Ajker Patrika

যশোরের বেনাপোল

বৃষ্টি হলেই ডোবে বন্দর

  • পণ্যাগারে পানি ঢুকে নষ্ট হয় পণ্যসামগ্রী।
  • কেমিক্যাল-মিশ্রিত পানিতে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা।
  • অপরিকল্পিত শেড ও ইয়ার্ড, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব।
  • ড্রেন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, আশ্বাস কর্তৃপক্ষের।
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি  
পানিতে ভিজছে পণ্যবাহী কনটেইনার। এতে মালপত্র নষ্ট হয়ে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। ছবিটি গত মঙ্গলবার যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পানিতে ভিজছে পণ্যবাহী কনটেইনার। এতে মালপত্র নষ্ট হয়ে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। ছবিটি গত মঙ্গলবার যশোরের বেনাপোল বন্দর থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

একপশলা বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বেনাপোল স্থলবন্দরে। টানা বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। পণ্যাগারে পানি ঢুকে নষ্ট হয় শত শত কোটি টাকার আমদানি পণ্য। ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা, ভোগান্তি বাড়ে শ্রমিকদের।

গত এক মাসে দুই দফায় জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে বেনাপোল বন্দর ও কাস্টম হাউস। সম্প্রতি পাঁচ দিন ধরে মোটর দিয়ে সেচে বন্দর ও কাস্টম হাউসের পানি সরানো হয়। এই দফায় গত বৃহস্পতিবার জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত হয় বন্দর। এর আগে গত ১৯ জুন ও ৯ জুলাই দুই দফায় এখানে পানি জমে।

বেনাপোল বন্দরে বছরে ২২ থেকে ২৪ লাখ টন পণ্য আমদানি হয়। এর মধ্যে রয়েছে কাপড়, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, রাসায়নিক ও বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল। এসব পণ্য রাখা হয় ৩৩টি শেড, ৩টি ওপেন ইয়ার্ড ও একটি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে। কিন্তু সেগুলোর বেশির ভাগ তৈরি হয়েছে সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া।

বন্দরের অভ্যন্তরীণ সড়কের চেয়ে অধিকাংশ শেড ও ইয়ার্ড নিচু জায়গায় অবস্থিত। ফলে বৃষ্টির পানি নামার সুযোগ থাকে না। পানির সঙ্গে ভিজে যায় পণ্য। নষ্ট হয় গুণগত মান। রাসায়নিক দ্রব্য পানিতে মিশে তৈরি হয় স্বাস্থ্যঝুঁকি।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হকের মতে, অপরিকল্পিত উন্নয়ন আর অব্যবস্থাপনার কারণে এমন দুরবস্থা। নতুন রাস্তা, শেড, গুদাম তৈরি হয়েছে ঠিকই; কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। পুরোনো ড্রেনগুলো ময়লা আর কাদায় বন্ধ হয়ে রয়েছে।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের প্রবেশপথে জলাবদ্ধতা। এতে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষজনকে। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার দুপুরের। আজকের পত্রিকা
বেনাপোল কাস্টম হাউসের প্রবেশপথে জলাবদ্ধতা। এতে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষজনকে। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার দুপুরের। আজকের পত্রিকা

শুধু পণ্যসামগ্রী নয়, বৃষ্টি হলে সংকটে পড়েন শ্রমিকেরা। বৃষ্টির পানিতে মিশে যায় ফেলে রাখা কেমিক্যাল। এরপর সেই পানি জমে থাকে দিনের পর দিন। এতে চর্মরোগ, চুলকানি ও অন্যান্য সংক্রামক রোগে ভোগেন তাঁরা।

বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদ আলী বলেন, জলাবদ্ধতার সমাধান না হলে শ্রমিকেরা নিরাপত্তাঝুঁকিতে পড়বেন। পণ্যের ক্ষতি হবে। আমদানি-রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি হবে। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যা বাড়বে।

বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে শহীদ আলী বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। ফলে দেশের অর্থনীতি ও শ্রমিকদের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক শামিম হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতা প্রতিবছরের সমস্যা। রেল বিভাগ কালভার্ট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। পাশের হাওরের সঙ্গে ড্রেন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দরবিষয়ক সম্পাদক মেহেরুল্লাহ বলেন, প্রতিবছর জলাবদ্ধতার সমস্যা হয়। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য পরিকল্পনা বা বাজেট নেই।

ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের এমন অভিযোগের পরও কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পণ্য নষ্ট হওয়ার কারণে বিদেশি বাণিজ্য অংশীদারদের কাছেও বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সমাবেশের জন্য বিশেষ ট্রেন, যে ব্যাখ্যা দিল রেল মন্ত্রণালয়

আবাসিক হোটেলে অভিযানে গিয়ে অবরুদ্ধ ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তারা, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে উদ্ধার

কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের দেড় হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১২

শর্তের জালে মার্কিন চাপ

ঢাকায় সমাবেশের জন্য ৩ জোড়া ট্রেন ভাড়া করেছে জামায়াত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত