Ajker Patrika

দৌলতপুরে বিএনপি ও কৃষক দল নেতার বিরুদ্ধে নিলামবহির্ভূত গাছ বিক্রির অভিযোগ, বিক্ষোভ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
Thumbnail image
কেটে নেওয়া গাছের স্থান। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক এবং উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে কলেজের নিলামবহির্ভূত চারটি মেহগনিগাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার ছুটির দিন গোপনে এসব গাছ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

এদিকে গতকাল রোববার দুপুরে গাছ কাটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় গোপনে গাছ বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, গোপনে নিলামের গাছের সঙ্গে মাত্র ৬০ হাজার টাকায় গাছ চারটি বিক্রি করেন উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম নান্নু এবং উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলাউদ্দিন বাদল। এ দুজন কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য মনোনীত হলেও পরে আদালতের মাধ্যমে বাতিল হয়ে যায়। তবে এখনো এই দুজন নিজেদের কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য দাবি করেন। নিলামের বাইরে ওই চারটি গাছের মূল্য দুই লক্ষাধিক টাকা।

নিলামের মাধ্যমে গাছ কেনেন স্থানীয় ব্যবসায়ী আলামিন। নিলামের বাইরে চারটি গাছ কাটার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘ছোট ৩৫টি গাছ নিলামের মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকায় কিনি। ভ্যাট দিয়ে মোট ৪২ হাজার টাকা হয়। ৮ হাজার টাকা লাভে গাছগুলো (৩৫টি) ৫০ হাজার টাকায় কাঠ ব্যবসায়ী হাবিব ও মোশারফের কাছে বিক্রি করি। পরে যে চারটি বড় গাছ কাটা হয়েছে, সেগুলো নিলামের চিহ্ন করা ৩৫টি গাছের মধ্যে ছিল না। এই গাছগুলো কেন কাটা হয়েছে, তা আমার জানা নেই। তবে শুনেছি, গাছ চারটি ৬০ হাজার টাকায় আরিফুল ইসলাম নান্নু ও আলাউদ্দিন বাদলের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা কিনেছেন।’

দৌলতপুর কলেজের পিয়ন আব্দুল জলিল বলেন, ‘নিলামে বিক্রি করা গাছের সঙ্গে অতিরিক্ত চারটি গাছ শুক্রবার কাঠ ব্যবসায়ী হাবিব ও মোশারফের লোকজন কেটে নিয়ে যান। আরিফুল ইসলাম নান্নু ও আলাউদ্দিন বাদলের নির্দেশে গাছ কাটা হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। বিষয়টি কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুস সালাম স্যারকে জানিয়েছি।’

কাঠ ব্যবসায়ী হাবিব ও মোশারফ অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই চারটি গাছ কাটা হয়েছে।

নিলামের বাইরে কেটে নেওয়া গাছ। ছবি: সংগৃহীত
নিলামের বাইরে কেটে নেওয়া গাছ। ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম নান্নুর কাছে জানতে চাইলে নিলামের বাইরে অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়ে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

গাছ কাটার প্রতিবাদে গতকাল রোববার দুপুরে বিক্ষোভ করেছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় গোপনে গাছ বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানায় তারা।

দৌলতপুর কলেজের উপাধ্যক্ষ (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ) আব্দুস সালাম বলেন, ‘অতিরিক্ত গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিলামের মধ্যে বড় কোনো গাছ ছিল না। নিলামের বাইরে গাছ কাটার কথা শোনার পরপরই বন বিভাগের কর্মকর্তাকে পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। নিলামের বাইরে কোনো গাছ কাটা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত