Ajker Patrika

সিরাজগঞ্জে ভাই ও ভাবিকে দায়ী করে ব্যবসায়ীর ‘আত্মহত্যা’

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে ভাই ও ভাবিকে দায়ী করে ব্যবসায়ীর ‘আত্মহত্যা’

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রদীপ কুমার দেব (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার মশিপুর সরিষাকোল মাদ্রাসা বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় তাঁর পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। যেখানে লেখা ছিল, তাঁর মৃত্যুর জন্য ভাই ও ভাবি দায়ী।

প্রদীপ কুমার ওই বাজারের প্রদীপ স্টোরের মালিক ও দুর্গাদহ গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন দেবের ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান ও শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মৃধা।

প্রদীপ কুমার দেবের স্বজনেরা বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে প্রদীপ কুমারের সঙ্গে তাঁর বড় ভাই ষষ্ঠী কুমার দেবের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এলাকার প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় প্রদীপের বসতঘর ভাঙার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছিলেন বড় ভাই। গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রদীপ বাড়ি থেকে দোকানের উদ্দেশে বের হন। বিকেলে এক ব্যক্তি প্রদীপের দোকানের সাটার বন্ধ দেখতে পান। তবে সাটারে তালা লাগানো ছিল না। পরে তিনি সাটার তুলে দোকানে ঢুকে প্রদীপকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তাঁর ডাকাডাকি শুনে স্থানীয়রা গিয়ে পুলিশে খবর দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে প্রদীপের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। এ সময় প্রদীপের গায়ে থাকা শার্টের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে ‘আমার মৃত্যুর জন্য বড় ভাই ও ভাবি দায়ী’ কথাটা আটবার লেখা ছিল। সেই লেখার নিচে প্রদীপের স্বাক্ষরও ছিল।

প্রদীপ কুমারের স্ত্রী চম্পা রানী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাশুর ও তাঁর স্ত্রী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের ঘর ভাঙার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন। এ কারণে আমার স্বামী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। তাঁদের অত্যাচারে তিনি রাতে ঘুমাতে পারতেন না। তাঁদের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’

এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রদীপ কুমার ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হতো। সেই সঙ্গে তাঁদের এজমালি বাড়ির বাঁটোয়ারার কারণে তাঁর বসতঘর ভেঙে অন্যত্র সরানোর কথা ছিল। এসব বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গেও মনোমালিন্য চলছিল। এসব কারণে অভিমানে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।

তবে ওসি বলেন, ‘প্রদীপের পকেটে মৃত্যুর জন্য বড় ভাই ও ভাবিকে অভিযুক্ত করে চিরকুট পাওয়ার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত