Ajker Patrika

১৪ বছর ঝুলে আছে রানার সম্পাদক মুকুল হত্যা মামলা

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ২০: ১০
১৪ বছর ঝুলে আছে রানার সম্পাদক মুকুল হত্যা মামলা

আইনের বেড়াজালে আটকে আছে যশোরের আলোচিত দৈনিক রানার পত্রিকার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল হত্যা মামলা। মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টে আটকে আছে গত ১৪ বছর ধরে। হত্যাকাণ্ডের ২৬ বছরেও চিহ্নিত হয়নি এই সাহসী সাংবাদিকের হত্যাকারীরা। উচ্চ আদালতে রিটের নিষ্পত্তি না হলে নিম্ন আদালতে মামলার বিচার কাজ শুরু হবে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এম ইদ্রিস আলী। 

এদিকে হত্যাকাণ্ডের ২৬ বছর পার হলেও বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ সাইফুল আলম মুকুলের পরিবারসহ জেলার সাংবাদিকেরা। এ অবস্থার মধ্য দিয়ে আগামীকাল শুক্রবার ৩০ আগস্ট বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে প্রয়াত সাংবাদিকের ২৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে। 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন কারও নাম উল্লেখ না করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একপর্যায়ে আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থমকে পড়ে। আর এ কারণে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। 

হত্যাকাণ্ডের সাত বছর পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দুজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জগঠন করা হয়। এ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে। 

আদালত সূত্র জানায়, এ সময় মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ায় ফের মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। গত ১৪ বছর ধরেই মামলাটির কার্যক্রম ওই অবস্থায় রয়েছে। পরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে ফারাজী আজমল হোসেনের অংশ বাদ রেখে ফের বিচার কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যত তা কার্যকর হয়নি। 

পিপি এম ইদ্রিস আলী জানান, মুকুল হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে ছিল। কিন্তু হাইকোর্টে এক আসামির আবেদনের কারণে মামলাটির আরগুমেন্ট শুরু করা সম্ভব হয়নি। হাইকোর্টে আবেদনের নিষ্পত্তির পর সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলার বিচারকাজ শুরু হবে। 

প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, ‘সাহসী সাংবাদিক সাইফুল আলম মুকুল হত্যার বিচার না হওয়া কষ্টের। এতে হত্যাকারীরা উৎসাহী হবে। সাংবাদিকদের মনোবল ভেঙে পড়বে। তাই আমি আশা করব সরকার মুকুল হত্যার সঠিক বিচারকাজ দ্রুত শুরু করবেন।’ 

আগামীকাল সাংবাদিকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেসক্লাব, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শোকর‍্যালি, শহীদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত