Ajker Patrika

আজ বা কাল উৎপাদনে যাচ্ছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩: ১১
আজ বা কাল উৎপাদনে যাচ্ছে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র

দীর্ঘ এক মাস বন্ধ থাকার পরে আবারও উৎপাদনে যাচ্ছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। আজ বুধবার সকাল থেকে কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এর আগে কয়লাসংকটের কারণে গেল ১৪ জানুয়ারি উৎপাদন বন্ধ করেছিল কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, কয়লা সরবরাহ নিশ্চিত হওয়ায় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আজ সন্ধ্যা নাগাদ বা আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে কয়লা আমদানির চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হওয়ার ২৬ দিন পরে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩০ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে বিদেশি জাহাজ। পরে এই কয়লা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা ইয়ার্ডে আনা হয়। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে আসার কথা রয়েছে। 

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘আমরা বন্ধ হওয়া প্রথম ইউনিট থেকে আবারও উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কয়লা আমদানিতে যে জটিলতা ছিল তা এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করি এখন থেকে নিয়মিত উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’

জানা গেছে কেন্দ্রটিতে কয়লা মজুতের সক্ষমতা রয়েছে তিন মাসের। নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের কয়লা মজুত রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ডলারের সংকটে এত দিন কেন্দ্রটিতে কয়লার কোনো মজুত ছিল না। 

অন্যদিকে কয়লা ও ডলারের সংকটের মধ্যেও আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলাচ্ছে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট প্রতিদিন চালিয়ে রাখতে ৫ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়। সেই অনুযায়ী ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা দিয়ে মাত্র ছয় দিন কেন্দ্রটির একটি ইউনিট চালানো যাবে। পরবর্তীতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা এলে তা দিয়ে কেন্দ্রটি আরও ১০ দিন চালানো যাবে। ইন্দোনেশিয়া থেকে একটি জাহাজ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জেটিতে ভিড়তে ৭ থেকে ১০ দিন সময় লাগে।’

২০১০ সালে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং ভারতের এনটিপিসি লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) নামে কোম্পানি গঠিত হয়। এই কোম্পানির অধীনে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট (রামপাল) নামে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। 

রমাপাল উপজেলার রাজনগর ও গৌরম্ভা ইউনিয়নের সাপমারী কৈ-গর্দ্দাশকাঠি মৌজায় ১ হাজার ৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ শেষে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরই শুরু হয় জমি ভরাট ও সড়ক নির্মাণের কাজ। প্রায় ৯ বছর বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যায় প্রতিষ্ঠানটি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত