Ajker Patrika

‘বাংলাদেশে নারীরা আজও যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক’

‘বাংলাদেশে নারীরা আজও যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক’

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশে নারীরা আজও যেন দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। হিন্দু-মুসলমান, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সমাজের সকল বর্গেই নারীরা ‘সংখ্যালঘু-দশা’র মধ্যে বন্দী হয়ে আছে। নারীর এই অসহায় দশা সংখ্যা নয়, ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। নারীর মুক্তি ও নরের মুক্তি একই সুতোয় বাঁধা।

কবি, প্রাবন্ধিক এবং জেন্ডার ও মিডিয়া বিষয়ক গবেষক আফরোজা সোমার জেন্ডার ও মিডিয়া বিষয়ক প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ নিয়ে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তরা এসব কথা বলেন। লেখক-পাঠককে মুখোমুখি সাক্ষাতের সুযোগ ঘটিয়ে দিতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে এই আয়োজন করে বইটির প্রকাশনী সংস্থা হাসান’স।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক, গবেষক ও রাজনীতি বিশ্লেষক মহিউদ্দীন আহমদ, লেখক-অনুবাদক ও সাংবাদিক রওশন জে চৌধুরী, সাহিত্যের ছোটো কাগজ ‘লোক’-এর সম্পাদক কবি অনিকেত শামীম, কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদ, কবি ও সাংবাদিক জুয়েল মোস্তাফিজ এবং গল্পকার বাকী বিল্লাহ।

বক্তরা বলেন, সমাজ বদলাতে হলে, সামাজিক মনস্তত্ত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হলে সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাতে হবে। শহুরে জনগোষ্ঠীর কাছে পরিবর্তনের বার্তা পৌঁছানোর জন্য ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে গ্রামীণ ও প্রান্তিক মানুষের কাছে পরিবর্তনের এই ভাবনাগুলোকে কীভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আরও ভাবতে হবে।

লেখক-অনুবাদক রওশন জে চৌধুরী বলেছেন, সমাজে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক চর্চার ভেতর দিয়েই যে মূলত নারী ও পুরুষের চরিত্র ও পরিচয় নির্মিত হয় সেই বিষয়টিকে অত্যন্ত নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’।

‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’-কে সময় ও সমাজের থেকে এগিয়ে থাকা গ্রন্থ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আলোচক বাকী বিল্লাহ।

কবি জুয়েল মোস্তাফিজ বলেছেন, মূলধারার গণমাধ্যমে, বিশেষত পত্রিকায় ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ও নিপীড়নের খবরগুলোর ভাষা যে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নয়, সেই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা রয়েছে এই গ্রন্থে। তাই দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য বইটি অবশ্য জরুরি পাঠ্য।

কবি ও কথাসাহিত্যিক মুজতবা আহমেদ মুরশেদ বলেছেন, পুরুষতন্ত্র যে শুধু নারীকে নয়, পুরুষকেও বন্দী করে রাখে সেই বিষয়টিকে দারুণভাবে তুলে ধরেছে বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প। 

কবি অনিকেত শামীম বলেছেন, পুরুষতন্ত্রের জীবাণুতে শুধু পুরুষ নয় নারীরাও যে আক্রান্ত হতে পারে সেই বিষয়টিকে বিভিন্ন উদাহরণ ও পরিপ্রেক্ষিত টেনে এনে পরিষ্কার করেছে ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’।

বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প বইয়ে মোট চারটি অধ্যায় ও ২৭টি প্রবন্ধ রয়েছে। স্বাধীনতার পর অর্ধশতকে এ দেশে নারীর মুক্তি কতটুকু এসেছে? নারীকে কীভাবে আজও এ দেশে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানিয়ে রাখা হয়েছে? প্রান্তিক জেন্ডার হিসেবে নারীর সংখ্যালঘু দশার পেছনে রাষ্ট্রের দায় কতটুকু? বাংলাদেশের গণমাধ্যমে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বিষয়ক খবরগুলোর ভাষা কীভাবে নারীর প্রতি বিদ্যমান অসহনশীলতা ও অসংবেদনশীলতাকে জারি রাখে? এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা কেমন করে পুরুষের পায়েও দিয়েছে বন্দিত্বের জিঞ্জির?—এই জরুরি প্রসঙ্গগুলোকে খতিয়ে দেখেছে আফরোজা সোমার প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’। বইটি ২০২১ সালের একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ করে প্রকাশনী সংস্থা হাসান’স।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত