Ajker Patrika

বিয়ের আসরে বর-কনের হাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্লাকার্ড

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ এপ্রিল ২০২৩, ২১: ৪০
বিয়ের আসরে বর-কনের হাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্লাকার্ড

ঝিনাইদহে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি এবং সহকর্মীর মুক্তি চেয়ে এক নব দম্পতি নতুন জীবন শুরু করেছেন। বিয়ের মঞ্চেই বর-কনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এই দাবি তোলেন। এ সময় তাদের অন্য সহকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। সবাই মিলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের স্লোগান দেন।

এই নবদম্পতি হলেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান ও একই উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের কন্যা সুমাইয়া আফরিন। গতকাল মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। আজ বুধবার ঝিনাইদহ সদরের নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে তাদের বিবাহোত্তর বউভাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মাহমুদুল হাসান হৃদয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক। তার স্ত্রী সুমাইয়া আফরিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাগারে থাকা খাদিজাতুল ইসলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী বলে জানা গেছে।

বর মাহমুদুল হাসান জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের রাজনৈতিক সহকর্মী খাদিজাতুল কুবরা দীর্ঘ ৮ মাসেরও বেশি সময় কারাগারে রয়েছেন। কুবরা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন। অনেক চেষ্টা করেও তার জামিন হয়নি, কারণ এই আইনটি জামিন অযোগ্য। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এই আইনে মামলা রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার ও ভিন্নমত দমনে ক্ষমতাসীনদের একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। যে কারণে তারা এই আইনটি বাতিলের দাবি করছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দুজন নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছি। এই নতুন জীবন শুরুটা করতে চেয়েছি এই নির্যাতনমূলক আইন বাতিল ও খাদিজার মুক্তির দাবি জানিয়ে। সব জুলুমের অবসানের মাধ্যমে গণমানুষের মুক্তির সংগ্রামে বিবেকবানদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।’

ঝিনাইদহ বিয়ের আসরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে প্লাকার্ড হাতে নবদম্পত্তিবিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এ রকম একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বর-কনে উভয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছেন। এতে তাদের কেউ বাঁধা দেয়নি, বরং উৎসাহ দিয়েছেন।

বরের মা দিলরুবা খাতুন জানান, ছেলে ও ছেলের বন্ধুরা এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছে। এতে তারা মৌন সমর্থন দিয়েছেন। তাদের এক রাজনৈতিক সহকর্মী কারাগারে রয়েছে, তারাও ওই কর্মীর মুক্তির দাবি করেন।

এদিকে বউ ভাতের অনুষ্ঠানের পর বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারী পাড়ার বাসায় গেলে নববধূ সুমাইয়া আফরিন এর পিতা খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার মেয়ে এবং তার স্বামী মাহমুদুল হাসান বিয়ের আসরে কি করেছেন আমাদের জানা নেই। আর এ বিষয়ে এখন আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারব না।’

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, ‘তাদের বিয়ের বিষয়ে বা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তারা যে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সেটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত