Ajker Patrika

কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম: বেঘোরে মরছে বিভাজকের বকুল

  • এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের দায়ী করছেন সওজের কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা।
  • স্থানীয়দের দাবি, সওজের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আগুন দিচ্ছেন।
  • গত বছরও এই সময়ে এই বিভাজকে দুষ্কৃতকারীরা আগুন দিয়ে বেশ কিছু গাছ মেরেছে: ফায়ার সার্ভিস
মো. আকতারুজ্জামান  চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) 
আগুনে ঝলসে যাওয়া সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের বকুলগাছ। গতকাল কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের হায়দার পুল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আগুনে ঝলসে যাওয়া সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের বকুলগাছ। গতকাল কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের হায়দার পুল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের হায়দার পুল থেকে ফাল্গুনকরা মাজার অংশে বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের বকুলগাছগুলো আগুনে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এই ঘটনায় সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের। আর স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সওজের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সময় বাঁচাতে আগুন দিচ্ছেন।

সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে দেখা যায়, মহাসড়কের চার লেনের ফাল্গুনকরা মাজার থেকে হায়দার পুল পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়ক বিভাজকে লাগানো বকুলগাছগুলো মেরে ফেলতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আগুন দিয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, থানা থেকে আমাদের ফোন করে জানানো হয়, মহাসড়কের মাঝখানে বিভাজকের ফাল্গুনকরা মাজার থেকে হায়দার পুল পর্যন্ত কে বা কারা আগুন দিয়েছে। দ্রুত এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনে বিভাজকের বকুলগাছগুলো মরে যাচ্ছে। গত বছরও এই সময়ে এই বিভাজকের মাঝখানে দুষ্কৃতকারীরা আগুন দিয়ে বেশ কিছু গাছ হত্যা করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতেই সড়কের এই অংশের বকুলগাছের নিচে আগুন জ্বলেছে। এতে করে বকুলগাছগুলোর ডালপালা ঝলসে গেছে। গত বছরের মার্চ মাসে সড়কের এই স্থানে আগুনে ঝলসে যায় অর্ধশতাধিক বকুলগাছ। সেই সময়ে সওজ কুমিল্লা অঞ্চলের আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা থমকে যায়।

স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কের চার লেনের বিভাজকের মাঝখানে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো গাছগুলো পরিচ্ছন্ন রাখতে সওজ যে কর্মী নিয়োগ দিয়েছে, তাঁরা সময় বাঁচাতে এবং পরিশ্রম কম করতে আগুন লাগিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে যাচ্ছেন। এতে সরকারের লাগানো এই গাছগুলো মারা যাচ্ছে।

সওজের কুমিল্লা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা গতকাল দুপুরে বলেন, ‘বিভাজকের গাছগুলোকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সওজ কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের মাধ্যমে পরিচ্ছন্নের ব্যবস্থা করেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে বিভাজনের আগাছা পরিষ্কারের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। মহাসড়কের পাশের বাসিন্দারাই বিভাজকের মাঝখানে সবজি চাষ করতে বিভাজকে আগুন দিচ্ছে। আমরা এই ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

তবে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলীর এই দাবিকে অস্বীকার করে আবু তাহের নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘গত সপ্তাহে সওজের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এই বিভাজকের মাঝখানে কাজ করার সময় তাদের সময় ও পরিশ্রম বাঁচাতে আগুন লাগিয়ে আগাছা পরিষ্কারের কাজ করছে, এতে ঝলসে যাচ্ছে গাছগুলো। আর দায় চাপানো হচ্ছে স্থানীয় ব্যক্তিদের ওপর।’

স্থানীয়দের এমন বক্তব্যের ব্যাপারে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এখন তো রাষ্ট্রের নানা সমস্যা চলছে। হয়তোবা তৃতীয় কোনো পক্ষ অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সড়ক বিভাজকে আগুন দিতে পারে।’

চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, ‘সকালে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ