Ajker Patrika

সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

রাবি প্রতিনিধি
সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে হাইকোর্টের কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এই প্রতিবাদ জানান তারা। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘মেধাভিত্তিক নিয়োগ চাই, প্রতিবন্ধী ছাড়া কোটা নাই’, ‘সকল কোটা বাতিল হোক, মেধাবীদের চাকরি হোক’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। 

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা সরকারি চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবি জানান। মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের চাকরি না দিয়ে বৈষম্যের সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা। 

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আমানুল্লা আমান বলেন, ‘২০১৮ সালে ঢাবি, রাবি, চবিসহ সারা বাংলায় কোটার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের গণ-আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, যদি সোনার বাংলা গড়তে হয় তাহলে কোটা প্রথা বিলুপ্ত করা হবে। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল হাইকোর্টে রিট করে আবারও কোটা ব্যবস্থা চালু করেছে। যা মুক্তিযুদ্ধর চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক, এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। আমরা আমাদের বাবা মায়ের ধান বিক্রির টাকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছি। আমাদের পিতামাতার স্বপ্নকে নিয়ে কোনো ছেলে খেলা আমরা কখনোই মানব না।’ 

রাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকাআইন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সানজিদা ঢালী বলেন, ‘পাকিস্তান আমলের বৈষম্য সৃষ্টির ফলে আমাদের যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, সেই বৈষম্য যদি তাদের প্রজন্মের মাধ্যমে পুনরায় ফিরে আসে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নারী কোটারও বিরোধিতা করছি। কারণ আমার মধ্যে যদি মেধা-দক্ষতা থাকে তাহলে নিজ যোগ্যতায় আমি চাকরি অর্জন করতে পারব। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মেয়ের সে সক্ষমতা আছে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো কোনো কোটার মাধ্যমে দেশ শাসনে আসেনি। তিনি নিজ যোগ্যতায় এখানে এসেছেন। এখানে আসার জন্য তার কোনো কোটার দরকার হয়নি। তবে সরকারি চাকরিতে কেন কোটার দরকার হবে? 

ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নিকট আহ্বান সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন না, যে সিদ্ধান্তে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করতে চান তাহলে তাদের স্বর্ণখচিত আবাসনের ব্যবস্থা করে দেন, তাদেরকে প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা সম্মানী দেন। বাংলাদেশের কোনো ছাত্রসমাজ তার বিরুদ্ধে কথা বলবে না। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীর মেধার ক্ষেত্রে এ ধরনের কোটার বৈষম্যের সৃষ্টি করবেন না। তাহলে ছাত্ররা তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলবে। রাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তি পেতে ১৯৭১ সালে যে রক্ত দিয়েছিল কিন্তু আজ ২০২৪ সালে এসে এই বৈষম্যের স্বীকার হতে যাচ্ছে যা কোন সাধারণ শিক্ষার্থী মেনে নিবে না। 

রাবিতে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকামানববন্ধন কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এহসানুল মারুফ। এ সময় বিভিন্ন বিভাগের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত