গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
গত এক বছর ধরে স্বপ্না খাতুন (২০) সাপের আতঙ্কে ভুগছেন। সাত-আটবার তাঁকে সাপে কেটেছে বলে দাবি তাঁর। সাপে কাটার দাগও শরীরে দেখিয়েছেন। কিন্তু সেই সাপ তিনি ছাড়া আর কেউ দেখতে পান না। ওঝা, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও কোনো সমাধান না পেয়ে, মা-বাবা মানত করেন মনসামঙ্গলের গান। তাঁদের বিশ্বাস, এতেই সেরে যাবে সমস্যা।
অবশেষে গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে আজ রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে মনসামঙ্গলের গান। আয়োজনটি ছিল মেহেরপুরে গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে স্বপ্না খাতুনদের বাড়িতে। এই আয়োজন গ্রামের মানুষের ঢল নামে।
স্থানীয়রা বলছে, নানা রোগ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের মানত করা হয়। সাপের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে মানত করা হয়েছে মনসামঙ্গল গান। মনসামঙ্গল গান হবে, তাই শুনতে এসেছেন তাঁরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীরা বিভিন্ন গান গাইছেন আর তালে তালে নাচছেন। গ্রামের মানুষও বেশ উপভোগ করেছেন সেটি।
স্বপ্না খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এক বছর ধরে সাপের সমস্যায় ভুগছি। সাপে কাটে কিন্তু শরীরে বিষ ধরে না। এযাবৎ আমাকে সাত থেকে আটবার সাপে কেটেছে। ডাক্তার ও ওঝা দেখিয়েছি, কোনো ফল পাইনি। গান মানত করার পরে আমি আর সাপ দেখতেও পায়নি, সাপেও কাটে না।’
স্বপ্না আরও বলেন, ‘এই গানের জন্য সাত রকম ফল, সাত রকম মিষ্টি, সাত রকম ফুল, গুড়ের লাড্ডু, নারকেলের লাড্ডুসহ বিভিন্ন জিনিস গোছানো লাগে।’
স্বপ্না খাতুনের মা হোসনে আরার দাবি, মানত পূরণের পর মেয়ে এখন বেশ ভালো আছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে সাপে প্রায় ভোগান্তি দেয়। কিন্তু আমার মেয়ে ছাড়া অন্য কেউ সাপ দেখতে পায় না। অনেক জায়গায় গিয়েছি, কিন্তু কোনো সমাধান পায়নি। তাই শেষে গান মানত করেছি। মেয়ে এখন অনেক ভালো আছে।’
হোসনে আরা খাতুনের স্বামী আব্দুল বারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে সাত থেকে আটবার সাপে কেটেছে। অনেক জায়গায় দেখিয়েছি কোনো ফল পাইনি। তা ছাড়া আমরা সাপও দেখতে পাই না। তবে সাপে কাটা দাগ হয়। আমার মেয়ে ছাড়া কেউ এই সাপ দেখতে পায় না। তাই কোনো পথ না পেয়ে এই গান মানত করেছি। এখন আমার মেয়ে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে।’
এ নিয়ে কথা হয় গানের দলের প্রধান মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা মনসামঙ্গল গান। সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে এই গান গাওয়া হয়। আমি ৩৫ বছর ধরে এই গানের জগতে আছি। বিভিন্ন জায়গায় গান গেয়ে থাকি। আর এ গান দিলে সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।’
তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও ওঝা আব্দুল গনি বলছেন, ‘গান মানত করে যদি সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া যেত, তাহলে গ্রামে গ্রামে এর প্রচলন বেড়ে যেত। তাই গান মানত করে সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া আদৌ সম্ভব না।’
অবশ্য এ ধরনের মানতকে কুসংস্কার বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, মনসা হলেন একজন পৌরাণিক দেবী। দেবী দেবীভাগবত পুরাণসহ আরও অনেক পুরাণে মনসার উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি নাগদেবী। অবিভক্ত বঙ্গ, ঝাড়খণ্ডের অঙ্গ-প্রদেশ, বিহারের মিথিলা এবং আসামে মনসা দেবীর পূজা বেশ ঘটা করে উদ্যাপন করা হয়। বিষধর প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা ও বিষের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্য লাভের উদ্দেশ্যে তার পূজা করা হয়।
পুরাণ অনুযায়ী, মনসা শিবের স্বীকৃত কন্যা, নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী (বোন) এবং ঋষি জরৎকারুর (জগৎকারু) স্ত্রী। তাঁর অপর নামগুলো হলো বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী। তার সঙ্গে মিসরীয় দেবী আইসিসের মিল রয়েছে।
আষাঢ় মাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিকে বলা হয় নাগ পঞ্চমী। এ সময় বাড়ির উঠানে সিজগাছ স্থাপন করে মনসাদেবীর পূজা করা হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিতেও মনসাপূজার বিধান আছে। প্রধানত, সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে বা সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে মনসার পূজা করা হয়।
বাংলা অঞ্চলেই মনসার পূজা সর্বাধিক জনপ্রিয়। নিম্নবর্ণীয় হিন্দুদের কাছে মনসা একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন দেবী। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে মনসার সঙ্গে নেতোর (যিনি নেতা, নেতিধোপানি, নেতলসুন্দরী ইত্যাদি নামেও পরিচিত) পূজাও করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে পুরো শ্রাবণ মাস মনসা পূজা হয়। পূজা উপলক্ষে হয় পালাগান ‘সয়লা’। এই পালার বিষয় হলো পদ্মপুরাণ বা মনসামঙ্গল।
নাগপঞ্চমী তিথি, শ্রাবণ সংক্রান্তি, ডাক সংক্রান্তি ও অন্য দিনে মনসার পূজা প্রচলিত। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে শ্রাবণ (জুলাই-অাগস্ট) মাসে এই উৎসব পালিত হয়। বাঙালি হিন্দু মেয়েরা এদিন উপবাস করে ব্রত পালন করেন এবং সাপের গর্তে দুধ ঢালেন।
গত এক বছর ধরে স্বপ্না খাতুন (২০) সাপের আতঙ্কে ভুগছেন। সাত-আটবার তাঁকে সাপে কেটেছে বলে দাবি তাঁর। সাপে কাটার দাগও শরীরে দেখিয়েছেন। কিন্তু সেই সাপ তিনি ছাড়া আর কেউ দেখতে পান না। ওঝা, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েও কোনো সমাধান না পেয়ে, মা-বাবা মানত করেন মনসামঙ্গলের গান। তাঁদের বিশ্বাস, এতেই সেরে যাবে সমস্যা।
অবশেষে গতকাল শনিবার রাত ১০টা থেকে আজ রোববার বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে মনসামঙ্গলের গান। আয়োজনটি ছিল মেহেরপুরে গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামে স্বপ্না খাতুনদের বাড়িতে। এই আয়োজন গ্রামের মানুষের ঢল নামে।
স্থানীয়রা বলছে, নানা রোগ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের মানত করা হয়। সাপের আতঙ্ক থেকে মুক্তি পেতে মানত করা হয়েছে মনসামঙ্গল গান। মনসামঙ্গল গান হবে, তাই শুনতে এসেছেন তাঁরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিল্পীরা বিভিন্ন গান গাইছেন আর তালে তালে নাচছেন। গ্রামের মানুষও বেশ উপভোগ করেছেন সেটি।
স্বপ্না খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এক বছর ধরে সাপের সমস্যায় ভুগছি। সাপে কাটে কিন্তু শরীরে বিষ ধরে না। এযাবৎ আমাকে সাত থেকে আটবার সাপে কেটেছে। ডাক্তার ও ওঝা দেখিয়েছি, কোনো ফল পাইনি। গান মানত করার পরে আমি আর সাপ দেখতেও পায়নি, সাপেও কাটে না।’
স্বপ্না আরও বলেন, ‘এই গানের জন্য সাত রকম ফল, সাত রকম মিষ্টি, সাত রকম ফুল, গুড়ের লাড্ডু, নারকেলের লাড্ডুসহ বিভিন্ন জিনিস গোছানো লাগে।’
স্বপ্না খাতুনের মা হোসনে আরার দাবি, মানত পূরণের পর মেয়ে এখন বেশ ভালো আছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে সাপে প্রায় ভোগান্তি দেয়। কিন্তু আমার মেয়ে ছাড়া অন্য কেউ সাপ দেখতে পায় না। অনেক জায়গায় গিয়েছি, কিন্তু কোনো সমাধান পায়নি। তাই শেষে গান মানত করেছি। মেয়ে এখন অনেক ভালো আছে।’
হোসনে আরা খাতুনের স্বামী আব্দুল বারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে সাত থেকে আটবার সাপে কেটেছে। অনেক জায়গায় দেখিয়েছি কোনো ফল পাইনি। তা ছাড়া আমরা সাপও দেখতে পাই না। তবে সাপে কাটা দাগ হয়। আমার মেয়ে ছাড়া কেউ এই সাপ দেখতে পায় না। তাই কোনো পথ না পেয়ে এই গান মানত করেছি। এখন আমার মেয়ে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে।’
এ নিয়ে কথা হয় গানের দলের প্রধান মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা মনসামঙ্গল গান। সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পেতে এই গান গাওয়া হয়। আমি ৩৫ বছর ধরে এই গানের জগতে আছি। বিভিন্ন জায়গায় গান গেয়ে থাকি। আর এ গান দিলে সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।’
তবে স্থানীয় বাসিন্দা ও ওঝা আব্দুল গনি বলছেন, ‘গান মানত করে যদি সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া যেত, তাহলে গ্রামে গ্রামে এর প্রচলন বেড়ে যেত। তাই গান মানত করে সাপের উপদ্রব থেকে মুক্তি পাওয়া আদৌ সম্ভব না।’
অবশ্য এ ধরনের মানতকে কুসংস্কার বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, মনসা হলেন একজন পৌরাণিক দেবী। দেবী দেবীভাগবত পুরাণসহ আরও অনেক পুরাণে মনসার উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি নাগদেবী। অবিভক্ত বঙ্গ, ঝাড়খণ্ডের অঙ্গ-প্রদেশ, বিহারের মিথিলা এবং আসামে মনসা দেবীর পূজা বেশ ঘটা করে উদ্যাপন করা হয়। বিষধর প্রাণীর হাত থেকে রক্ষা ও বিষের প্রতিকার পেতে, প্রজনন ও ঐশ্বর্য লাভের উদ্দেশ্যে তার পূজা করা হয়।
পুরাণ অনুযায়ী, মনসা শিবের স্বীকৃত কন্যা, নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী (বোন) এবং ঋষি জরৎকারুর (জগৎকারু) স্ত্রী। তাঁর অপর নামগুলো হলো বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী। তার সঙ্গে মিসরীয় দেবী আইসিসের মিল রয়েছে।
আষাঢ় মাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিকে বলা হয় নাগ পঞ্চমী। এ সময় বাড়ির উঠানে সিজগাছ স্থাপন করে মনসাদেবীর পূজা করা হয়। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিতেও মনসাপূজার বিধান আছে। প্রধানত, সর্পদংশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে বা সর্পদংশনের প্রতিকার পেতে মনসার পূজা করা হয়।
বাংলা অঞ্চলেই মনসার পূজা সর্বাধিক জনপ্রিয়। নিম্নবর্ণীয় হিন্দুদের কাছে মনসা একজন গুরুত্বপূর্ণ প্রজনন দেবী। বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে মনসার সঙ্গে নেতোর (যিনি নেতা, নেতিধোপানি, নেতলসুন্দরী ইত্যাদি নামেও পরিচিত) পূজাও করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গের গ্রামে পুরো শ্রাবণ মাস মনসা পূজা হয়। পূজা উপলক্ষে হয় পালাগান ‘সয়লা’। এই পালার বিষয় হলো পদ্মপুরাণ বা মনসামঙ্গল।
নাগপঞ্চমী তিথি, শ্রাবণ সংক্রান্তি, ডাক সংক্রান্তি ও অন্য দিনে মনসার পূজা প্রচলিত। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে শ্রাবণ (জুলাই-অাগস্ট) মাসে এই উৎসব পালিত হয়। বাঙালি হিন্দু মেয়েরা এদিন উপবাস করে ব্রত পালন করেন এবং সাপের গর্তে দুধ ঢালেন।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে বাংলাদেশি দুই বারকিশ্রমিককে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নরসিংপুর ইউনিয়নের শারপিনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
৮ মিনিট আগেকক্সবাজার উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘জুসের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে’ অজ্ঞান করে মা ও তাঁর কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাতে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
১১ মিনিট আগেহবিগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুরে শহরের আমিরচান কমপ্লেক্সের স্কাই কিং রেস্টুরেন্টে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জুলাই পদযাত্রা বাস্তবায়ন কমিটি ২০২৫ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক আবু হেনা মোস্তফা ক
১৪ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় কালীগঙ্গা নদীতে ডুবে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের জংগলী স্কুলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তিরা হলেন একই এলাকার জাহিদুল ইসলাম (৪৫) এবং তাঁর ছেলে জিহাদ (৯)।
১৯ মিনিট আগে