Ajker Patrika

সাফজয়ী ফুটবলার আঁখির বাবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, ২ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২০: ১১
Thumbnail image

বাংলাদেশের সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের সদস্য আঁখি খাতুনের বাবাকে থানায় ধরে নিয়ে হুমকি ও শাসানোর অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল এ নির্দেশ দেন।

প্রত্যাহার হওয়া ওই দুই পুলিশ সদস্য হলেন—শাহজাদপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা।

পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মন্ডল জানান, নারী ফুটবলার আঁখির বাবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় এক এএসআই ও এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে সহকারী পুলিশ সুপারকে (শাহজাদপুর সার্কেল) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, আঁখি খাতুনকে বরাদ্দ দেওয়া খাস খতিয়ানভুক্ত ৮ শতাংশ জমির দখল নিয়ে আদালতে মামলা করেন হাজী মকরম প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় আঁখিসহ ৫ জনকে বিবাদী করা হয়। গতকাল বুধবার রাতে মামলার নোটিশ নিয়ে এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা তাঁর বাড়ি শাহজাদপুরের পারকোলায় যান। এ সময় আঁখির বাবা আক্তার হোসেনকে নোটিশে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি রাজি হননি। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আঁখির বাবাকে পুলিশ শাসায় এবং থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে গণমাধ্যম ও ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) আঁখির বাবার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।

চলতি বছরের ৪ জুন সিরাজগঞ্জ অফিসার্স ক্লাবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এই ৮ শতাংশ জমি হস্তান্তর করেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।

আঁখির বাবা ও মা।আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, ‘গতকাল বুধবার বিকেলে শাহজাদপুর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনসহ কয়েকজন পুলিশ আমাদের বাড়িতে আসেন। এ সময় তাঁরা বলেন, সরকারের দেওয়া আঁখির জমির ওপরে আদালত থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরে এএসআই মামুন একটি কাগজে সই দিতে বলেন। আমি না জেনে কাগজে সই করতে চাইনি। তাঁরা আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।’

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটবলার আঁখির জন্য ১নং খাস খতিয়ানের একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি হাজী মকরম প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি ওই জমি তাঁর দখলে রয়েছে দাবি করে মামলা করেছেন। তবে মামলায় তিনি ওই জমির মালিকানা দাবি করেননি। মামলার তফসিলে খতিয়ানও উল্লেখ করেননি। প্রকৃতপক্ষে আঁখিকে দেওয়া জমিটি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। আঁখির পরিবার যাতে ওই জমি না পায়, সে জন্য একটি চক্র এই মামলা করিয়েছে।’

তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেকোনো জমি নিয়ে মামলা হতেই পারে। মামলার পর প্রক্রিয়া অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পক্ষদ্বয়কে নোটিশ দিতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এখানে তেমনটাই ঘটেছে।’

এর আগেও আঁখি খাতুনকে সরকারিভাবে একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই জমির মালিকানা দাবি করে শাহজাদপুরের একজন ব্যবসায়ী মামলা করেছিলেন। পরে  ওই জমির বরাদ্দ বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ শাহজাদপুর পৌর এলাকার দ্বাবারিয়া মৌজায় খাস খতিয়ানভুক্ত ৮ শতাংশ এই জমিটি বরাদ্দ দেন। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে আঁখির বাবা-মায়ের হাতে ওই জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত