Ajker Patrika

তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজশাহী, বিপর্যস্ত জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী    
তীব্র গরমে স্বস্তি পেতে কিশোরেরা নৌকা থেকে পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে গোসল করছে। আজ শনিবার দুপুরে নগরীর ফুলতলা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
তীব্র গরমে স্বস্তি পেতে কিশোরেরা নৌকা থেকে পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে গোসল করছে। আজ শনিবার দুপুরে নগরীর ফুলতলা এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সকাল নামতেই সূর্য ঝলসে উঠছে, দুপুর গড়াতে না গড়াতেই গলতে শুরু করছে সড়ক-মহাসড়কের পিচ। কয়েক দিনের মৃদু ও মাঝারি তাপপ্রবাহের পর আজ শনিবার শুরু হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। গরমে মানুষের পাশাপাশি কাহিল হয়ে পড়েছে গবাদিপশুসহ প্রাণীরা।

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, শনিবার বিভাগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ওঠে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত কয়েক দিনই রাজশাহীর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই করছিল। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়।

গত তিন দিন তীব্র গরমে জনজীবন হাঁসফাঁস হয়ে উঠেছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত রাস্তায় বের হলে মনে হয়, যেন শরীরে আগুনের শিখা লাগছে। পিচঢালা সড়কগুলোর পিচ গলে যাচ্ছে। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। রিকশাচালক, দিনমজুরদের সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়তে হচ্ছে। পেটের তাগিদে তাঁদের প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও বাইরে কাজ করতে হচ্ছে। মাঠে মাঠে বোরো ধান কাটার শ্রমিকেরাও কষ্ট পাচ্ছেন প্রচণ্ড গরমে।

নগরের সাহেববাজার আরডিএ মার্কেটের কাপড়ের ব্যবসায়ী সুলতান আহমেদ বলেন, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে তেমন বিক্রি নেই। মানুষ তাপ থেকে বাঁচতে ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না। দোকানে ক্রেতার সংকট। তবে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে আখের রস ও শরবতের বিক্রি বেড়েছে। গরমে একটু স্বস্তি পেতে অনেকেই ঠান্ডা শরবত কিনে পান করছেন।

উপশহরের বাসিন্দা সাবিয়ার রহমান বলেন, ‘এখন একটু বৃষ্টি খুব দরকার। কিন্তু রাজশাহীর আকাশে মেঘ নেই, বাতাসও নেই। পুরো প্রকৃতি থেমে আছে। এ অবস্থায় কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষকে ভীষণ কষ্ট করতে হচ্ছে।’

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া সহকারী আনোয়ারা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাজশাহীতে এখন তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। আগামীকাল রোববার (১১ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো, বৃষ্টি কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত