শেরপুর এবং এর সংলগ্ন ভারতের মেঘালয়ে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও উত্তর/উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর বিস্তার লাভ করেছে। এই বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি
আবহাওয়া অফিস জানায়, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে ২৪২ মিলিমিটার; যা দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সেখান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল শেরপুরের নদীগুলোর পানির স্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে জেলার ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ নতুন করে বন্যার আশঙ্কায় রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, এখনো মুহুরি নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে নদীর পানি হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে পরশুরাম উপজেলায় ২১টি এবং ফুলগাজী উপজেলায় ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে বিশেষ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কয়েক দিন ধরে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে বেশ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রবণতা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। গত ২৪ ঘণ্টায় (আজ শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) ঢাকা ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে টানা বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে নোয়াখালীতে। দক্ষিণাঞ্চলে এরই মধ্যে
গতকাল সারা দিন-রাত বৃষ্টি দেখল দেশবাসী। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিন বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ১৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে যা ২৪ ঘণ্টায় অতি ভারী বৃষ্টির যে নির্ধারিত মাত্রা, তার চেয়েও অনেক বেশি। দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভারী বৃষ্টিপাত দেখা গেছে নোয়াখালীর মাইজদী কোর্টে, ২৮৫ মিলিমিটার।
আজও সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে সারাদিনই বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তবে, দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিতই থাকব।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও বৃষ্টির প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েছে। সুন্দরবনের ভেতরের নদীগুলোয় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট পানি বেড়েছে। যার ফলে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চর, করমজলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল বুধবার (২৮ মে) রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিনব্যাপী
টানা বৃষ্টি ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের শঙ্খ নদীর পাড় ভেঙে তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিতে কৃষিজমির ফসল ও ওই এলাকার মৎস্যঘের পানিতে ডুবে গেছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল। এতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেড়েছে। জোয়ারের পানির তোরে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দিনভর ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ বৃহস্পতিবার সকালে আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। তিন দিন ধরে গুঁড়ি গুঁড়ি থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। টানা বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আজ বৃহস্পতিবার সকালে আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আর এর প্রভাবেই সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে আগামী দুই থেকে তিন দিন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের নিয়মিত পূর্বাভাস থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
আজ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও এ এলাকর আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ বুধবার, সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুজন। একই সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে সতর্ক করা হয়েছে।
নোয়াখালীতে ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ মিলি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া অফিস। আর এ বৃষ্টিতে নোয়াখালী পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষজন। আজ বুধবার বিকেলে স্কুল ছুটি হওয়ার পর আল ফারুক স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা জলাবদ্ধতা নিরসন ও সড়ক মেরামতের
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের ১৫০০ বিঘা ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু ফসল তুলতে পারলেও এখনো প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ইরি-বোরো পাকা ধান পানিতে ডুবে আছে। কষ্টের ফসল ঘরে তোলার আগে খেতে ডুবে যাওয়ায় দুই শতাধিক কৃষকের কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।
দুই দিনের অব্যাহত বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে মৌলভীবাজার জেলার চারটি নদ-নদীতে বেড়েছে পানি। জেলার জুড়ী নদীতে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা, মনু ও ধলাই নদ-নদীতে পানি বেড়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি থাকলে বন্যার শঙ্কা রয়েছে।