাহানই সংসারটির একমাত্র সুস্থ ও উপার্জনক্ষম ছিলেন। সর্বশেষ ৯ বছর আগে নুরজাহান-এন্তাজুল দম্পতির সংসারে সুস্থ-সবল শিশু সেমন ইসলামের জন্ম হয়। তাঁদের সাতজনের পরিবারে পাঁচজনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।
এরই মধ্যে বড় দুই ছেলে বিয়ে করেছেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দুই ছেলেকে বিয়ে করতে কোনো সুস্থ মেয়ে রাজি না হওয়ায় একজন মানসিক ও একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী মেয়েকে বিয়ে করেন। এ নিয়ে পরিবারে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় সাতজনে। বড় দুই ছেলের ঘরে সন্তান হয়েছে। তবে ওরা সুস্থ-স্বাভাবিক আছে।
বর্তমানে এই সাতজন প্রতিবন্ধীর সংসার চলে দোতারা বাজিয়ে গান করা বড় ছেলে নুরুন্নবীর আয় দিয়ে। বিভিন্ন হাট-বাজার ও গ্রামগঞ্জে গান গেয়ে ও শারীরিক কসরত দেখিয়ে থাকেন তিনি। গানে আয় হলে পেটে ভাত জোটে, না হলে উপোস থাকতে হয় তাদের। জীবনের অনেক রাত তাদের অভুক্ত কেটেছে।
ছোটবেলায় নুরুন্নবী স্থানীয় আরডিআরএস প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে কয়েক মাস পড়াশোনা করেন তিনি। সেখান থেকেই দোতারা বাজানো শেখেন। পরবর্তীকালে নিজের প্রচেষ্টায় গান শুরু করেন।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ নুরজাহান ঝিয়ের কাজে অক্ষম হলে খাদ্যসংকটে পড়ে পরিবারটি। নিরুপায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবীকে সংসারের হাল ধরতে হয়। লাঠি ও ছোট যানবাহনের সাহায্যে বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে দোতারা বাজিয়ে গান ও শারীরিক কসরত দেখান তিনি। নিজের ও তাঁর পরিবারে করুণ চিত্র তুলে ধরে গান রচনাও করেছেন তিনি।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় তাঁদের সাতজন প্রতিবন্ধীর ছয়জনই ভাতা পাচ্ছেন। প্রতি মাসে জনপ্রতি ৭০০ টাকা এবং নুরুন্নবীর দোতারায় গানের আয়ে চলছে ১০ সদস্যের সংসার।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নুরুন্নবী বলেন, ‘গান-বাজনা করতে হাটে-বাজারে যেতে হয়। সেখানে একা যাওয়া এবং আসর জমানো কষ্টকর। প্রথম দিকে অন্যের সহায়তা নিতাম। কিন্তু যাকেই সঙ্গে রাখি, সে চুরি করে। তাই একাই চলি। গান গেয়ে ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চলছে। আমাকে স্থায়ীভাবে স্বাবলম্বী করার পথ করে দিতে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে অনুরোধ রইল।’
নুরুন্নবীর বাবা এন্তাজুল বলেন, ‘প্রথমদিকে স্ত্রীর আয়ে আর পরে বড় ছেলের দোতারার গানে চলছে সংসার। সুস্থ কোনো ছেলে অন্ধ মেয়েকে বিয়ে করে না। তাই দুজন প্রতিবন্ধীর সঙ্গে দুই ছেলের বিয়ে দিয়েছি। বড় ছেলের শ্বশুর-শাশুড়িও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।’
স্থানীয় দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নু বলেন, ওই পরিবারের ছয়জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে সরকারিভাবে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। নুরুন্নবী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও তাঁর দোতারার সুর ও গান বেশ ভালো।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার বলেন, একই পরিবারের সাতজন প্রতিবন্ধীর মধ্যে ছয়জন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। ভাতার বাইরে থাকা একজনকেও ভাতার আওতায় আনতে প্রক্রিয়া চলছে।
মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতে গত এক বছরের বেশি সময়ে সাময়িকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠীর ৭১ জন স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে গেল। তারা সবাই ১৫ তঞ্চঙ্গ্যা পরিবারের সদস্য। আজ বুধবার ও আগের দিন মঙ্গলবার তাঁদের ফেরত পাঠায় ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত...
১ মিনিট আগেলক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ওমানপ্রবাসীর স্ত্রী দুই সন্তানের জননী এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হকবাজারসংলগ্ন বেড়িবাঁধের ওপরে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।
৭ মিনিট আগেপৌনে ৬ কোটি টাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ঠিকাদার ছিলেন পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইফতি ইটিসিএল প্রাইভেট লিমিটেডের কর্ণধার। ঠিকাদার মিরাজুল পিরোজপুর-২ (কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও নেছারাবাদ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের ছোট ভাই।
৪১ মিনিট আগেদীর্ঘ ২৩ বছর পর বগুড়ার শিবগঞ্জের আনারুল হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এই মামলায় একমাত্র আসামি আজিজার রহমানকে (৬২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
১ ঘণ্টা আগে