Ajker Patrika

চোর-ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য নারায়ণগঞ্জের সড়ক-মহাসড়ক

  • তিন মাসে চুরি-ছিনতাইয়ের ৬৮ মামলা।
  • পুলিশের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা।
  • জনবলসংকটের মধ্যেও নিয়মিত টহল চালানো হয়, দাবি পুলিশের।
শরিফুল ইসলাম তনয়, সিদ্ধিরগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চোর-ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সড়ক-মহাসড়ক। বিশেষ করে রাত হলেই বেড়ে যায় দুর্বৃত্তদের উৎপাত। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় গত তিন মাসে ৫১টি চুরি এবং ১৭টি ছিনতাইয়ের মামলা করা হয়েছে; কিন্তু বাস্তবে এর সংখ্যা আরও বেশি। আইনি জটিলতা এড়াতে অনেকেই মামলা করা থেকে বিরত থাকেন। এ ছাড়া থানা থেকে প্রতিকার না পাওয়ার কথাও বলছেন অনেকে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, চলন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। ফলে রাতের বেলায় আতঙ্ক নিয়ে সড়ক-মহাসড়ক পার হতে হয়।

সাইনবোর্ড এলাকার ব্যবসায়ী মাসুম বলেন, আগে জায়গায় জায়গায় পুলিশের চেকপোস্ট ছিল, নিরাপত্তা ভালো ছিল। এখন সড়কে পুলিশ থাকে না বললেই চলে। সিএনজিচালক আবুল কালাম বলেন, সবচেয়ে বেশি ছিনতাই হয় নারায়ণগঞ্জের লিংক রোডের ভুইগর চানমারি এলাকায়। একসময় রাত ১১টা পর্যন্ত সিএনজি চালালেও এখন চালাই ৮টা পর্যন্ত। অটোরিকশাচালক পারভেজ বলেন, শহরে ছিনতাইকারী বেড়েছে। আগে সড়কে অনেক পুলিশ দেখা যেত। এখন তাদের ডাকলেও আসতে চায় না। পুলিশ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করলে এ সংকট কমে যেত।

স্থানীয়রা বলছেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে রাতে সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টগুলো তৎপর ছিল। তবে বর্তমানে আগের মতো পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায় না। এর সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা। তবে পুলিশ বলছে, পরিবহন ও জনবল সংকটের মধ্যেও তারা নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চুরি-ছিনতাই রোধেও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বছরখানেক আগে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান নূর। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একদল লোক সাদাপোশাকে এসে অস্ত্র ঠেকিয়ে আমার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে যায়। ঘটনার পর দ্রুত থানা-পুলিশ ও র‍্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে জিডি করি; কিন্তু এখনো কিছু ফেরত পাইনি।’

ইমাম হাসান নামের আরেক সংবাদকর্মী বলেন, মহাসড়ক এখন অরক্ষিত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগের মতো পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। সন্ধ্যা হলেই ছিনতাইকারীর সংখ্যা বেড়ে যায়। অটোরিকশা বা সিএনজিতে চলাচলের সময় অন্যদের মধ্যে কে ছিনতাইকারী আর কে সাধারণ মানুষ—তা বোঝার সুযোগ নেই। পুলিশের কাছ থেকেও তেমন সহযোগিতা মেলে না।

নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘চিহ্নিত কিছু স্থানে আমাদের টহল দল সব সময় অবস্থান করে। ছিনতাই রোধে প্রায়ই বিশেষ অভিযান চালানো হয়। পুলিশের তৎপরতা না থাকলে অপরাধের মাত্রা আরও বেশি হতো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ