Ajker Patrika

চুরির মামলায় জামিনে মুক্ত, ৭ দিন পর পিটিয়ে হত্যা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮: ১৪
ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে সামনে গণপিটুনিতে নিহত মিল্লাতের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা। ইনসেটে মিল্লাত চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে সামনে গণপিটুনিতে নিহত মিল্লাতের লাশের অপেক্ষায় স্বজনরা। ইনসেটে মিল্লাত চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুর জেলার গেরদা ইউনিয়নের চুরির অপবাদে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ভোর মিয়াবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) তিনি একটি চুরি মামলায় ১৪ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পান।

স্থানীয়রা জানায়, চুরির সময় হাতেনাতে ধরা পড়ে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে।

নিহত মিল্লাত চৌধুরী (৩০) এলাকার মৃত আব্দুল আলিম চৌধুরীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরি ও মাদক মামলা ছিল।

কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাড়ির মালিক রেজাউল শেখ বলেন, ‘রাত ৩টার দিকে বাড়ির কুকুরের চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি আরেকটি ঘরের দরজা খোলা। ভেতরে গিয়ে দেখি চাল, কিছু বিদ্যুতের তার, কাসার বদনা, বাটি চুরি করে নিয়ে গেছে। পরে আমি চোর বলে চিৎকার দিলে আশপাশের মানুষসহ দুই-তিন গ্রামের মানুষ মিলে ওরে ধরে ফেলে। পরে গণপিটুনি দিছে গ্রামের লোকজন।’

স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামে একের পর এক চুরির ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রামবাসী। গ্রামের মসজিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাড়িতে প্রতিনিয়তই চুরির ঘটনা ঘটেছে। এমন ক্ষোভ থেকেই তারা জড়ো হয়ে ওই যুবককে গণপিটুনি দেন।

শেখ ফিরোজ নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় প্রায় রাতেই চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। মসজিদের মালামাল থেকে শুরু করে অটোরিকশা, বিভিন্ন বাড়ির মোটরসহ বাড়িতে ঢুকে মালামাল চুরি হচ্ছে। রাতে চুরির খবর পেয়েই মানুষ বের হয়ে আসে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য পারভেজ মিয়া বলেন, ‘মিল্লাত চৌধুরী মাদকসেবী ও এলাকার দুষ্ট প্রকৃতির লোক হিসেবে চিহ্নিত। চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।’

এদিকে খবর পেয়ে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে ছুটে আসেন স্বজনরা। দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায় মর্গের সামনেই বসে আছেন তাঁরা।

এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি করেন তাঁরা। নিহতের বোন নুপুর বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাইকে ষড়যন্ত্র করে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাই জেল থেকে বের হয়ে বলেছিল, ‘‘আমাকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হলো, তোরা প্রতিবাদ করলি না, যারা আমাকে জেলে পাঠিয়েছে ওরা আমাকে বাঁচতে দিবে না।”’

কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চুরির ঘটনায় গণপিটুনির খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত