Ajker Patrika

মানিকছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

৩১ শয্যার লোকবলে ৫০ শয্যা, তা-ও নেই অর্ধেক

  • ৩১ শয্যার এই হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উত্তীর্ণ হলেও জনবল রয়ে গেছে আগের হিসাবেই।
  • সেই অনুযায়ী ১০১ জন থাকার কথা থাকলেও কর্মরত ৫০ জন।
  • ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
আবদুল মান্নান, মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) 
আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ০৪: ০২
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভিড়। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের ভিড়। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী হওয়ায় আশপাশের আরও তিন উপজেলার রোগীরা এখানে ভিড় করেন। ৩১ শয্যার এই হাসপাতাল ২০২১ সালে ৫০ শয্যায় উত্তীর্ণ হলেও এখনো জনবল রয়ে গেছে আগের হিসাবেই। কিন্তু সেই অনুযায়ী ১০১ জন থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন ৫০ জন। ফলে জনবলসংকটে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ির উত্তরে খাগড়াছড়ির রামগড় ও গুইমারা, পূর্বে লক্ষ্মীছড়ি এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে আছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা। ফলে পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চলের রোগীর দ্রুত ও সহজে চিকিৎসাসেবা পেতে এ হাসপাতালে ভিড় করেন। প্রতিদিন এখানে বহির্বিভাগ ও অন্তর্বিভাগ মিলিয়ে ৩০০-৩৫০ রোগী সেবা নেয়।

প্রতিষ্ঠানটিতে ১৩ চিকিৎসকের মধ্যে কর্মরত আছেন সাতজন। তাঁদের মধ্যে আবার বর্তমানে দুজন প্রেষণে ও একজন ছুটিতে আছেন। ২৯ নার্সের মধ্যে কর্মরত ১১ জন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহস্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীর ১৯ জনের মধ্যে আছেন মাত্র চারজন। সেই সঙ্গে নেই পর্যাপ্ত ওষুধ, ল্যাবের পরীক্ষা উপকরণ।

ল্যাব টেকনিশিয়ান রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ল্যাবসংশ্লিষ্ট মেডিসিনের চরম সংকটে কার্যক্রম থমকে আছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা সত্ত্বেও তা মেলেনি।

এ ছাড়া জনবলসংকটের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিদর্শক শ্যামল মিত্র চাকমা বলেন, ‘মাঠে টিকাদান কার্যক্রম চালাতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছি। ১৯ জনের কর্মযজ্ঞে আমরা আছি মাত্র চারজন। আমি আগামী মাসে অবসরে যাচ্ছি। এরপর মাঠের কাজে আরও অচলাবস্থা তৈরি হবে।’

এ নিয়ে কথা হলে সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন জানান, মানিকছড়ি চট্টগ্রাম শহরের দিকের জনপদ হওয়ায় এই উপজেলার পাশাপাশি আশপাশের উপজেলার জরুরি রোগীরা প্রথমে এই হাসপাতালে আসে; যার ফলে সারাক্ষণ রোগীর ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসকসহ ওষুধের অভাবে এখানে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া দুষ্কর। আগের জনবলের অর্ধেক নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কার্যক্রম।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল আলম বলেন, ‘৩১ শয্যার অর্ধেক জনবল দিয়ে ৫০ শয্যা হাসপাতাল চালু রাখতে সীমাহীন দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাচ্ছি। ৩১ শয্যার জনবলের ১০১ জনের স্থলে কর্মরত ৫০ জন। এই স্বল্পসংখ্যক জনবলে দৈনিক ৩০০-৩৫০ রোগীর সেবা দেওয়া সত্যিই কষ্টকর। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। জনভোগান্তি নিরসনে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত