Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁওয়ে টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসল, বীজতলা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৪, ১৬: ৪৮
Thumbnail image

কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণে ঠাকুরগাঁওয়ে রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা তলিয়ে গেছে। এই পানি দ্রুত সরে না গেলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, পানিতে ফসলের কিছু ক্ষতি হলেও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

আজ শুক্রবার সদর উপজেলার সালান্দর, বেগুনবাড়ী, গড়েয়াসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ জমির ফসল পানিতে তলিয়ে রয়েছে। অনেক কৃষকের বীজতলা পানির নিচে। আবার যারা বীজতলায় চারা লাগিয়েছে, সেই চারা পচতে শুরু করেছে।

সদরের বেগুনবাড়ী এলাকার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগে জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছি। কিন্তু কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গাছের চারা পচে যাচ্ছে।’

একই এলাকার নুর হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, পানি নিষ্কাশন না হলে আমনের বীজতলার চারা পচে যাবে। তখন আমন রোপণ করতে হলে আবার উচ্চ দামে বীজ কিনে খেতে রোপণ করতে হবে।

অন্যদিকে ভুট্টাখেতে পানি জমে যাওয়ায় কাণ্ড ও মোচায় পচন ধরতে শুরু করেছে। অনেকে আবার ভুট্টার মোচা সংগ্রহ করে বাড়ির উঠানে রেখেছে। টানা বর্ষণে মোচা থেকে ভুট্টা ছাড়ানো যাচ্ছে না। অনেক কৃষক মোচা থেকে ভুট্টা ছাড়িয়ে পড়েছেন বিপাকে। রোদ না থাকায় ভুট্টাগুলো কালো রং ধারণ করেছে। সদরের সালান্দর এলাকার ভুট্টাচাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে রোদ না উঠলে তাঁর তিন বিঘা জমির ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাবে।

এদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে পাটের আবাদ। সদরের মোহাম্মদপুর এলাকার পাটচাষি শাহরুল আলম বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে অধিকাংশ পাটখেতে পানি জমে গেছে। এ কারণে পাটের নিচের অংশে শেকড় গজিয়েছে। এতে এসব গাছের আঁশ নষ্ট হয়ে যাবে।

জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার মালাকার বলেন, ‘পাট উঁচু জমিতে চাষের পরামর্শ দিয়ে থাকি। জমিতে জলাবদ্ধতা থাকলে পাটে শেকড় গজায়। পরে ওই পাট থেকে আঁশ হয় না। কৃষকদের এ মুহূর্তে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি।’

ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ইক্ষু উন্নয়ন সহকারী হাফিজুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত বর্ষণের ফলে আখের গোড়া নরম হয়ে উপড়ে পড়ে যাচ্ছে। তাতে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুয়ায়ী, জেলায় এ বছর ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত চাষ করা হয়েছে ১১০০ হেক্টর জমিতে। অন্যদিকে চলতি মৌসুমে ভুট্টা আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। পাটের আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের উপপরিচালক সিরাজুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এই বৃষ্টিতে আমনের বীজতলা নষ্ট হবে না। এ ছাড়া ১৫ দিন যদি পানিতে তলিয়ে থাকে, তাহলেও বীজতলার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে পাট ও ভুট্টার কিছুটা ক্ষতি হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত