Ajker Patrika

যশোর জেলা বিএনপির কাউন্সিল

সভাপতি পদে নতুন সমীকরণ, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সম্পাদক খোকন

­যশোর প্রতিনিধি
যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলনে বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন ২২ ফেব্রুয়ারি। ইতিমধ্যেই সম্মেলন বাস্তবায়নে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সম্মেলন ঘিরে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন তাঁরা। প্রতিদিনই হচ্ছে প্রচার মিছিল। মঞ্চ নির্মাণ, সাজসজ্জার প্রস্তুতিও এগিয়ে চলেছে পুরোদমে।

ইতিমধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে ৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হতে চলেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন।

দলীয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের ১০ বছর পর ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল যশোর জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের সহধর্মিণী অধ্যাপক নার্গিস বেগম আহ্বায়ক এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু সদস্যসচিব হন। ওই কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে বলা হলেও পেরিয়ে যায় ৬ বছর।

শীর্ষ নেতারা বলছেন, এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করার কারণে আন্দোলন ও কমিটি গঠন ঝিমিয়ে পড়ে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে দলীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিতে থাকেন। সেই থেকে প্রায় প্রতিদিন ছোট-বড় বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে দলটির।

এরই মধ্যে ১৬ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ইসহককে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের বিএনপির নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এই কমিশন ১৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে। একই দিন নির্বাচন কমিশন খসড়া ভোটার তালিকাও প্রকাশ করা হয়। তফসিল অনুযায়ী ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকার ওপর আপত্তি গ্রহণ করা হয়। একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এদিকে, তফসিল ঘোষণার আগে আলোচনায় ছিল কঠিন সময়ে দলকে ধরে রাখার পুরস্কার হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হতে যাচ্ছেন আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ানোয় পাল্টে গেছে সমীকরণ। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নেওয়া চারজনের মধ্যে তিন প্রার্থী উঠে এসেছেন সভাপতির লড়াইয়ে। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদের লড়াইয়ে থেকে যাওয়ায় একমাত্র প্রার্থী হিসেবে যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন নির্বাচিত হতে চলেছেন।

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রার্থী তালিকা অনুসারে সভাপতি পদে দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও যশোর চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান এবং যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মারুফুল ইসলাম মারুফ প্রার্থী হয়েছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদকের ৩টি পদে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাঁরা হচ্ছেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য পদত্যাগী সভাপতি প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, যশোর সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আজম ও সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল বারী রবু।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. ইসহক আজকের পত্রিকাকে জানান, জেলার সব উপজেলা ও পৌর বিএনপির ১৬টি সাংগঠনিক ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটির মোট ১ হাজার ৬১৬ জন ভোটার ভোটাধিকার প্রদানের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের জন্য তাঁদের নেতা নির্বাচন করবেন। তবে ইতিমধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে এক প্রার্থী হওয়ায় দেলোয়ার হোসেন খোকনের বিজয় সুনিশ্চিত। শুধু ঘোষণার অপেক্ষা মাত্র। ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত