Ajker Patrika

কাটা বটগাছ নিয়ে ‘লাল সালুর’ ফাঁদ

কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ২২: ৪৮
Thumbnail image

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের স্থলবাড়ি গ্রামের মধ্যপাড়ায় ঝড়ে পড়ে যাওয়া বটগাছ নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পড়ে যাওয়া সেই গাছটির ডালপালা কাটার পর আবার উঠে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনাকে ঘিরে ওই গ্রামের একটি মহল মাজার তৈরি করে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। এ যেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ  ‘লালসালু’ উপন্যাসের মতোই প্রতারণার এক ফাঁদ।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ঈদুল ফিতরের একদিন আগে কাল বৈশাখীর ঝড়ে লন্ডভন্ড হয় পুরো এলাকা। ওই দিনের ঝড়ে একটি বিশাল আকৃতির বট গাছ উপড়ে যায়। এর কয়েক দিন পরে গাছটি বিক্রি করে দেন মালিক। গাছের ব্যাপারী শ্রমিক দিয়ে ডালপালাও কেটে চলে যান। এরপর আজ শনিবার সকালে গাছটি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। 

ঝড়ে উল্টে যায় পর বটগাছটি পাশে হেলে পড়ে যায়। আজ বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ডালপালা ছাঁটা গাছটি দাঁড়িয়ে আছে। ওই স্থানে স্থানীয়রা বাঁশের বেড়া দিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছেন। টাকা তোলার জন্য জায়নামাজ বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ টাকা পয়সা দিতে শুরু করেছেন। ঘটনাটি দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে এসে হাজার হাজার উৎসুক জনতা ভিড় করছেন। 

এ নিয়ে স্থানীয় জলিম উদ্দিন বলেন, ‘ফজরের নামাজ পইড়া যাওয়ার সময় দেহি গাছ শুইয়াই আছে। পরে ৭টার সময় দেহি কয়েক মিনিটের মধ্যে খাঁড়া হয়া গ্যাছে। জায়নামাজ পাইরা দিছি। টাকা তুইলা জুম্বাত দিমু।’ 

পড়ে যাওয়া বটগাছটির বর্তমান অবস্থা। ঘটনাটি দেখতে আসা আলমপুর গ্রামের সোহাগ মিয়া জানান, ‘শুনেছি এখানে পড়ে যাওয়া বট গাছ নিজে নিজেই দাঁড়িয়ে গেছে। অলৌকিক এই ঘটনা দেখতে এসেছি।’ 

গাছটির মালিক শিবলু রহমান বলেন, ৭ হাজার টাকায় গাছ বিক্রি করে দিয়েছি। কাটাও শুরু করেছিল ব্যাপারী। হঠাৎ আজকে সকালে গাছটি দাঁড়িয়ে গেছে। গাছটির চারদিকে বাঁশের বেড়া দিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছি। 

পড়ে যাওয়ার পর দাঁড়িয়ে ওঠা বটগাছটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করছে। এ বিষয়ে ওই এলাকার মুফতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘গাছটির আগার চেয়ে গোড়ার ওজন হয়তো বেশি ছিল। তাই পূর্বের অবস্থায় দাঁড়িয়ে গেছে। বিষয়টিকে পুঁজি করে মাজার তৈরি করা একটি বেদাত কাজ। এখানে জায়নামাজ বিছিয়ে টাকা তুলে মসজিদ দেওয়া নাজায়েজ।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য কেএম আনোয়ার হোসেন জানান, ‘ঘটনা শোনার পরে আমি এখানে এসেছিলাম। গাছের গোড়ায় ওজনের পরিমাণ বেশি ছিল তাই দাঁড়িয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে যাতে এলাকায় বিশৃঙ্খলা না হয় সেদিকে নজর রাখছি।’ 

এ নিয়ে কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, লোকমুখে ঘটনা শুনেছি। সরেজমিন খোঁজ নিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত