Ajker Patrika

বেনাপোল কাস্টম হাউস থেকে বের করে দেওয়া হলো ১৫০ এনজিও কর্মীকে

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ২২: ২১
কাস্টম হাউস বেনাপোল। ছবি: আজকের পত্রিকা
কাস্টম হাউস বেনাপোল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বেনাপোল কাস্টমস থেকে প্রায় দেড় শ এনজিও কর্মীকে (বহিরাগত) বের করে দিয়েছেন নবনিযুক্ত কাস্টমস কমিশনার খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেন। তবে এসব বহিরাগতের আশ্রয়দাতা কাস্টমস সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আজ রোববার (৩ আগস্ট) বেনাপোল কাস্টমসে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা কড়াকড়ি করলে বের হয়ে যান এনজিও সদস্যরা। তবে তাঁরা বের হলেও বাইরে থেকে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করছেন বলে জানা গেছে।

বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমান স্বজন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এনজিও কর্মীদের সরানোর দাবি জানিয়ে এলেও তৎকালীন কর্মকর্তারা আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করেননি। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ নানা অপকর্মের সঙ্গে তারা জড়িত। মূলত তাদের কারণে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতো। আশা করি, কমিশনার তাঁর এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সহজীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।’

সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী রুবেল বলেন, ‘এনজিও সদস্যদের বেতন নেই, তারপরও তাঁরা কোটিপতি। চলেন দামি গাড়িতে, থাকেন আলিশান বাড়িতে। ‘কাস্টম হাউসে চাকরি করি’ বলে দাপিয়ে বেড়ায় গোটা বন্দর এলাকা। তাঁদের কাছে অনেকটাই অসহায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁরা আদায় করতেন লাখ লাখ টাকা। এনজিও কর্মীদের সরানো হয়েছে। এবার তাঁদের আশ্রয়দাতা কাস্টমস সদস্যদের শনাক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

অভিযোগ রয়েছে, আমদানি বা রপ্তানি পণ্যের ফাইলের জন্য নিদিষ্ট হারে ঘুষ নির্ধারণ করে রেখেছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। ফাইলপ্রতি ১৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হতো। আর কোনো কাগজপত্রে ত্রুটি থাকলে ঘুষের পরিমাণ দাঁড়ায় লাখ টাকা থেকে শুরু করে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে এ অর্থ কাস্টমস কর্মকর্তারা নিজেদের হাতে নেন না। এনজিও কর্মীদের দিয়ে ঘুষের টাকা সংগ্রহ করে থাকেন তাঁরা। এ জন্য বড় একটা কমিশন পান এই এনজিও কর্মীরা। এসব এনজিও কর্মী অল্প দিনে বিপুল টাকার মালিক বনে গেছেন। শূন্য থেকে কোটিপতি হতে বেশি সময় লাগেনি তাঁদের। কমিশনার দপ্তর থেকে শুরু করে শুল্কায়ন ও পরীক্ষণ গ্রুপ পর্যন্ত প্রতিটি শাখায় দুই থেকে তিনজন পর্যন্ত এনজিও সদস্যরা অবস্থান করতেন এবং সবাই ঘুষের কমিশনের অর্থ ভাগাভাগি করে নিতেন।

আমদানিকারক রবিউল ইসলাম জানান, ঘুষের কারণে আমদানি খরচ বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে দেশের বাজারে। এ ছাড়া ঘুষের কারণে কাস্টমসের বড় একটা অঙ্কের রাজস্ব হারায় সরকার।

সাধারণ ব্যবসায়ী ইদ্রিল আলী বলেন, ‘ঘুষ না দিলে কাস্টমস কর্মকর্তারা ফাইল দিনের পর দিন আটকে রাখেন। প্রতিবাদ করলে আগের কাস্টমস কর্মকর্তারা লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দিতেন। বাধ্য হয়ে কোনো অনিয়ম না থাকলেও নির্দিষ্ট হারে ঘুষ দিতে হতো। এখন এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছি।’

বেনাপোল কাস্টম হাউসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে কাস্টম হাউসে জনবলসংকট ছিল। এর আগে খুলনা ও যশোর কাস্টম হাউস থেকে জনবল ধার করে কাস্টম হাউসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। সে সময় বিভিন্ন কর্মকর্তা অফিসের কার্যক্রমের সুবিধার্থে আত্মীয় কিংবা পরিচিত লোকজনকে এনজিও কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন। বর্তমান নতুন কমিশনার এনজিও কর্মী অপসারণ করতে শুরু করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

৪ দাবি নিয়ে মার্কিন চাপ, বাংলাদেশের সায় ৩ শর্তে

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত