Ajker Patrika

না জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি যাওয়ায় শিশুশিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত, শিক্ষক গ্রেপ্তার

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ মে ২০২৩, ১৮: ৫৭
না জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি যাওয়ায় শিশুশিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত, শিক্ষক গ্রেপ্তার

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় না জানিয়ে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি যাওয়ায় এক শিশুশিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করার অভিযোগ উঠছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার পর ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আজ সোমবার দুপুরে ওই শিক্ষকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে রোববার পৌরশহরের দক্ষিণ বাজার মাদ্রাসাতুল মদিনা নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি পৌরশহরের গোবিন্দনগর এলাকার মো. ভুলু মিয়ার ছেলে। 

এদিকে এ ঘটনায় গতকাল রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

শিক্ষার্থীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই মাদ্রাসায় মদিনায় তৃতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। গত বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষার্থী শিক্ষকদের না বলে বাড়িতে চলে যায়। গতকাল রোববার সকাল ৯টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষার্থীকে পাঠিয়ে তাকে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় নিয়ে যায় অভিযুক্ত ওই শিক্ষক। 

এ সময় মাদ্রাসা থেকে না বলে চলে যাওয়ার কারণে শিক্ষক মোখলেছুর রহমান ওই শিশুশিক্ষার্থীকে বেত দিয়ে মারধর করেন। তার শরীর থেকে পাঞ্জাবি খুলে সেই পাঞ্জাবি দিয়ে দুই হাত পেছন দিকে বাঁধেন। এরপর পরনের পায়জামা নামিয়ে তার পশ্চাৎদেশে ও ঊরুতে বেত দিয়ে বেধড়ক আঘাত করেন। প্রায় আধঘণ্টা মারধরের পর ওই শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরে মাকে জানিয়ে কাঁদতে থাকে। পরে তার মা-বাবা বিষয়টি স্থানীয়দের জানান। এলাকাবাসী ওই পরিবারকে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দেন। 

রোববার রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মোখলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। পরে সোমবার দুপুরে পুলিশ মোখলেছুর রহমানকে আদালতে পাঠায়। 

সোমবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছে। তার পাশে মা বসে আছেন। শরীরের আঘাতে শিশুটি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না বলে জানান তার মা। 

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আজকের পত্রিকাকে বলে, ‘বৃহস্পতিবারে হুজুরকে না বইলা মাদ্রাসা থেকে চইলা আসছিলাম। পরে রোববার সকালে তিন ছাত্ররে দিয়া আমায় ডাকাইয়া নিয়া হুজুর খুব মারছে। আমার পাঞ্জাবি খুলাইয়া হাত বাঁইধা, মুখ চাইপা ধইরা, পরনের পায়জামা নামাইয়া পেছনে বেত দিয়া বাইরাইছে।’ 

আহত শিক্ষার্থীর মা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শরীর খারাপ লাগায় গত বৃহস্পতিবার ছেলে মাদ্রাসা থেকে না বলে বাড়ি চলে আসে। এই অপরাধে আমার ছেলেটারে বাড়ি থাইকা ধইরা নিয়া শিক্ষক এইভাবে মারধর করছে। এতে ছেলেডা শরীরের পেছনে লাল লাল চাক চাক দাগ কইরা ফালাইছে। এই রহম শিশুরে কেউ মারবার পারে? আমি ওই শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই।’ 

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, ‘ওই শিশুর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত ওই শিক্ষককে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত