Ajker Patrika

সাতক্ষীরা

আমের দামে হতাশ চাষিরা

  • আমের ব্যাপক ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন চাষিরা।
  • বিভিন্ন জাতের আম প্রতি মণ পাইকারি ১৬০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি।
আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা 
আপডেট : ১৯ মে ২০২৫, ০৭: ২৪
আমের দামে হতাশ চাষিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আমের দামে হতাশ চাষিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী আম পাড়ার ধুম পড়েছে। এবার আমের ব্যাপক ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন চাষিরা। তাঁরা বলছেন, বাজারে পাইকারি যে দামে আম বিক্রি হচ্ছে, তাতে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না।

গতকাল রোববার জেলার ফল ও সবজি পাইকারি বিক্রির স্থান সুলতানপুর বড় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাকা-আধা পাকা আম নিয়ে পাইকারি ক্রেতার অপেক্ষা করছেন বাগানমালিকেরা। এখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা আম কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করেন। শুধু বড় বাজার নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকেই আম পেড়ে বিক্রি চলছে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না বলে জানান চাষিরা।

সরেজমিনে জানা গেছে, সুলতানপুর বড় বাজারে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ ও হিমসাগর আম প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার পাঁচ হাজারের বেশি বাগানে ৪ হাজার ১০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭০ হাজার টন। জেলায় মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে হওয়ায় অন্যান্য জেলার তুলনায় আগেই বাজারজাত করা যায় সাতক্ষীরার আম। এ জন্য আগাম পাকা আম খেতে দেশের সবার চোখ থাকে এই জেলার দিকে।

আম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ৫ মে থেকে গোপালভোগ, গোবিন্দভোগসহ স্থানীয় জাতের আম পাড়া শুরু হয়। হিমসাগর পাড়া শুরু হয় ১৫ মে থেকে। ল্যাংড়া ও আম্রপালি ২৭ মে ও ৫ জুন থেকে পাড়া যাবে। জেলা প্রশাসন এই সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুকরালী এলাকার আমচাষি লিয়াকত হোসেন বলেন, সারা বছর শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয় আমবাগানে। অথচ আম বিক্রি করতে হচ্ছে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৫৫ টাকায়। এতে খরচই উঠবে না, লাভ তো দূরের কথা।

আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা এলাকার আমচাষি কামরুল ইসলাম বলেন, এবার সাতক্ষীরার বাজারে বাইরের ব্যাপারী কম। অন্যান্য জেলায় হিমসাগর আম সাতক্ষীরার আগে পাড়া হয়েছে। তাই ব্যাপারীরা সেখানে চলে গেছেন। বাইরের ব্যাপারী না এলে আমের ভালো দাম পাওয়া যায় না।

তবে সিন্ডিকেট ব্যবসার কথা অস্বীকার করে সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রজব আলী বলেন, সিন্ডিকেট বলে কিছু নেই। একই সময়ে সবাই আম পাড়েন। তখন বাজারে ব্যাপক সরবরাহ হয়। সে কারণে আমের দাম কমে যায়।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, চাষিরা বাজারে আমের দাম কম পাচ্ছেন, এটা ঠিক। বাজারে আমের দাম কম হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। অন্যতম কারণ হলো, চাষিরা ফড়িয়াদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বাগানে খরচ করেন। আম পরিপক্ব হলে তাঁরা ওই ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হন। ফলে দামও কম পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত