Ajker Patrika

আকাশে উড়ল অঙ্কনের ড্রোন বিমান

কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৫, ২০: ১২
ড্রোন বিমান হাতে অঙ্কন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড্রোন বিমান হাতে অঙ্কন। ছবি: আজকের পত্রিকা

কোটচাঁদপুরের স্কুলশিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান অঙ্কন (১৬)। কোটচাঁদপুর সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল গ্রুপ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সে। কিশোর অঙ্কনের বানানো একটি ছোট ড্রোন বিমান আজ শুক্রবার আকাশে উড়েছে। এটি উড়িয়ে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।

কোটচাঁদপুর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের পল্লিচিকিৎসক শওকত আলীর ছেলে অঙ্কন। ইলেকট্রনিকসের কাজে তার বরাবরই আগ্রহ। আজকের পত্রিকাকে সে বলে, ‘ছোটবেলা থেকেই ইলেকট্রনিকসের কাজ করতে আমার ভালো লাগত। কিছু কিছু টাকা জমিয়ে কাজের যন্ত্রাংশ কিনতাম। এরপর ইউটিউবে ড্রোন দেখে তা তৈরি করতে মন চাইল। কিনতে শুরু করলাম ড্রোন তৈরির সরঞ্জাম। কাজ শুরু করলাম ড্রোন তৈরির। একে একে দুটি ড্রোন তৈরি করেছিলাম ২০২৪ সালে। এরপর সেই ড্রোন আকাশে উড়িয়ে সফলও হয়েছিলাম।’

অঙ্কন বলে, ‘ওই ড্রোন তৈরি করতে চার হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল। এর পুরো সাপোর্ট পেয়েছিলাম বাবার কাছ থেকে। এরপর এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে মাথায় ছিল, বিমান তৈরি করতে হবে। সেটা নিয়ে মাঝেমধ্যে কাজও করতাম। এরপর পরীক্ষা শেষে গেল চার মাস প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা কাজ করে বিমানটি বানিয়েছি। ইতিমধ্যে আমাদের গ্রামের স্কুল মাঠের আকাশ উড়িয়েছি। সেদিনই এলাকাবাসী অনেক খুশি হয়েছিল বিমানটি আকাশে উড়তে দেখে। আজ দ্বিতীয়বারের মতো এটি ওড়ানো হলো।’

অঙ্কন আরও বলে, ‘বিমানটি তৈরি করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার ব্যর্থও হয়েছি। তবে সর্বশেষ চ্যাটজিপিটির সহায়তা নিয়ে সফল হয়েছি।’

ড্রোন বিমানটি তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে অঙ্কন বলে, ড্রোন তৈরির আগের মোটর কাজে লাগানো হয় প্লেন তৈরিতে, কন্ট্রোলের জন্য ব্যবহার করা হয় ড্রোনের ফ্লাই স্কাই, এফএস-১৬। ব্যবহার করা হয়েছে চারটি সার্ভে মোটর, কর্কশিট, যা দিয়ে বডি তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ কেভি ব্লাস লেস মোটর, ৮ ইঞ্চি পপুলার, পিএসসি দুটি, রিসিভার আই-৬,২২ এমপি আরের লিকো ব্যাটারি, হার্ডবোর্ড, এসএস পাইপ, বার্বিজ জুতার হুইল, পিবিসি ট্যাব ব্যবহার করা হয়েছে।

অঙ্কন জানায়, সরকারি সহায়তা পেলে আরও ভালো কিছু করতে পারবে সে।

আকাশে উড়ছে বিমানটি। ছবি: আজকের পত্রিকা
আকাশে উড়ছে বিমানটি। ছবি: আজকের পত্রিকা

অঙ্কনের বাবা শওকত আলী বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আমার ছেলে যা কিছু করেছে, তা নিজের চেষ্টায় করেছে। আমি তেমন কোনো সহযোগিতা করতে পারিনি। সামনের দিনে সরকারের সহায়তা কামনা করছি, যাতে সে ভালো কিছু করে দেশের উন্নয়ন করতে পারে।’

অঙ্কনের বিমান ওড়ানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরে ভালো লাগছে। এটা জেনে আরও ভালো লাগছে, সে যে অল্প বয়সে তার মেধা দিয়ে ড্রোন, বিমানসহ একাধিক জিনিসপত্র বানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা আমাকে ওই ছেলের সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। এরপর আমি তার বিষয়টি নিয়ে যেখানে যেখানে কথা বলতে হয় বলব। এ ছাড়া তার মেধা কাজে লাগিয়ে আর কী করা যায়, সেটা নিয়েও কাজ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত