Ajker Patrika

ফরিদার ঘরে বধির সুরাতনের ২৬ বছর, সাঁওতালি নাচ দেখলেই উচ্ছ্বাস

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
Thumbnail image

প্রায় ২৬ বছর হলো পালক মায়ের কাছে। খোঁজ মেলেনি বাক্‌প্রতিবন্ধী সুরাতনের পরিবারের। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে সন্ধান করেও হদিস মেলেনি। 

সব ধরনের কাজ করতে পারেন—মরিচ লাগানো, পাট নিড়ানো থেকে শুরু করে ঘরকন্যার যাবতীয়। শুধু কথাটাই বলতে পারেন না। মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের ফরিদা খাতুনের বাড়িতে রয়েছেন তিনি। ২৬ বছর আগে কুড়িয়ে পাওয়ার পর পালক মা নাম রেখেছেন ‘সুরাতন’। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ২৬ বছর আগে দেবীপুর গ্রামে আসে ওই নারী। তখন তার বয়স ছিল ১৬ বছর। গ্রামে আসার পর থেকেই স্থানীয় ফরিদা খাতুনের বাড়িতে থাকে। 

পালক মা ফরিদা খাতুন বলেন, ‘আজ থেকে প্রায় ২৬ বছর আগের ঘটনা। শুনলাম আমাদের পাড়ায় এক পাগলি এসেছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা তাকে নিয়ে হই চই করছে। পরে পাগলিটাকে আমার কাছে রেখে বাচ্চাগুলোকে সরে যেতে বললাম। সেই থেকেই রয়ে গেছে আমার কাছে। আর তার নাম রেখেছি আমার মায়ের নামে, সুরাতন। অনেক চেষ্টা করেছি ওর পরিবারকে খুঁজে বের করতে কিন্তু কোথাও পাইনি। সে কথাও বলতে পারে না, কানেও শোনে না। যদি ওর পরিবারকে খুঁজে পাই তাহলে তাদের হাতে তুলে দেব। এতে হয়তো আমার কষ্ট লাগবে। কিন্তু সুরাতন অনেক খুশি হবে। ওর মনের ভেতর কষ্ট কাজ করে, সেটা আমি বুঝি।’ 

ফরিদা খাতুন আরও বলেন, ‘যখন টেলিভিশনে সাঁওতালেরা নাচ গান করে, সে দেখে খুব আনন্দ পায়। তার এই অঙ্গভঙ্গি দেখে ধারণা করি, সে সাঁওতাল গোষ্ঠীর হবে। তবে সে মাঝে মাঝে ইশারা করে বোঝানোর চেষ্টা করে কোন দিক থেকে এসেছে। সুরাতনকে আমার আপন মেয়ের মতোই লালন পালন করে বড় করে তুলেছি।’ 

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, ‘অনেক খোঁজ করেও তার পরিবারের কোনো সন্ধান মেলেনি। বাক্‌প্রতিবন্ধী হওয়ায় নাম বা দেশের বাড়ি কোথায় তাও বলতে পারে না সুরাতন। যদি কখনো তার পরিবারের সন্ধান পায় তাহলে পরিবারের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত