Ajker Patrika

রাজশাহীতে হাটে হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়, রেহাই পাচ্ছেন না বিক্রেতাও

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়। আজ বুধবার রাজশাহীর সিটিহাটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়। আজ বুধবার রাজশাহীর সিটিহাটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে রাজশাহীর কোরবানির পশুর হাটগুলো। হাটে প্রচুর পরিমাণে কোরবানির পশু নিয়ে এসেছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। বেচাকেনাও জমে উঠেছে। তবে প্রায় প্রতিটি হাটেই অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো হাটেই ইজারার শর্ত মানা হচ্ছে না।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছী পশুর হাটে প্রতিটি ছাগল ও ভেড়ার জন্য ২০০ টাকা করে হাসিল নির্ধারিত আছে। এ ছাড়া গবাদিপশুর ক্ষেত্রে কেবল ক্রেতাদের কাছ থেকে খাজনা নেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু এ হাটে একজন ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।

আজ বুধবার সরেজমিনে বিভিন্ন হাটে দেখা যায়, নির্দেশনা থাকার পরও নন্দনগাছী পশুর হাটে হাসিলের কোনো তালিকা টাঙানো হয়নি। বাংলা ১৪৩২ অর্থবছরে ৭৮ লাখ টাকায় হাটটির ইজারা নিয়েছেন ধর্মহাটা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান। তিনি প্রথমে দাবি করেন, অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে না। পরে ইজারাদার বলেন, অনেক টাকায় ছাগল-ভেড়ার এই হাট ইজারা নিয়েছেন। বেশি টাকা না নিলে টাকা উঠবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর সব হাটেই অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা হচ্ছে। গোদাগাড়ীর মহিষালবাড়ী পশুর হাটে একটি ছাগলের জন্যই আদায় করা হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। অথচ ছাগলের হাসিল ৩০০ টাকা নির্ধারিত। গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট পশুর হাটে গরুপ্রতি ৮০০ টাকা ও ছাগলপ্রতি ৫০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তানোরের মুণ্ডুমালা হাটেও গরুপ্রতি ৭০০ ও ছাগলপ্রতি ৪০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা হাটে গরুর জন্য ৭০০ ও ছাগলের জন্য ২৪০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়। আজ বুধবার রাজশাহীর সিটিহাটে। ছবি: আজকের পত্রিকা
কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়। আজ বুধবার রাজশাহীর সিটিহাটে। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট সিটিহাট। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) এই হাট ইজারা দেয়। এ হাটে গরুপ্রতি হাসিল ৭০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে রাসিক। তবে ইজারাদারের লোকজন আদায় করেন ৮০০ টাকা। অভিযোগ পেয়ে গত সোমবার সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা গিয়ে আদায়কারীদের সতর্ক করে আসেন। এরপরও গতকাল মঙ্গলবার ও আজ হাটে ক্রেতাদের কাছ থেকে ৮০০ টাকা করে আদায় করতে দেখা গেছে।

গতকাল বিকেলে হাটে গরু কিনতে এসেছিলেন কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা কবিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘হাটে হাসিল বেশি নেবে, এটাই এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ইজারার শর্ত কয়জন মানে? একা প্রতিবাদ করে লাভ নাই। তাই ৮০০ টাকাই দিয়ে দিলাম।’

অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়ে স্বীকার করেছেন আদায়কারীরাও। তাঁরা বলছেন, ৭০০ টাকা হাসিল নির্ধারিত হলেও তাঁরা ৮০০ টাকা আদায় করছেন। ১০০ টাকা বেশি না নিলে তাঁদের চলবে না। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ইজারাদার শওকত আলীকে আজ দুপুরে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।

রাসিকের সচিব রুমানা আফরোজ বলেন, ‘অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ এমনটি করে থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে কর করা হলে তিনি তা ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত