Ajker Patrika

দুইপক্ষের ঝগড়ায় সরানো হলো শিক্ষামন্ত্রীর হেলিকপ্টার অবতরণের স্থান

জামালপুর প্রতিনিধি
দুইপক্ষের ঝগড়ায় সরানো হলো শিক্ষামন্ত্রীর হেলিকপ্টার অবতরণের স্থান

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি আগামী রোববার জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাসিল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিদর্শন করবেন। তাঁর হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য তৈরি করা হচ্ছে হেলিপ্যাড। কিন্তু রাস্তার পাশে গাছ থাকায় হেলিকপ্টার অবতরণে সমস্যা হবে। এ কারণে জামালপুর-সরিষাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কয়েকটি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। 

এ নিয়ে হাসিল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম এবং স্থানীয় নজরুল ইসলামের বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নূরুল ইসলাম সুযোগ পেলেই রাস্তার পাশের গাছ কাটেন। কয়েক বছর আগেও একই জায়গা থেকে তিনি দুই শতাধিক গাছ কেটেছেন। এই নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি আমার স্কুল পরিদর্শনে আসছেন। তিনি হেলিকপ্টার যোগে আসায় একটি গাছ কাটতে হয়েছে। এই গাছটি আমার জমিতেই। সেই গাছ এলাকার নজরুল ইসলাম তাঁর দাবি করায় পরে হেলিপ্যাড সরিয়ে নিয়েছি।’ 

আগামী রোববার বিকেলে ৪ টার দিকে সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নে হাসিল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিদর্শন করবেন শিক্ষামন্ত্রী। এ খবরে রাস্তার পাশের বেশ কয়েকটি গাছ কেটে হেলিপ্যাড নির্মাণের নির্দেশ দেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাছ কাটা বন্ধ করেন তাঁরা। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হাসিল বটতলা থেকে কামালখান বাজার পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে নানা ধরনের গাছ রয়েছে। এসব গাছ জনগণের জমিতে থাকলেও এখন তা সরকারি গাছ। কিন্তু হঠাৎ করেই কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রকৌশলী নূরুল ইসলামের নির্দেশে রাস্তার পাশে বেশ কয়েকটি গাছ কাটা হচ্ছিল। খবর পেয়ে দুপুরে এলাকাবাসী বাঁধা দেন। পরে এলাকাবাসীর তোপের মুখে গাছ কাটা বন্ধ করতে বাধ্য হয় তাঁরা। 

এই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা হবিবর, সেলিমসহ আরও অনেকে জানান, রাস্তার পাশের এই গাছগুলো তাঁরা রোপণ করেছেন। এখন এসব গাছ রাস্তার সীমানায় পড়ে সরকারি গাছ হয়েছে। সরকার প্রয়োজনে এসব গাছ কাটলে তাঁদের কোনো দাবি নেই। কিন্তু স্থানীয় কাউকে তাঁরা এসব গাছ কাটতে দেবেন না।

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, যে স্থানে গাছ কাটা হচ্ছে তার পাশের জমির অবৈধ মালিকানা দাবি করেন প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম। জমির মালিক না হয়েও কয়েক বছর আগে এই জমি থেকে প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটেছিলেন তিনি। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। ফের গাছ কাটা শুরু করেছেন মন্ত্রীর স্কুল পরিদর্শনের অজুহাতে। তাঁর কাজই এই প্রকৃতির। 

জানতে চাইলে প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম বলেন, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি স্কুল পরিদর্শনে শিক্ষামন্ত্রী ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রী আসবেন। তাঁদের বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য ফাঁকা জায়গা দরকার। তাই স্কুলের পাশে ফাঁকা জায়গায় হেলিপ্যাড তৈরির জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। এখন কে গাছ কেটেছে চেয়ারম্যানই ভালো বলতে পারবেন।’ 

মেষ্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হক বাবু বলেন, ‘মন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামতে অসুবিধা হচ্ছে বলে রাস্তার পাশে একটি জিগার গাছ কাটার অনুমতি আমি দিয়ে ছিলাম। পরে দুই পক্ষ গাছের মালিকানা দাবি করায় হেলিপ্যাড অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত